শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩৭ অপরাহ্ন

নাটোরে কিডনি বিক্রি সিন্ডিকেটের মূল হোতা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জেমস

রিপোর্টারের নাম / ৩৯০ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৯:৩৯ অপরাহ্ন


নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলায় প্রকাশ্যে কিডনি বেচাকেনা চলছে। ২৬ বছর পর্যন্ত তরুণদের প্রতিটি কিডনির হচ্ছে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকায়। আর মধ্যবসয়ীদের কিডনির দাম একটু কম, ২ থেকে ৪ লাখ এর মধ্যে। বিক্রেতাদের রোগীর স্বজন সাজিয়ে এসব কিডনি প্রতিবেশী দেশের বিভিন্ন ক্লিনিকে প্রতিস্থাপন করা হয়। চক্রের সদস্যরা ও বিক্রেতারা জানান, সিরাজগঞ্জ জেলার তারাশ উপজেলার মোনায়েম হোসেন জেমসের নেতৃত্বে একটি সক্রিয় সিন্ডিকেট তরুণদের টার্গেট করে, কিডনি সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় নেমেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়,নাটোর জেলার গুরুদাসপুরে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ শতাধিক মানুষের কিডনি বিক্রি হয়েছে। কিডনি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষরা তাদের কিডনি বিক্রি করেছেন। সিন্ডিকেটের দেখানো আর্থিক প্রলোভনে উপজেলার দরিদ্র মানুষরা কিডনি বিক্রি করে দিচ্ছেন।

কিডনি চক্রের সদস্য আব্বাসের মোড় এলাকার রশিদ জানান, জেমসের নেতৃত্বে কিডনি সিন্ডিকেট চলছে। তিনি ঢাকায় থেকে সব নিয়ন্ত্রণ করেন৷ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে কিডনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রুগীদের টার্গেট করে কিডনি কেনার লোক ঠিক করা হয়। এরপর দরিদ্র মানুষদের টাকার লোভ দেখিয়ে কিডনি কেনা হয়। বাজারে সব থেকে তরুণদের কিডনির চাহিদা বেশি।

সম্প্রতি কিডনি বিক্রির জন্য রশিদের কাছে যাওয়া সাহাপুরের নজরুল ও তার মা জানান, দেনার কারণে নজরুলের কিডনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তারা। এজন্য রশিদের সাথে যোগাযোগ করেন। রশিদ জানায় ক্রেতা পাওয়া গেলে ৩ থেকে ৪ টাকায় কিডনি কিনবে। ঢাকাতে গিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা সম্পন্ন হবে৷ বিক্রির কাজে কিডনি আব্বাস ও জেমস তাদের সহযোগিতা করবে।

চাচকৌড় বাজারের মধ্যম পাড়া এলাকার খৈবার ও আরো কয়েকজন কিডনি বিক্রেতা জানান, তারা জেমস, রশিদ ও আব্বাসের মাধ্যমে প্রতিবেশি দেশে গিয়ে কিডনি বিক্রি করেছেন। এজন্য তাদের ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। অভাবের কারণেই তারা কিডনি বিক্রি করেছেন।

কিডনি বিক্রি করতে ফিরে আসা একই এলাকার জিল্লুর রহমান নামের একজন জানান, তিনি কিডনি আব্বাস ও জেমসের প্রলোভনে কিডনি বিক্রিতে রাজি হয়েছিলেন। পরে ভুল বুঝতে পেরে ফিরেও এসেছেন।

চক্রের আরেক সদস্য আব্বাস ওরফে কিডনি আব্বাস জানান, তিনি নিজের কিডনি বিক্রি করেছেন। এজন্য অনেকেই তার কাছে কিডনি বিক্রির বিষয়ে পরামর্শ চাইতে আসেন। কেউ আসলে পরামর্শ দেন তবে চক্রের সাথে জড়িত না। জেমস ও রশিদ তার নামে হিংসা করে মিথ্যা কথা বলেছে। এরা দুইজনই মূল হোতা।

তবে চক্রের মূল হোতা তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোনায়েম হোসেন জেমস বলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি ঢাকায় নিয়মিত হাসপাতালে যান এলাকার রুগীদের দেখাশুনা করতে। তবে কিডনি বিক্রির সাথে জড়িত নয়। তবে তার ব্যাংক হিসেবে প্রচুর টাকার লেনদেনের বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

চক্রের মূল হোতা মোনায়েম হোসেন জেমসের বিরুদ্ধে ধর্ষন, চাদাবাজির একাধিক মামলা চলমান। তার বিভিন্ন ব্যাংক হিসেবে প্রায় কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়া একাধিকবার প্রতিবেশি দেশেও যাওয়ার তথ্য পাওয়া যায়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir