জমি-জমা নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষকে হত্যা চেষ্টা মামলায় আবুল কালাম আজাদ নামে এক আওয়ামীলীগ নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে কাজিপুর উপজেলা আমলী আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালতের বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেন। আবুল কালাম আজাদ সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার মেছড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং রূপসা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং রূপসা গ্রামের মৃত খোদা বক্সের ছেলে।
মামলা সুত্রে জানা যায়, রূপসা গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে রাজু আহম্মেদের মায়ের নামীয় ১ একর ৫৭ শতক ফসলী জমি কাজিপুর উপজেলার তেকানী রয়েছে। উক্ত জমি নিয়ে নিয়ে আবুল কালাম আজাদের সাথে দ্বন্ধ চলছিল। এ অবস্থায় গত ২ সেপ্টেম্বর দুপুরে আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ, রূপসা গ্রামের মৃত সোলাইমানের ছেলে মাসুদ রানা, হিরা, আবুল কালাম আজাদের ছেলে ফাহিম ও মৃত কলিম উদ্দিনের ছেলে বাদশা আলমসহ ৩/৪জন দেশীয় অস্ত্র ছুরি, লোহার সাবল, লোহার রড নিয়ে ওই জমিতে গিয়ে চাষাবাদ করতে থাকে। এ সময় রাজু আহমেদের বাবা ইদ্রিস আলী তাদের জমিতে চাষাবাদের কারন জানতে চাইলে আসামীরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার এক পর্যায়ে আবুল কালাম আজাদ হত্যার উদ্দেশ্যে ইদ্রিস আলীর মাথায় কোপ দেয়। এতে ইদ্রিস আলীর মাথার পিছনে কেটে রক্তাক্ত জখম হয়। এছাড়াও অন্যান্য আসামীরা লোহার সাবল, কাঠের বাটাম ও বাশের লাঠি দিয়ে ইদ্রিস আলীকে বেধড়ক পেটায়। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় আসামীরা ইদ্রিস আলীর লুঙ্গির কোচায় থাকা ৫২ হাজার ২শ ৫০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে ইদ্রিস আলীর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে আবুল কালাম আজাদরা বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম. মনসুর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মামলার বাদী রাজু আহম্মেদ জানান, আবুল কালাম আজাদ ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের ক্ষমতা ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে জমিটি দখলের চেষ্টা করছে। এছাড়াও আবুল কালাম আজাদ রূপসা উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন জুনিয়র শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের দাপট দেখিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদ দখল করেছে। আমরা ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের দোসর আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদসহ তার সঙ্গীদের শাস্তি দাবী করছি। একই সাথে জবর দখল করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে অপসারনের দাবী জানাচ্ছি।
কাজিপুর থানার উপ-পরিদর্শক মাহমুদ হাসান জানান, মামলা দায়েরের পর আসামীদের ধরার অভিযান চলমান থাকা অবস্থায় ১নং আসামী আবুল কালাম আজাদ আদালতে জামিন আবেদন করে হাজিরা দেয়। পরে বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন। অন্যান্য আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।