দীর্ঘ ৮ বছরেও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রীবন্দ্র বিশ^বিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মান না হওয়ায় আন্দোলনে মাঠে নেমেছে ছাত্র-জনতা। গত ৪দিন যাবত রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করছে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় জনতা ও উপজেলার ছাত্র সমাজ। দ্রুত ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবীতে বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসিসহ সকল শিক্ষক ও কর্মচারীরা গতকাল শিক্ষা মন্ত্রানালয়ের উপদেষ্টা কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারজয়ী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর সৃষ্টিকর্ম ও জীবনদর্শন এদেশের মানুষের স্মৃতিতে চিত্ত-সন্তান রাখার লক্ষ্যে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর স্মৃতিবিজড়িত সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তিসহ পাঠদান এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪টি অনুষদের অধীনে ৫টি বিভাগ রয়েছে, যেখানে ভর্তিকৃত মোট শিক্ষার্থীর ১২শ’র উপরে এরং এবং প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতিবছর শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি প্রতিষ্ঠার ৮ বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প গত ২৪,১২,২০১৮ তারিখে সর্ব প্রথম ৯২৩৪৩৯.৩৮ টাকা বায় প্রাক্কলিত ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে দাখিল করা হয়। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আট বছরের মধ্যে ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পণ কমিশনের নির্দেশনার অনুযায়ী ৮ বার প্রকল্পের আকার ও ব্যয় সংশোধিত করে পুনর্গঠিত ডিপিপি প্রেরণ করা হয়। কিন্তু ইতোপূর্বে প্রকল্পের আকার ও ব্যায় হ্রাসকরণ ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি।
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গঠিত অন্তবরর্তীকালীন সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় দুইবার সংশোধিত ডিপিপি উপস্থাপন করে। এরমধ্যে প্রথম দফায় উপস্থাপিত প্রকল্প ব্যয় ৯২৩৪৩৯.৩৮ লক্ষ টাকা-এর প্রায় ৮৯ শতাংশ হ্রাস করে মাত্রা ১১% প্রকল্প ব্যয় ৯৯৫১২.০০ লক্ষ টাকা প্রস্তব করে গত ০৩.১২.২০২৪ তারিখে বংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে ৭ম বারের মতো ডিপিপি প্রেরণ করা হয়। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন গত ২৬.১২.২০২৪ তারিখে প্রেরিত প্রকল্পে উপর পর্যালোচনা সভা করে। উক্ত সভার সুপারিশক্রমে ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বংল্যাদশ স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পটি আবারও ননর্গঠন করে সর্বপ্রথম প্রস্তাবিত প্রকল্প ব্যয়ের ৯৩.৫ শতাংশ হ্রাস করে মাত্র ৬.৫% প্রকল্প ব্যয় ৫৯৯৫০.০০ লক্ষ টাকা প্রস্তাব করে ডিপিপি প্রেরণ করা হয়। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন গত ২১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ প্রকল্প প্রস্তাবটি অনুমোদনের সুপারিশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে।
বর্তমানে ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তাবটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য বিবেচনাধীন রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে পদচারণার অধিকার ও আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকম-লী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ নানারকম প্রতিকূলতা মেনে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কমর্চারী, শাহজাদপুরের গুণমানুষ এবং শুভানুধ্যায়ীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনের জোর দাবি জানিয়ে আসছেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গত আট বছর খরে ভোগান্তিতে থাকা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ পরিবারসহ এর অংশজনের আশার আলো দেখছেন। শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ-এর স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন- ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী এ এই স্মারকলিপির মাধমে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ-এর স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনে দ্রুত যথাযগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এস.এম. হাসান তালুকদার জানান, স্মারকলিপিতে বিশ^বিদ্যালয়ের সকল-শিক্ষক-কর্মচারী স্বাক্ষর করেছেন। আশা করছি সরকার দ্রুত ক্যাম্পাস নির্মাণে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন নচেত বিশ^বিদ্যালয়টি বন্ধ ঘোষনা করবেন।