রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৩:২১ অপরাহ্ন

স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারের ইন্ধনে মুরাদনগরে ট্রিপল মার্ডার: র‍্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা / ১৯ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫, ৮:৪০ অপরাহ্ন


স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড মেম্বার বাচ্চু মিয়ার উস্কানিতে কুমিল্লার মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানাধীন কড়ইবাড়িতে মা, ছেলে ও মেয়েসহ তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে র‍্যাব। এই ঘটনায় বাচ্চু মিয়াসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাবের সদস্যরা।

গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন, বাচ্চু মিয়া (৫৫), রবিউল আওয়াল (৫৫), আতিকুর রহমান (৪২), মো. বায়েজ মাস্টার (৪৩), দুলাল (৪৫) ও আকাশ (২৪)। শুক্রবার (৪ জুলাই) রাতে ঢাকার বনশ্রী ও কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে র‍্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল তাকে গ্রেফতার করে।

শনিবার (৫ জুলাই) বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত ১ জুলাই সকালে গ্রেফতারকৃত রবিউলের বাড়ি হাতে মোবাইল চুরির অভিযোগে বাঙ্গরা বাজার থানাধীন হায়দরাবাদ এলাকার অটোরিক্সা চালক বোরহানকে গ্রেফতারকৃত আসামীরা সহ অন্যান্য আসামীরা বেধড়ক মারধর করতে থাকে এবং প্রাণ নাশের হুমকি দিতে থাকে। পরবর্তীতে বোরহানের পিতা জসীম এই সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে তার ছেলের প্রাণভিক্ষা চায়। এই বোরহানের বাড়ি মৃত ভিকটিম জোনাকীর শ্বশুর বাড়ির পাশে অবস্থিত হওয়ায় বোরহানের পিতা জসীম জোনাকীকে আসামীদের নিকট হতে তার ছেলেকে উদ্ধার করার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু জোনাকী ও তার পরিবারের সদস্যরা আসামীদের নিকট হতে বোরহানকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে বোরহানের পিতা বাঙ্গরা বাজার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ইতোমধ্যে বোরহানকে পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে লোকমুখে খবর প্রকাশিত হলে বোরহানের পিতা ধারণা করে যে, আসামীগণ তার ছেলেকে মেরে লাশ গুম করে ফেলেছে এবং বোরহানের পিতা থানায় অভিযোগ দায়েরের ঘটনায় আসামীগণ ধারণা করে যে, ভিকটিম জোনাকী ও তার পরিবারের সদস্যদের পরামর্শে বোরহানের পিতা থানায় অভিযোগ করেছে।

এরই প্রেক্ষিতে গত ৩ জুন সকালে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রেফতারকৃত আসামীরা সহ অন্যান্য আসামীরা বেআইনীভাবে দলবদ্ধ হয়ে ভিকটিমের বাড়ি ঘেরাও করে অনধিকার প্রবেশ পূর্বক তাদের পরিবারের সকল সদসাদের বাড়ি থেকে বের হতে বলে। এসময় ভিকটিম ১ রোকসানা আক্তার রুবি (৫৫) বাড়ি থেকে বের হলে চেয়ারম্যান মেম্বারের সাথে তাদের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।পরবর্তীতে তারা গ্রেফতারকৃত আসামীগণ সহ অন্যান্য আসামীরা তার মাথায় রামদা দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে, অপর ভিকটিম জোনাকী (২৪) তার মাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এলে তাকেও নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। মা ও বোনের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ভিকটিম রাসেল (২৭) তৎক্ষণাৎ মোটরসাইকেল যোগে তার বাড়ির সামনে উপস্থিত হলে গ্রেফতারকৃত আসামী সহ অন্যান্য আসামীরা মোটরসাইকেলে থাকাবস্থায় নির্মমভাবে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এছাড়াও অপর দুই ভিকটিম রিক্তা (৩২) রুমাকে (২৭) গুরুতর আহত করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে আত্মগোপন করে।

পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা ও কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামীদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

র‍্যাব জানায়,গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে তারা সকলেই উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রাত ১১ এর অধিনায়ক বলেন, মূলত মব সৃষ্টিতে ইন্ধন দেন মেম্বর বাচ্চু মিয়া। এসময় ঘটনাস্থলে ইউপি চেয়ারম্যানও সেখানে ছিল। মূলত তাদের ইন্ধনেই নিসংশয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir