পেরি এনাল এবসেস বা গোদ ফোঁড়া একটি সার্জিকাল ইমার্জেন্সি অর্থাৎ রোগটি হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এর চিকিৎসা জরুরি।
গোদ ফোঁড়ার লক্ষণ কী? এটি পায়ুপথের আশপাশে, Battook বা গোদ এলাকায় হয়। এই এলাকায় প্রচুর পরিমাণে গ্ল্যাভ আছে, আবার এই এলাকায় জীবাণুও অসংখ্য। এই গ্ল্যাভগুলোর কোনো একটি জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলে এই ফোঁড়ার সূত্রপাত হয়। জীবাণু আশপাশের কোষকে ধ্বংস করে পুঁজ তৈরি করে ফলে উক্ত এলাকায় তীব্র ব্যথা হয়।
রোগী কোনো স্থানে বসতে পারে না, চলতে ফিরতেও ব্যথা করে, টয়লেট করতে তো তীব্র ব্যথা হয়। রোগীর জ্বর এসে যায় খেতে পারে না প্রশ্রাবেও সমস্যা তৈরি হয়। অনেক সময় একটি ফোলা স্থান পেতে পারেন, যাতে চাপ দিলে তীব্র ব্যথা হয়, অনেক সময় বাইর থেকে তীব্র ব্যথার স্থানটি বোঝা নাও যেতে পারে, চিকিৎসক পায়ুপথের ভিতরে পরীক্ষা করলে কোনো একটি স্থানে রোগী তীব্র ব্যথা পান।
গোদ ফোঁড়া কয়েক ধরনের হতে পারে। যেমন- পেরি এনাল (Peri anal), ইশ্চিও রেকটাল (Ischio-rectal), সাবমিও কোমল (Submucosal) এবং পেলভিক (Pelvic) এর মধ্যে পেলভিক (Pelvic) টাইপটি সবচেয়ে বিরল এবং চিকিৎসাও জটিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রে গোদ ফোঁড়া একজন সুস্থ মানুষের মধ্যে হঠাৎ করেই হয়। অন্য কোনো রোগের সঙ্গে এর সংশ্লিষ্টতা দেখা যায় না।
ডায়াবেটিস রোগী, ডিজিজ, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেমন যক্ষ্মা বা যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে তাদের এই রোগ চিকিৎসার পরও বার বার হতে পারে বা জটিল ধরনের গোদ ফোঁড়া হতে পারে।
গোদ ফোঁড়ার চিকিৎসা হচ্ছে একটিই দ্রুত অপারেশন করে এর ভিতরের পুঁজ ইত্যাদি পরিষ্কার করে ফেলা। এই কাজটি সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই করা উত্তম, দ্রুত চিকিৎসা না করলে বেশ কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই এ বিষয়ে অবহেলা করা ঠিক নয়।
কথায় আছে- এসব ক্ষেত্রে প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম। আমরা অনেকেই এসব বিষয়ে খুব একটা পাত্তা দেই না। অথচ প্রাথমিক অবস্থায় এগুলো নিয়ে সচেতন হলে দ্রুত সমাধান পাওয়া যায়। এড়ানো যায় অনেক জটিলতা।
লেখক: কোলরেক্টাল সার্জন, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি, শ্যামলী, ঢাকা।