মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪৯ পূর্বাহ্ন

বিয়ের নেশায় উদগ্রীব থাকেন শারমিন!

বাগেরহাট প্রতিনিধি / ৮৫ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে

এক বিয়েতে ক্ষান্ত নয়। বিয়ের নেশায় উদ্‌গ্রীব হয়ে থাকে সবসময়। তার কাছে বিবাহিত-অবিবাহিত কোনো বিষয় নয়। যুবকদের টাকা থাকলেই নামমাত্র বিয়ে করেই যেকোনো মূল্যে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সবকিছু হাতিয়ে নেয়াই তার কাজ। একের পর এক প্রতারণার ফাঁদ পেতে অসংখ্য যুবককে করেছে নিঃস্ব।

এক স্বামী রেখে পরকীয়ায় জড়ান অন্যের সঙ্গে। কিছুদিন যেতেই পুনরায় জড়ান অন্যের সঙ্গে। এভাবে দশটি বিয়ে করেছেন তিনি। প্রতি বছরই যেন তার নতুন নতুন স্বামী সংসার আর বাসর ঘর হয়। আর এসব বিয়ের পেছনে রয়েছে বড় ধরনের প্রতারণা মাধ্যমে টাকা-পয়সা আত্মসাতের গল্প।

ভয়ংকর এই প্রতারক নারীর নাম শারমিন আক্তার (৩২)। বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গাওলা গ্রামের আছাদ মোল্লার মেয়ে। বিয়ে করাই যেন শারমিনের নেশা এবং পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা যায়, এই তরুণী নিজ জেলা বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিয়ে করেছেন। প্রথমে সমাজের প্রতিষ্ঠিত উচ্চবিত্ত টাকা ওয়ালা পুরুষদের টার্গেট করে। তারপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে মোটা অঙ্কের কাবিন নিয়ে বিয়ে করেন। প্রতিটা বিয়ের কাবিনের সময় তার এক কথিত চাচা বিয়ের সাক্ষী হিসেবে থাকতেন।

সারমিন আক্তারের প্রতারণার সর্বশেষ ‘শিকার’ হয়েছেন বাগেরহাটের চিতলমারীর দক্ষিণ শৈলদাহ এলাকার বাসিন্দা নওশের শেখ ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী খুর্শিদ আলম (৩৫)। এরপরই এক এক করে ওই তরুণীর দশ বিয়ের বিষয় ফাঁস হয়। শারমিন আক্তার ঢাকার গাজীপুর জেলার খলিল আহমেদ, বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার আলমগীর হোসেন, ঢাকার নারায়ণগঞ্জের জালাল আহমেদ, বাগেরহাটের মোল্লারহাট উপজেলার মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন ছাড়াও ঢাকার নাবিস্কো, তেজগাঁও এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ১১ জনকে বিয়ে করেন।

এদিকে, টাকা আত্মসাৎ ও ১১ বিয়ের অভিযোগ এনে প্রবাসী খুর্শিদ আলম এর পিতা মো. নওশের শেখ বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। মো. নওশের শেখ অভিযোগে জানান, আমার ছেলে খুর্শিদ আলম এর সাথে মোল্লাহাট উপজেলার বড় গাওলা গ্রামের আছাদ মোল্লার মেয়ে শারমিন খাতুন গত ২০২৩ সালের ৫ জুন রেজিস্ট্রি কাবিন মূলে বিবাহ হয়। আমার ছেলে খুর্শিদ আলম দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর যাবৎ মালয়েশিয়ায় বসবাস করে। সে মাঝে মধ্যে দেশে ফিরে আসে। বিবাহের পর তারা একত্রে আমার বাড়িতে প্রায় ৩ মাস সংসার করে। পরবর্তী আমার পুত্রবধূর চালচলন, আচার আচরণে সন্দেহ হলে তার আসল রূপ ধরা পড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আমার পুত্রবধূ মোট ১১ জন পুরুষের সাথে সংসার করেছে। আমার ছেলে তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে সে আমার ছেলেসহ আমাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। আমার ছেলের সাথে বিবাহের পূর্বে সে আমার ছেলের নিকট থেকে ছলে বলে কলে কৌশলে বিভিন্ন ধরনের ছলচাতুরী ও প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন সময় প্রায় ২০লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে। পরবর্তীতে বিবাহের পর সে বিভিন্ন ধরনের ছলচাতুরীর মাধ্যমে তার মা সামেলা বেগম ও তার কথিত চাচার প্ররোচনায় ও কুপরামর্শে আমার ছেলের নিকট থেকে আরো ৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। আমার ছেলে তাদের কার্য কলাপের হাত থেকে বাঁচার জন্য পুনরায় মালয়েশিয়ায় চলে যায়। আমার ছেলে বিদেশে যাওয়ার পর আমার পুত্রবধূ শারমিন খাতুন তার মা এবং তার কথিত চাচার ইন্ধনে সে আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও জানে মেরে ফেলার হুমকি প্রদর্শন করে। বর্তমানে আমি আমার পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগিতেছি। তিনি এ ঘটনায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এদিকে শারমিন আক্তারের পূর্বের একাধিক স্বামী অভিযোগ করে বলেন, শারমিন সম্পর্ক করেই দ্রুত বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। সে কখনো নিজের বিষয়ে পরিষ্কার করে বলে না। বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই সে যে কোন কৌশলে সম্পর্ক ছিন্ন করে মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করে আমাদের নিঃস্ব করেছেন। তারা জানান, ধরনের কাজ যারা করে তারা সমাজের শত্রু। শারমিন যে কাজ একের পর এক করে যাচ্ছে তার শাস্তি হওয়া উচিত। এটি না করলে তার এ ধরনের কর্মকাণ্ডে অনেক যুবককেই পথে বসতে হবে।

এ বিষয়ে শারমিন আক্তার বলেন, আমি বিভিন্ন কারণে কয়েকটি বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছি। সবাই আমার সাথে প্রতারণা করছে। এখন আমার নামে মিথ্যা কথা রটাচ্ছে। আমি কারো কাজ থেকে কোনো টাকা আত্মসাৎ করিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir