দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষনার পর থেকে নৌকা সমর্থকদের হামলা-মারপিট ও হুমকি-ভয়ভীতির কারনে নির্বাচনী এলাকা সিরাজগঞ্জ-৫এর বেলকুচি-চৌহালী ও এনায়েতপুর থানার প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মী ঘরবাড়ী-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কয়েক দিনে নৌকার সমর্থকদের দফায় দফায় হামলা-মারপিটে স্বতন্ত্র প্রার্থীর শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
শনিবার দুপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেকমন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বেলকুচির নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ তুলে এসব কথা বলেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নৌকার সমর্থকরা ইতোমধ্যে আমার সমর্থক আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অর্ধশতাধিক বসতবাড়ী ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। এসব ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামীরা প্রকাশ্য ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহন করছে না। নির্বাচনে জালিয়াতি ও প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে তাকে পরাজিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে সাবেক মন্ত্রী আরো বলেন, ইতিপুর্বে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উপর কোন দিন এতো অত্যাচার- নির্যাতন হয়নি। বিএনপি-জামায়াতের অনুপ্রবেশকারীরা নব্য আওয়ামীলীগ সেজে নৌকা প্রার্থী মমিন মন্ডলের ছত্রচ্ছায়া এ হামলা ও নির্যাতন করছে। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিসহ জনগনকে নিয়ে বড় ধরনের কর্মসুচী ঘোষনা করা বলেও তিনি সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস, সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী আকন্দ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাজেদুল, পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা, রাজাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সনিয়া সবুর, বেলকুচি সদর ইউপি চেয়ারম্যান সোলায়ামান হোসেনসহ দলের নেতাকর্মী এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে আব্দুল মমিন মন্ডল এমপির মোবাইলে বার বার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার ব্যক্তিগত সহকারি পসলিম সরকার বলেন, আমাদের লোকজন কোন গ্যাঞ্জাম করে নাই। বিভিন্ন জায়গায় তারাই আমাদের লোকজনের উপর আক্রমণ করেছে।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মন্ডল জানান, যে কয়টা সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে তার প্রত্যেকটির মামলা হয়েছে। সাতটি মামলার প্রত্যেকটার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, আমাদের কাছে যেসব ঘটনা এসেছে, যেগুলো মামলার মতো সেগুলোর মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। যেটা মামলার মতো নয়, সেগুলো জিডি গ্রহন করে তদন্ত করা হয়েছে। আসমীদেরও ধরা হচ্ছে। পুলিশের অবস্থান পরিস্কার। অত্যন্ত নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণ ইলেকশন করেছি। ইলেকশনের পরে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশী তৎপড়তা শুরু হয়েছে। পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।