
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুরে নিরক্ষর ছোট ভাইকে ভুল বুঝিয়ে বোনদের ফাঁকি দিয়ে পৈত্রিক সম্পত্তি রেজিষ্ট্রি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। পৈত্রিক সম্পত্তি ফেরত পেতে উপজেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন ভুক্তভোগী দুই বোন কামারখন্দ উপজেলার মামুদাকোলা গ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের স্ত্রী আয়শা খাতুন ও একই গ্রামের মৃত রজব আলী ব্যাবলের স্ত্রী সামন্তবান।
সোমবার (১৬ জুন) অবৈধ দখলদার ছবের শেখ ও তার ছেলে আয়নাল হকের কবল থেকে জমি উদ্ধারের দাবীতে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত দরখাস্ত দিয়েছেন তারা।
অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের তেতুলিয়া মৌজার তিন দাগে ১০৬ শতাংশ জমি তাদের বাবা মৃত বছের মন্ডলের সম্পত্তি। বাবার মৃত্যুর পর মা, এক ভাই ও তিন বোন ওই সম্পত্তির বিদ্যমান থাকেন। বিগত আরএস রেকর্ডে ওই জমির ৩.৫০ অংশ ভাই আব্দুল আজিজের নামে, প্রতি বোনের নামে ১.৭৫ অংশ করে ও মায়ের নামে ১.২৫ অংশ লিপিবদ্ধ হয়। বোনদের অন্যত্র বিয়ে হওয়ায় তারা সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তাদের ছোট ভাই আব্দুল আজিজ নিরক্ষর ও দিনমজুর। সাংসারিক অভাব অনটনের কারনে তিনি পৈত্রিক সম্পত্তির নিজের অংশ বিক্রি করতে প্রতিবেশী ছবের সেখকে প্রস্তাব দেন। ছবের সেখ আব্দুল আজিজকে ভুল বুঝাইয়া বোনেদের অগচোরে সকল ওয়ারিশদের বঞ্চিত করে জমিই রেজিঃ করে নেন। ছবের সেখ শুধুমাত্র এস.এ রেকর্ডমূলে অবৈধভাবে আব্দুল আজিজের কাছ থেকে রেজিষ্ট্রি করে নেয়। বিষয়টি জানতে পারলে ছবের সেখ তার ছেলে আয়নুল হককে দিয়ে ওয়ারিশদের ওই সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদের জন্য মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে।
ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা এতদিন জানতাম ওয়ারিশ সূত্রে আমাদের বাবার সম্পত্তি আমরাই পাবো। এ জন্য দীর্ঘদিন খোঁজখবর নেই নাই। এখন খোঁজখবর নিয়ে দেখি এসব জমি ছবের সেখ দলিল করে নিয়েছে। তবে ৩০/৩২ বছর আগে জমি দলিল করে নিলেও এখন পর্যন্ত তিনি সম্পূর্ণ জমি খারিজ করতে পারেননি।
আব্দুল আজিজ মন্ডল বলেন, আমার টাকার দরকার হওয়ায় জমি ফারাজ করে আমার যেটুকো অংশ সেইটুকো বিক্রি করেছি। বোনেদের অংশ বিক্রি করি নাই। ছবের সেখ দলিলে কতটুকো লিখে নিছে তাও আমি জানিনা। আমি কাগজপত্র দেখতে পারি না।
স্থানীয় মাতব্বর সাবেক ইউপি সদস্য মো. জিন্নাহ মন্ডল বলেন, বিষয়টি আমরা সবাই জানি। ওই সম্পত্তিতে বোনেদের অংশ রয়েছে। এ নিয়ে আমরা শালিসী বৈঠকে মিমাংসার কথা বললেও ছবের সেখ ও তার ছেলে রাজি হয় নি।
এ বিষয়ে ছবের সেখের ছেলে আয়নুল হক বলেন, আব্দুল আজিজ মন্ডল জমি বিক্রি করেছে আমরা ক্রয় করে নিয়েছি। এস এ রেকর্ডমূলে রেজিষ্ট্রি হওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, তখন আরএস রেকর্ড ফাইনাল হয়নি। তিনি বলেন, আমরা বাটোয়ারা সংশোধন মামলা দিয়েছি। মামলায় যেটা হয় আমরা মেনে নেব।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে একটা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।