পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ নতুন তথ্য দিয়েছে। পুলিশ বলছে, চাঁদাবাজি নয়, ভাঙারি ব্যবসা এবং একটি দোকানে কারা ব্যবসা করবে তা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগ এবং হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছে তাদের একসঙ্গে ব্যবসাও ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (১২ জুলাই) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি বলেন, ভাঙারি ব্যবসা এবং দোকানে কারা ব্যবসা করবে সেটা নিয়ে একটি দ্বন্দ্ব চলছিল। হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগ এবং যারা হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে তারা সম্পর্কিত। তারা একসঙ্গে কিছুদিন ব্যবসা করেছে। যখন ব্যবসা লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয় তখনই তারা বিবাদে লিপ্ত হয়। এরফলে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে লালবাগ বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ জসীম বলেন, গত বুধবার বিকেল ৬টার দিকে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে একদল লোক লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) নামের এক ব্যক্তিকে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর কোতয়ালি থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তীতে ১০ জুলাই এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে পুলিশ নিহতের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য তা হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
গত ১১ জুলাই পুলিশ ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে এজাহারভুক্ত আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) ও তারেক রহমান রবিনকে (২২) গ্রেফতার করা হয়। এ সময় গ্রেফতার তারেক রহমান রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাব কর্তৃক আলমগীর (২৮) ও মনির ওরফে ছোট মনির (২৫) নামের আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এছাড়া আজ শনিবার রাতে মো. টিটন গাজী (৩২) নামে আরও এক এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করে কোতয়ালী থানা পুলিশ।
লালবাগ বিভাগের ডিসি আরও বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ অত্যন্ত তৎপর রয়েছে। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় মূল রহস্য উৎঘাটন, সংশ্লিষ্ট সকল অপরাধী গ্রেফতার এবং সোহাগ কেন এই ঘটনার শিকার হলো তা উৎঘাটনের জন্য একটি চৌকস টিম গঠন করা হয়েছে। ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।