- সারিয়াকান্দি(বগুড়া) প্রতিনিধি:
উপজেলাধীন নারাপালা বালুমহাল এর মেয়াদ পূর্তির পূর্বেই মৌখিক ভাবে বন্ধকৃত বালুমহাল হতে পুর্ণমেয়াদে নির্বিঘ্নে বালু উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে বক্তব্য জেলা প্রশাসক বরাবর লিখত আবেদন করেছেন, “মেসার্স ফাবিহা ট্রেডার্স” হালেক এর স্বত্ত্বাধিকারী মো: ইফাজ উদ্দিন। আবেদন সুত্রে জানা যায়, বগুড়া জেলা কন্দ্রীয় প্রশাসকের কার্যালয় হতে গত ১৯/০৬/২০২৩ইং তারিখের স্মারক ০৫.৫০.১০০০.০০৮.৬৭.০৩৭.১৯.৯৩৪ নম্বরে প্রকাশিত নারাপালা বালুমহাল ইজারা বিঙ্গপ্তির প্রেক্ষিতে “মেসার্স ফাবিহা ট্রেডার্স এর স্বত্ত্বাধিকারী মো: ইফাজ উদ্দিন-বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলাধীন নারাপালা বালুমহাল টি এক বছরের জন্য ইজারা চেয়ে গত ০৫/০৭/২০২৩ইং তারিখে দরপত্র দাখিল করেন। তার দরপত্রে উল্লেখিত ইজারা মূল্য ১,২২,১০,০০০/-(এক কোটি বাইশ লক্ষ দশ হাজার) টাকা। যাহা সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে গণ্য হয়। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে কার্যাদেশ প্রাপ্ত হয়ে ১৪৩০ বঙ্গাব্দের ইজারা মূল্য বাবদ ১,২২,১০,০০০/-(এক কোটি বাইশ লক্ষ দশ হাজার) টাকা-ইজারা মুল্যের ১৫% ভ্যাট বাবদ ১৮,৩১,৫০০/-আঠারো লক্ষ একত্রিশ হাজার পাঁচ শত টাকা এবং ১০% আয়কর বাবদ ১২,২১,০০০/- বারো লক্ষ একুশ হাজার টাকা সহ মোট- ১,৫২,৬২,৫০০/-(এক কোটি বায়ান্ন লক্ষ বাষট্টি হাজার পাঁচ শত) টাকা গত ২৬/০৭/২০২৩ইং তারিখে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা করেন, মেসার্স ফাবিহা ট্রেডার্স এর স্বত্ত্বাধিকারী মো: ইজাজ উদ্দিন।
এমতাবস্থায় জনৈক মজনু মিয়া কর্তৃক মহামান্য হাইকোর্টে ৮৭৫৪/২০২৩ নং রিট মামলা দায়ের করেন। উক্ত রিট মামলার নিষেধাজ্ঞার কারণে যথাযথ সময়ে ইজারা চুক্তিনামা সম্পাদন এবং বালুমহালের দখল বুঝে পাননি ইজারাদার ইফাজ উদ্দিন। উক্ত রিট মামলার নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে “মেসার্স ফাবিহা ট্রেডার্স” এর স্বত্ত্বাধিকারী ইফাজ উদ্দিন নিজে বাদি হয়ে নিজ খরচায় মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে ২৪২৩/২০২৩ নং আপিল মামলা দায়ের এবং আপিল মামলার আদেশ মোতাবেক বালুমহালটি ০৩/০৯/২০২৩ইং তারিখে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে দখল পেয়েছেন, মেসার্স ফাবিহা ট্রেডার্স এর স্বত্ত্বাধিকারী ইফাজ উদ্দিন। অফিশিয়াল নিয়মকানুন অনুযায়ী লিখিত ভাবে ১ বৈশাখ ১৪৩০ হতে ৩০ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত বালুমহালটিতে বৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ বিনা নোটিশে কোনো কারণ ছাড়াই চলতি ফেব্রুয়ারী মাসের ৩ তারিখ হতে বালু উত্তোলন এবং বিক্রয় করা থেকে বিরত থাকার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৌখিক ভাবে জানানো হয় এবং তীর বালুমহাল এলাকায় লাল পতাকা লটকিয়ে রাখা হয়েছে। এর ফলে “মেসার্স ফাবিহা ট্রেডার্স” এর স্বত্বাধিকারী ইফাজ উদ্দিন বালু উত্তোলন ও বিক্রয় সম্পূর্ন রুপে বন্ধ রেখেছেন। সময়ের সাথে যমুনা নদীর গতিপথ ও মানসম্মত বালু অবস্থান পরিবর্তন করে বিধায় পোস্ট হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ করে পুর্ণ স্থান নির্ধারন করে নির্বিঘ্নে মানসম্মত বালু উত্তোলনে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন, ইফাজ উদ্দিন।
এবিষয়ে “মেসার্স ফাবিহা ট্রেডার্স” এর স্বত্ত্বাধিকারী মো: ইফাজ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ওই লাল পতাকা দিয়ে আমার বালুমহাল জব্দ করা হয়েছে। আমি ও আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে আরও ২০টি পরিবার জড়িত। আমাকে নিয়ম অনুযায়ী বালু উত্তোলন ও বিক্রয়ের সুযোগ না দিলে সবাইকে পথে বসতে হবে। নয়তো আত্মহননের পথ বেছে নিতে হবে। যেহেতু ইজারা মূল্য বাবদ এক বছরের জন্য ভ্যাট ও আয়কর প্রদান করেছি, সেহেতু দখল বুঝিয়ে পাওয়ার তারিখ অর্থাৎ ০৩/০৯/২০২৩ ইং তারিখ হতে এক বছর নির্বিঘ্নে বালু উত্তোলনের সুযোগ দিলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে তা কিছু টা রক্ষা পাবো বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুর রহমান বলেন, ইজারাদার বেশ কিছু শর্ত ভঙ্গ করেছেন। হাইড্রোগ্রাফিক জরিপে ৬১ লাখ সিএফটি বালু উত্তোলনের কথা রয়েছে। সেখানে অনেক বেশি বালু উত্তোলন করা হয়েছে। আরও অনেক বালু বিক্রি করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের কারণে উত্তোলিত বালু জব্দ করা হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।