রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বড় বান্দেরপাড়া গ্রামের আলমাছ হোসেন মিন্টু (৩৮)। পেশায় গার্মেন্টস শ্রমিক। তিনি ঢাকার গাজীপুর চৌরাস্তার একটি তৈরি পোশাক কারখানায় সুপারভাইজার হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
গত দেড় বছর ধরে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। বিভিন্নস্থানে অনেক খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান মেলেনি। স্বামী ফিরে আসার অপেক্ষায় দূরচিন্তা মাথায় নিয়ে দুই সন্তানের জননী খাদিজা বেগম দূরচিন্তা মাথায় নিয়ে দিনযাপন করছেন। এ ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
এদিকে স্বামী হারানোর বেদনায় আলমাস হোসেন মিন্টুর বাড়ি থেকে বাতাসে প্রায় সময় কান্নার শব্দ ভেসে আসে। এ কান্না মিন্টুর স্বজন ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রীর। কান্না শুনে প্রতিবেশিরা ছুটে এসে তাদের শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। হৃদয় বিদারক এ ঘটনার কবে হবে আর কবে মিন্টুর খোঁজ মিলবে এই প্রশ্ন এখন সকলের মাঝে।
আলমাছ হোসেন মিন্টুর স্ত্রী খাদিজা বেগম জানান, তার স্বামী আলমাস হোসেন মিন্টু গাজীপুরের একটি একটি পোশাক কারখানায় সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করতেন। মিন্টু সর্বশেষ ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর রাতে মোবাইল ফোনে স্ত্রীকে বলেন তিনি ঢাকা গাজীপুর থেকে গ্রামের বাড়ি রংপুরের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছেন। মোবাইল ফোনে কথা হওয়ার প্রায় ২ ঘন্টা পর খাদিজা তার স্বামীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান। এরপর আর বাড়ি ফিরে আসেননি স্বামী আলমাস হোসেন মিন্টু। সেই থেকে আজ অবধি তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
খাদিজা- মিন্টু দম্পত্তির এক ছেলে এক মেয়ে রয়েছে। বড় মেয়ে মরিয়ম আক্তার মিথিলা বয়স (১৫) স্থানীয় একটি মহিলা মাদ্রাসায় পড়ে। আর
ছোট ছেলে মো. মাহিম (১৪) সে চট্রগ্রামের একটি মাদরাসার হেফজ বিভাগে পড়ছে।
স্ত্রী খাদিজা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে সময়ের আলোকে বলেন, ২০০৬ সালে ভালবেসে আমদের দুজনের বিয়ে হয়। সংসারে অভাবের তাড়নায় সন্তানদের আমার মায়ের কাছে গ্রামের বাড়িতে রেখে ২০১৪ সালে ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ শুরু করি। ৬ বছর একসাথে কাজ করে ২০২০ সালে বাড়িতে আসি। এরপর আমাকে সন্তানদের কাছে বাড়িতে রেখে মিন্টু একাই ঢাকায় কাজ করতে যান। প্রতি ঈদে বাড়ি আসতেন। কিন্তু, ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর বাড়ি আসার কথা বলে আর ফিরে আসেননি। সেই থেকে বিভিন্নস্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও স্বামীর সন্ধান পাইনি। এ ঘটনায় ওই সময়েই মিঠাপুকুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছিলাম কিন্তু আজও আমার স্বামীর কোন খোঁজ মেলেনি।
মিঠাপুকুর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিক নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটির তদন্ত অব্যাহত আছে। তাকে খুঁজে পেতে পেতে চেষ্টা করা হচ্ছে।
টিপিএন২৪/ হৃদয়