নিজস্ব প্রতিবেদক:
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হেরে যাবার পর বিএনপির দুর্দিন শুরু হয়। ২০১০ সালের ১১ অক্টোবর সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদের মুলিবাড়ীতে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সমাবেশ চলাকালে ট্রেনের নিচে পড়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়। এরপর ট্রেন ভাংচুরসহ আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সাইদুর রহমান বাচ্চুসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অন্তত সাতটি মামলা হয়। ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সাইদুর রহমান বাচ্চুসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী জেল খাটেন। ট্রেন পোড়ানোর পর থেকেই সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল। দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী মামলা ঘাড়ে নিয়ে দু:সময় পার করাবস্থায় ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সাইদুর রহমান বাচ্চু ও রোমানা মাহমুদ নেতাকর্মীদের আগলে রেখেছেন। সর্বদা নেতাকর্মীদের পাশে থেকে মামলা পরিচালনা ও জামিন খরচসহ সবকিছু দেখবাল করেছেন এমনকি দলের প্রতিটি কর্মসুচী বাস্তবায়ন করেছেন।
দলের দু:সময়ে ৫-৭ জন নেতা একেবারে গাঢাকা দেন। কর্মীদের খোঁজ নেয়াতো দুরের কথা নিজেরাই আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন। এরপর ২০১৪ সালে ফ্যাস্টিট হাসিনার পাতানো নির্বাচন প্রতিরোধের ঘোষনা আসলে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর কঠোর নির্দেশনায় রোমানা মাহমুদ ও সাইদুর রহমান বাচ্চু নেতৃত্বে সিরাজগঞ্জে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলে বিএনপি নেতাকর্মীরা। তাদের তিনজনের নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মীরা সিরাজগঞ্জ জেলা অচল করে দেন।
পাতানো নির্বাচনে ফ্যাস্টিট আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় মসনদে গেলে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর আবারো অত্যাচার নির্যাতন শুরু হয়। সাবেক এমপি রোমানা মাহমুদকে বেশ কয়েকবার হত্যা চেষ্টা করা হয়। আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধও হয় তিনি। তারপরেও রোমানা মাহমুদ একচুলও দলের কর্মকান্ড থেকে পিছপা হয়নি। সাইদুর রহমান বাচ্চু নেতাকর্মীদের নিয়ে জেল-জুলুম ও আন্দোলনে মাঠে থেকে সময় পার করতে থাকেন। এরপর ২০১৮ সালে নির্বাচনে জীবনের ঝুকি নিয়ে রোমানা মাহমুদ ও সাইদুর রহমান বাচ্চু নির্বাচনে জন্য মাঠে নামেন। আওয়ামীলীগ ও পুলিশ নির্বাচনী কার্যক্রমে বাঁধা দেয়া সত্ত্বেও মাঠে নেমে প্রচার-প্রচারনা করেছেন। ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনেও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর নির্দেশনায় নির্বাচন বয়কট করতে মিছিল-মিটিং, গ্রামে গঞ্জে-মাঠে ঘাটে লিফলেট বিতরনসহ সকল কার্যক্রমে অংশগ্রহন করেন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ঘোষিত সকল কর্মসুচী রোমানা মাহমুদ ও সাইদুর রহমান বাচ্চুর নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা বাস্তবায়ন করেন।
দীর্ঘ ১৬ বছর তাদের তিনজনের নেতৃত্বে বেগম জিয়ার মুক্তিসহ বিএনপির সকল আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন সিরাজগঞ্জের বিএনপির সকল নেতাকর্মী। এজন্য ডজন ডজন মামলা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এইদীর্ঘ সময়ে নামধারী ৫-৭জন নেতাকে এক নজরের জন্য বিএনপি দলীয় নেতাকর্মী এমনকি সিরাজগঞ্জবাসীও মাঠে তো দুরের কথা সিরাজগঞ্জেও দেখেনি। ১৬ বছরের একদিনেও শহীদ জিয়া অমর হোক, খালেদা জিন্দাবাদ শ্লোগান দেয়নি। বিগত সময়ে আওয়ামীয়গের সাথে আতাত করে চলায় তাদের বিরুদ্ধে দলীয় কোন মামলা হয়নি। আওয়ামীলীগের সাথে আতাত করে ব্যবসা-বানিজ্য চালিয়ে গেছে। কখনো জেলে যেতে হয়নি। কোনদিন কোর্টের বারান্দায় যেতে হয়নি তাদের। অথচ দীর্ঘ ১৬ বছরের জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান লেবু, আবু সাইদ সুইট, নুর কায়েম সবুজ, নাজমুল হাসান তালুকদার রানা, মুন্সী জাহিদ আলম, সেলিম ভুইয়া, যুবদল নেতা মির্জা বাবু, মুরাদুজ্জামান মুরাদ, বরাত, তৌহিদুল আলম, ছাত্রদল নেতা জোনায়েদ আহমেদ সুবজ, সেরাজুল ইসলাম সেরাজ, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুল্লাহ আল কায়েস, আনোয়ার হোসেন রাজেশসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীদের প্রতিদিন কোর্টের বারান্দায় গিয়ে ঘন্টার ঘন্টার পর দাঁড়িয়ে থাকতে হতো।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরুতে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর নির্দেশনায় রোমানা মাহমুদ ও সাইদুর রহমান বাচ্চু প্রথমে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে অভিভাবকের ভুমিকায় ছাত্রদের সাথে মাঠে নামেন। এরপর ৩ আগষ্ট থেকে ৫ আগষ্ট পর্যন্ত ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর নির্দেশনায় রোমানা মাহমুদ ও সাইদুর রহমান বাচ্চুর নেতৃত্বে জেলার সকল নেতাকর্মী মাঠে নামেন। ৪ আগষ্ট তাদের টুকুর নির্দেশনা মোতাবেক রোমানা মাহমুদ ও সাইদুর রহমান বাচ্চু নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার আন্দোলন তুমুল আকার ধারন করেন।
৪ আগষ্টের সিরাজগঞ্জের ভুমিকা সারা বাংলাদেশে প্রভাব ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ৫ আগষ্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। দেশ নতুন স্বাধীনতা লাভ করে। এরপর সুবিধাবাদী এসব বিএনপি নেতা মাঠে সক্রিয় হয়ে ওঠে। দলের বড় বড় পদ পেতে নিজেদের ত্যাগী হিসেবে দাবী করতে শুরু করে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বড় ত্যাগী বলে ঝড় তুলছে। এ নিয়ে বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায় থেকে শুরু করে জেলা এবং কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত ছিছি রব ওঠেছে। কর্মী বিচ্ছিন্ন ও কর্মী শুন্য এসব নেতার কর্মকান্ডে হতভম্ব হয়ে পড়েছে তৃনমুল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন স্থানে বিএনপির সকল রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, রোমানা মাহমুদ ও সাইদুর রহমান বাচ্চুসহ পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে বেড়াচ্ছেন।
তৃনমুল নেতাকর্মীরা বলছেন, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর পরিবার শত বছরের রাজনৈতিক পরিবার। সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির বটগাছ সমতুল্য টুকুর পরিবার। বটগাছ যেমন রোদ-বৃস্টি ঝড়ের সময় তার নীচে আশ্রয়গ্রহন কারীকে আগলে রাখেন-ঠিক তেমনি টুকু ও তার সহধর্মিনী রোমানা মাহমুদ বিএনপির নেতাকর্মীদের দীর্ঘ ১৬ বছর সকল বিপদ-আপদে আগলে রেখেছেন। সিরাজগঞ্জের রাজনীতিতে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু , রোমানা মাহমুদ ও সাইদুর রহমান বাচ্চুর বিকল্প নেই। নেতাকর্মীদের মতে দলের সুসময়ে উটকো লতাপাতা এসে বটগাছ দাবী করছে। এসব লতাপাতা, কর্মী বিচ্ছিন্ন ও কর্মী শুন্য পরগাছা নেতাদের জেলা কমিটি তো দুরের কথা বিএনপির রাজনীতিতেও অংশগ্রহন মেনে নিবে না। তৃনমুল নেতাকমীদের বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দাবি, সিরাজগঞ্জের বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে এবং আগাছা মুক্ত করতে এই ষড়যন্ত্রকারী চিরতরে বিতাড়িত করতে হবে।
প্রকাশক: সোহেল রানা II সম্পাদক: আব্দুস সামাদ সায়েম II অফিস: দ্য পিপলস্ নিউজ টুয়েন্টিফোর ডট কম বাজার স্টেশন, রেলওয়ে কলোনী,সিরাজগঞ্জ II মোবা: ০১৭১২-৪০৭২৮২,০১৭১১-১১৬২৫৭ II ই-মেইল thepeoplesnews24@gmail.com II
©২০১৫-২০২৫ সর্বস্ত্ব সংরক্ষিত । তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত (নিবন্ধন নং-২১০)