রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন

এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ জানালো তদন্তকারীরা

অনলাইন ডেস্ক: / ৮ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫, ৯:৩৯ পূর্বাহ্ন
-সংগৃহীত ছবি

গত মাসে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছু সময়ের মধ্যেই ভেঙে পড়া এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী ফ্লাইটটির ইঞ্জিনে জ্বালানির সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়াই ছিল ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনার মূল কারণ। এতে বিমানে থাকা ২৬০ জনের প্রাণহানি ঘটে বলে ভারতীয় বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরোর প্রাথমিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারটি রানওয়ে ছাড়ার পরপরই ফিরে মাটিতে আছড়ে পড়ে। ওই দুর্ঘটনায় সবাই মারা গেলেও একজন যাত্রী অলৌকিকভাবে বেঁচে যান। তদন্তকারীরা ব্ল্যাক বক্স থেকে উদ্ধার করা ৪৯ ঘণ্টার ফ্লাইট ডেটা ও দুই ঘণ্টার ককপিট অডিও বিশ্লেষণ করে দেখতে পান, ককপিটে অবস্থিত ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলো “রান” থেকে “কাট-অফ” অবস্থানে চলে যায়, যার ফলে ইঞ্জিনে জ্বালানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে পড়ে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানটি ১৮০ নট গতিতে পৌঁছানোর পর মাত্র ১ সেকেন্ডের ব্যবধানে দুইটি ইঞ্জিনের জ্বালানি কাট-অফ সুইচ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ককপিট রেকর্ডারে এক পাইলটকে অপর পাইলটকে জিজ্ঞেস করতে শোনা যায়, “তুমি কেন কাট-অফ করেছ?” অপর পাইলট জবাব দেন, “আমি করিনি।”

এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করা হলেও ততক্ষণে দেরি হয়ে যায়। ইঞ্জিন রিস্টার্টের প্রক্রিয়ায় থাকতেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। সেসময় বিমানের র‍্যাম এয়ার টারবাইন (আরএএম) চালু হয়ে যায়, যা জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার অংশ। বিমানটি রানওয়ে পার হয়ে খুব দ্রুত উচ্চতা হারিয়ে ফেলে এবং পাশের বিজে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের হোস্টেলে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা যে, সেগুলো সহজে বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। নিরাপত্তা বিশ্লেষক ডেভিড সোসি বলেন, “এই সুইচগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে নাড়াচাড়া করার জন্য তৈরি। দুই ইঞ্জিনের জ্বালানি কাট-অফ সুইচ অনিচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত বিরল।”

দুর্ঘটনাগ্রস্ত ফ্লাইট AI171-এ ২৪২ জন যাত্রী ও ক্রু ছিলেন, যাদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, সাতজন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডিয়ান নাগরিক। এছাড়াও, মাটিতে থাকা বেশ কয়েকজন লোক নিহত হন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের বাসিন্দা। সব মিলিয়ে প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়ায় ২৬০ জনে।

এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তারা তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করছে এবং দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পাশে রয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, “AI171 ফ্লাইট দুর্ঘটনায় যেসব পরিবার প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাই এবং এই কঠিন সময়ে তাদের পাশে আছি।”  সূত্র: সিএনএন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir