ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অনুরোধ রাখলেন না বিরাট কোহলি। নিজের সিদ্ধান্ত মতো টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দিলেন। রোহিত শর্মার পথ ধরে এবার সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পথচলা থামালেন সাবেক এই অধিনায়ক। সেই সঙ্গে ভারতের সাদা পোশাকের ক্রিকেটে একটি যুগের পরিসমাপ্তি ঘটলো।
আইপিএল চলাকালেই গত সপ্তাহে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন রোহিত শর্মা। সোশ্যাল মিডিয়ায় অবসর ঘোষণা দিয়েছিলেন সদ্য সাবেক এই অধিনায়ক। দীর্ঘদিনের সতীর্থ কোহলিও একই পথে হাঁটলেন। আজ (সোমবার) ইন্সটাগ্রামে এক পোস্টে অবসরের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন।
টেস্ট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দিয়ে কোহলি লিখেছেন, ‘১৪ বছর আগে প্রথম টেস্ট ক্রিকেটের নীল ব্যাগি টুপি পড়েছিলাম। সত্যি বলতে তখন জানতাম না, ক্রিকেটের এই ফরম্যাট আমাকে কতটা এগিয়ে নিয়ে যাবে। কল্পনাও করিনি। এই ফরম্যাট আমার পরীক্ষা নিয়েছে। আমাকে তৈরি করেছে। আমাকে শিক্ষা দিয়েছে। সারা জীবন এই শিক্ষা বহন করব।’
আরও বলেন, ‘সাদা পোশাকে খেলার মধ্যে কিছু ব্যক্তিগত গভীর বিষয় থাকে। শান্ত পরিবেশ, দীর্ঘ সময় খেলা, ছোট ছোট মুহূর্তগুলো কেউ দেখতে পায় না। তবে এগুলো চিরকাল আমার সঙ্গে থাকবে।’
কোহলি লিখেছেন, ‘যখন এই ফরম্যাট থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি এটা মোটেও সহজ ছিল না। তবে এটাকেই সঠিক বলে মনে হচ্ছে। আমি আমার সব কিছু দিয়েছি, বিনিময়ে যতটুকু প্রত্যাশা করেছি তার চেয়েও বেশি সেটা আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। কৃতজ্ঞতায় ভরা হৃদয় দিয়ে সরে যাচ্ছি আমি- খেলাটির প্রতি, মাঠে যাদের নেমেছি তাদের প্রতি এবং প্রতিটি মানুষের জন্য, এই পথচলায় যারা আমাকে স্বীকৃতির অনুভূতি দিয়েছে।’
লাল বলের ক্রিকেটে তিনি যে আর খেলতে ইচ্ছুক নন, এ কথা বিসিসিআইকে কদিন আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন কোহলি। কিন্তু বোর্ডের পক্ষ থেকে তাকে অনুরোধ করা হয়েছিল সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য। কোহলি তাতে রাজি হননি। সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়া সফরের পর থেকেই টেস্ট থেকে সরে যাওয়ার কথা ভাবছিলেন কোহলি। ওই সফরে প্রথম টেস্টে শতরান করলেও বাকি সিরিজে নিজের ছায়া হয়েই ছিলেন। কিন্তু ফর্মটা যেমনই হোক, বোর্ড চেয়েছিল ইংল্যান্ড সফরে তাকে রেখেই দল সাজাতে। কারণ, রোহিতের পর কোহলিকেও যদি আসন্ন এই সফরে না পাওয়া যায়, তাহলে ভারতীয় ব্যাটিং অনেকটাই অনভিজ্ঞ হয়ে পড়বে।
সেই কারণেই বোর্ডের পক্ষ থেকে কোহলিকে অনুরোধ করা হয়েছিল এখনই টেস্ট ক্রিকেট না ছাড়তে। কিন্তু কোহলি শেষ পর্যন্ত নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকলেন। রোহিতের মতো তিনিও বিদায়ী টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না। প্রসঙ্গত, ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর রোহিতের সঙ্গেই সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন। সে হিসেবে দুজনই এখন আর কেবল ওয়ানডে তথা একদিনের ক্রিকেট খেলবেন।
২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল কোহলির। সেই বছরই অস্ট্রেলিয়া সফরে অ্যাডিলেডে খেলেন ১১৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। যা ছিল তার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি। ১২৩টি টেস্টে ৯,২৩০ রান রয়েছে কোহলির। গড় ৪৬.৮৫। শতরান ৩০টি, অর্ধশতরান ৩১টি।
টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে তার অধীনে ৬৮ টেস্টে ভারত জিতেছে ৪০টি। যা তাকে জয়ের বিচারে ভারতের সবচেয়ে সফল টেস্ট অধিনায়ক করে তুলেছে। ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে বিবেচনা করা হয় কোহলিকে। কোহলির বিদায়ে এক বর্ণিল যুগের পরিসমাপ্তি ঘটল।
প্রকাশক: সোহেল রানা II সম্পাদক: আব্দুস সামাদ সায়েম II অফিস: দ্য পিপলস্ নিউজ টুয়েন্টিফোর ডট কম বাজার স্টেশন, রেলওয়ে কলোনী,সিরাজগঞ্জ II মোবা: ০১৭১২-৪০৭২৮২,০১৭১১-১১৬২৫৭ II ই-মেইল thepeoplesnews24@gmail.com II
©২০১৫-২০২৫ সর্বস্ত্ব সংরক্ষিত । তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধনকৃত (নিবন্ধন নং-২১০)