সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন

শহজাদপুরে কাজীর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বাল্যবিবাহ করানো অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৭৪ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪, ৭:০৫ অপরাহ্ন

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার নিকাহ্ রেজিস্ট্রার সমিতির সভাপতি কাজী হাফিজুর ও রায়গঞ্জের ধুবিল ইউনিয়নের কাজী সেরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বাল্যবিবাহ করানো অভিযোগ উঠেছে।

এ ব্যাপারে গত ০৫ অক্টোবর সিরাজগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ করে ভুক্তভোগী হাফিজুল ইসলাম।

এ বিষয়ে’ন্যায় বিচার দাবী করে ভুক্তভোগী হাফিজুল ইসলাম বলেন, রং নাম্বারে কথা বলার সুত্রে শাহজাদপুর থানার তালগাছি গ্রামের মোক্তার হোসেনের মেয়ে ফাতেমা খাতুনের সাথে ফোনে পরিচয় হয়। তার সাথে ১০/১৫ দিন ফোনে কথা বলার এক পর্যায় আমি বাড়ী যাবার পথে তালগাছি বাস স্ট্যান্ডে নামলে অপরিচিত প্রায় ৭/৮জন ব্যাক্তি আমাকে ঘিরে ফেলে। তারা আমার নিকট থাকা ৭০,০০০/- হাজার টাকা এবং মোবাইল ফোন জোরপূর্বক কেড়ে নেয়। পরবর্তিতে আমাকে ওই মেয়ের বাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং অনেক মার-ধর করে মেয়ের সাথে জোরপূর্বক বিবাহ দেয়ার জন্যে ২ জন কাজীকে নিয়ে আসে। সে সময় আমার বিবাহের বয়স পূর্ণ হয়নি এবং জোরপূর্বক বিবাহের কারনে উক্ত কাজিগগ আমাদের বিবাহ না পরিয়েই চলে যায়।
ওই রাত আনুমানিক ৩.৩০ ঘটিকার সময় মোটর সাইকেলে উঠিয়ে শাহজাদপুর নগরডালা গ্রামের কাজী হাফিজুল ইসলাম এর বাড়ীতে নিয়ে যায় এবং অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিগণ জোরপূর্বক আমাকে কাজীর সামনে মারধর করে কাজীকে ২৭,০০০ হাজার টাকা প্রদান করে এবং আমাকে একটি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করে। পরবর্তীতে কাজী সিরাজুল ইসলাম এবং কাজী হাফিজুর ইসলামের উপস্থিতিতে ৪ লক্ষ টাকা কাবিন উল্লেখ্য করে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়। আজ অবদি আমার সহিত মেয়ে পক্ষের সাথে কোনপ্রকার কথাবার্তা বা যোগাযোগ হয় নাই। ফলে মেয়ে পক্ষের লোকজন আমার পরিবারের বাবার সাথে যোগাযোগ করে এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। যদি আমরা তার মেয়েকে বাড়ীতে না নিয়ে আসি তাহলে আমাকে এবং আমার পরিবারকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। বিশ্বস্ত মাধ্যমে জানতে পারলাম যে, আমার বিবাহের কাবিন ৪ লক্ষ টাকা করা হয়েছে পরবর্তীতে আমি এবং আমার পরিবার উক্ত কাজী হাফিজুরের কাছে গেলে সে আমাদের কাজী সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত কাবিনের কাগজ দেয়। পরবর্তীতে কাজীদ্বয়ের নিকট রেজিস্টার ভলিউম বই দেখতে চাইলে বিভিন্ন রকম তালবাহানা করছে এবং এ বিষয় নিয়ে যদি আমরা বেশি বারাবারি করি তা হলে কাবিনের টাকা আরো বৃদ্ধি করবে মর্মে আমাদের হুমকি দিচ্ছে।

এ বিষয়ে কাজী সেরাজুল ইসলাম এবং কাজী হাফিজুর এর বিরুদ্ধে উক্ত কাবিনের রেজিস্টার ভলিউম বই প্রদর্শনপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিরাজগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফাতেমা খাতুন বলেন,আমাদের লোকজন হাাফিজুল কে আটকের পর হালকা মারপিট করেছে। আমাদের বিয়ে শাহজাদপুর হাবিবুল্লাহ নগর ইউনিয়নের কাজী হাফিজুর রহমান এর অফিসে বসে কলমা ও কাবিন করান।

হাবিবুল্লাহ নগর ইউনিয়নের কাজী হাফিজুর রহমান বলেন, এই বিয়েটা আমি করাই নাই । এই বিয়েতে ঝামেলা থাকায়, রায়গঞ্জ উপজেলার ধুবিল ইউনিয়নের কাজী সেরাজুল ইসলামকে দিয়ে বিয়েটা পড়ানো হয়।

বিয়ে পড়ানোর সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। এটা নিয়ে আমি একাধিকবার দুই পরিবারের মাঝে শালিস দরবার করেও বিষয়টি নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি।
কাজীদের একজনের এলাকায় আরেকজন কাবিন করানোটা ঠিক নয় বলে ও জনান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে কাজী সেরাজুল ইসলামের মুঠোফোনে বারবার ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি।

সিরাজগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার শরিফ সৌরাভ মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অবিযোগ তদন্তের জন্য শাহজাদপুর সাব-রেজিস্টার কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir