চামরার মূল্য কম হওয়ায় কোরবানীর পশুর মালিকেরা বিপাকে পড়ে পানির দামে বিক্রি করে দিলেন তাদের চামড়া । ঈদের দিন সন্ধ্যা থেকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত উল্লাপাড়ার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে খুব কমদামে বিক্রি হয়েছে গরু ছাগলের চামড়া। অনেকে দাম না হওয়ায় তাদের কোরবানীর চামড়া নিকটবর্তী এতিমখানায় ও গরীব দুঃখী মানুষকে দান করে দিয়েছেন। স্থানীয় মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বলছেন, চামড়া কিনে তারাও লোকসান গুনছেন। সরকার এ বছর চামড়ার দাম বাড়িয়ে দিলেও তার সুফল পাননি চামড়া বিক্রেতা ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার পূর্বদেলুয়া গ্রামের রায়হান আলী জানান, তার ৮০ হাজার টাকা দামের ষাঁড়ের চামড়া বিক্রি করেছেন তিনি মাত্র ৩শ’ টাকায়। সলপ চরপাড়া গ্রামের মামুন হোসেন জানান, তাদের তিনজনের ভাগের ২ লাখ ৫০হাজার টাকা মূল্যের গুরুর চামড়া বিক্রি করেছেন ৫শ’টাকায়। অথচ গেল বছর এ মাপের গরুর চামড়ার দাম ছিল ৭ থেকে ৮শ’ টাকা। কাশিনাথপুর গ্রামের আব্দুল আজিজ তার ২০হাজার টাকা মূল্যের খাঁশির চামড়া ৮০ টাকা বলায় তিনি এক গরীব মানুষকে বিনামূল্যে দিয়ে দিয়েছেন।
উল্লাপাড়া পৌরশহরের ঝিকিড়া মহল্লার বাসিন্দা অধ্যাপক সামসুল হক তাদের ১লাখ ২০ হাজার টাকা দামের গরুর চামড়ার গ্রাহক না পেয়ে অবশেষে চরঘাটিনা এতিমখানায় দান করেছেন বলে জানিয়েছেন।
এব্যাপারে উল্লাপাড়ার মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী রঞ্জিত কুমার দাশ এবং মনির কুমার জানান, তারা কম মূল্যে চামড়া কিনেও লাভ করতে পারেননি। সিরাজগঞ্জ রোডের চামড়া ব্যবসায়ীর কাছে শেষ পর্যন্ত কেনা দামেই তাদেরকে বিক্রি করতে হয়েছে। উপরন্তু পরিবহন ব্যয় তাদের লোকসান হয়েছে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ রোডের চামড়া ব্যবসায়ী সামছুল হক জানান, ঢাকার বড় চামড়া ব্যবসায়ী এবং ট্যানারী মালিকেরা এবছর বেশী দাম দিয়ে চামড়া কিনছেন না । অপরদিকে চামড়া প্রসেসিং এর ব্যবস্থা না থাকায় লবনজাত করেই তাদেরকে কমমূল্যে চামড়া বিক্রি করে দিতে হয়। আর এ কারণে চামড়া বেশীদিন তাদের ঘরে রাখার কোন ব্যবস্থা নেই। এ বছর সরকার চামড়ার দাম বাড়িয়ে দিলেও প্রকৃতপক্ষে চামড়ার বিক্রেতা ও মধ্যসত্ত¡ভোগীরা এই সুযোগ ভোগ করতে পারছেন না বলে উল্লেখ করেন এই ব্যবসায়ী।