সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় উপজেলায় বর্তমানে আলোচিত নাম নবী নেওয়াজ খাঁন বিনু। তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগ হিসেবে জাহির করলেও গোপনে জামায়াতের সঙ্গে বেশ সখ্যতা রয়েছে বলে এমন অভিযোগ অনেক আগে থেকেই উঠেছে। কিন্তু বর্তমানে এই অভিযোগের বিষয়টি এবার সামনে আসলো। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খাঁন এর একটু অনুষ্ঠানে তার সাথে নবী নেওয়াজ খাঁন বিনু কে দেখা যায়। সেখানে রফিকুল ইসলাম খাঁন বক্তব্য দিচ্ছেন পাশেই বসে আছেন নবী নেওয়াজ খাঁন বিনু। রফিকুল ইসলাম খাঁন এর গ্রামের বাড়ি নওকৈর ইদে মিলাদুন্নবী অনুষ্ঠানে যোগদান করেছিলেন উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নবী নেওয়াজ খাঁন বিনু। এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান জামায়াতের আমীর অধ্যাপক শাহজাহান আলি। এছাড়াও অন্ততঃ ৫ শতাধিক জামায়াতের নাশকতা মামলার আসামি। এই ছবি ফেজবুকে ভাইরাল হলেই নবী নেওয়াজ খাঁন বিনুর জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আবারও প্রশ্ন ওঠে। এই ছবি এবং ভিডিও নিয়ে ব্যপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তবে নবী নেওয়াজ খাঁন বিনুর দাবি এটি জামায়াতের দলীয় কোন অনুষ্ঠান ছিলো না, তাদের পারিবারিক দোয়া মাহফিলের আয়োজন ছিলো। অনুষ্ঠানে জামায়াতের কোন নেতাকর্মীদের দাওয়াত করা হয়নি, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খাঁন এর উপস্থিতির কথা জানতে পেরে বিনা নিমন্ত্রণে জামায়াতের নেতাকর্মীর অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। সেখানে তার (নবী নেওয়াজ খাঁন বিনু) চাচা রফিকুল ইসলাম খাঁন বক্তব্য দিচ্ছিলেন তবে জামায়াতের সঙ্গে তার কোন সম্পর্কে নেই বলে তিনি জানান। তিনি আরো জানান মাওলানা রফিকুল ইসলাম খাঁন এর সাথে তার পারিবারিক সম্পর্ক, তিনি তার চাচা হন৷ তিনি ছোটবেলা থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন, বঙ্গবন্ধুর আর্শের রাজনীতি বলে দাবি নবী নেওয়াজ খাঁন বিনুর।
নবী নেওয়াজ খাঁন বিনু আওয়ামী লীগের রাজনীতির ছায়াতলে ব্যপক অর্থের মালিক হয়েছে। তার নামে রয়েছে ৫ বস্তুা দেশি-বিদেশী মুদ্রা ও ৬১ কেজি ওজনের ৫২৮ টি সোনার বার উদ্ধার মামলার আসামিসহ সোনা চোরাচালানকারী একাধিক মামলায় অভিযুক্ত দ্য ঢাকা মানি এক্সচেঞ্জের মালিক নবী নেওয়াজ খাঁন বিনু। তিনি উল্লাপাড়া আসনে সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন কিন্তু পাননি। বর্তমানে তিনি উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হয়েছেন। এই নির্বাচন কে সামনে রেখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি সম্বলিত পোস্টারে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা,আওয়ামী লীগ নেতা,এবং বঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি পরিচয় ব্যবহার করে সারা উপজেলায় সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।
এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. মকলেছুর রহমান ডাবলু বলেন, ‘গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা উপদেষ্টা কমিটির সদস্য নবী নেওয়াজ খান বিনু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। তিনি নিজে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি কীভাবে প্রায় শতাধিক মামলার আসামি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মওলানা রফিকুল ইসলাম খানের সঙ্গে তার বাড়িতে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনীর অনুষ্ঠানে যোগদান করে বক্তব্য দেন?’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, ‘গত ১০ বছরে রফিকুল ইসলাম খান প্রকাশ্যে এসে এলাকায় সভা সমাবেশ করতে পারেনি। কিন্তু এখন উল্লাপাড়া উপজেলা শাখার নেতাকর্মীদের নিয়ে ঈদ পুনর্মিলনীর অনুষ্ঠান করছেন। বিষয়টি সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। এ জন্য নবী নেওয়াজ খান বিনুর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’
জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হওয়ায় এই সুযোগ তিনি কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন।
তবে বিনু নিজেকে আওয়ামী লীগ হিসেবে পরিচয় দিলেও দলে বর্তামনে তার কোন পদ নেই বলে জানিয়েছেন উল্লাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়সাল কাদের রুমি। তিনি জানান আওয়ামী লীগ থেকে দলীয়ভাবে কাউকে সামর্থন জানানো হয়নি, যার যেখানে ইচ্ছে গণসংযোগ করতে পারবে। এছাড়াও তিনি আরো জানান নবী নেওয়াজ খাঁন বিনুর পূর্বে দলীয় পদ থাকলেও বর্তমানে তার কোন দলীয় পদবি নেই।
অভিযুক্ত নবী নেওয়াজ খান বিনু জানান, আমার জনপ্রিয়াতায় ভীত হয়ে আমার বিরুদ্বে অপপ্রাচার করা হচ্ছে।