নিজস্বপ্রতিবেদক
সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে নির্বাচনী প্রচারণায় নৌকায় ভোট চাওয়ার চেয়ে বেশিরভাগ সময় সাবেক মন্ত্রী ও ঈগল প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের সমালোচনা করেই ব্যয় করেন আব্দুল মমিন মন্ডল এমপি ও তার সহযোগীরা। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলকুচির দৌলতপুর আঞ্চলিক কমিটির এক নির্বাচনী জনসভায় বেশিরভাগ সময়ই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী লতিফ বিশ্বাস ও তার পরিবারকে নিয়ে কথা বলেন তিনি। ওই জনসভায় লতিফ বিশ্বাসকে উদ্দেশ্য করে মমিন মন্ডল বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তার অপকর্মের কারণে তিনি মনোনয়ন পাননি। মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে তিনি পার্টি অফিসে নেতাকর্মীকে ডেকে সিদ্ধান্ত নেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে তারা সাধ মেটাবে। পরে জেলা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে প্রার্থী হয়ে যান। যে ব্যক্তির কেরিয়ার শুরু হয় আওয়ামীলীগ এবং নৌকা প্রতিকের মাধ্যমে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তার নির্বাচনী যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে উপজেলা চেয়ারম্যান, এমপি পরে মন্ত্রী হন।
নির্বাচিত হওয়ার পর তার পরিবারের সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে যায়। যখন তিনি মন্ত্রী ছিলেন, এই নির্বাচনী এলাকায় সর্বোচ্চ পর্যায়ে আইন শৃংখলা অবনতি হয়েছিল। তার পরিবারের সকল সদস্যকে বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচিত করতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজ করেছেন। নির্বাচন আসলে তিনি এলাকায় আতংক সৃষ্টি করেন। যখন দায়িত্বে ছিলেন এই এলাকায় সন্ত্রাস চাঁদাবাজি ও জুয়ার ব্যবসা করতেন। বিশ্বাস সাহেবের অপকর্ম তার পরিবারের সর্বোচ্চ দু:শাসনের কারণেই আজকে প্রত্যেকটি ইউনিয়নের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তার সময়ে প্রত্যেক এলাকায় ময়-মুরুব্বীদের বেইজ্জতী করেছে। আব্দুল মমিন মন্ডলের বক্তব্যের পুরো অংশে লতিফ বিশ্বাসকে নিয়ে সমালোচনা থাকলেও ৫ বছরে নিজ সংসদীয় আসনের উন্নয়ন নিয়ে কোন আলোচনা ছিল না। প্রতিটি নির্বাচনী সভা, উঠোন বৈঠকে তিনি একইভাবে বক্তব্য রাখেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে বেলকুচি পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা বলেন, মমিন মন্ডল নির্বাচনী প্রচারণায় সমালোচনা ছাড়া আর কিছু বলতে পারে না। কারণ সারাদেশে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন থাকলেও বেলকুচিতে তিনি কোন উন্নয়ন করতে পারেননি। তাই উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করে নৌকায় ভোট চাওয়ার সামর্থ্য তার নাই। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেন, বেলকুচিতে নৌকার প্রচারণায় উন্নয়নের কথা না বলে শুধুমাত্র লতিফ বিশ্বাসের সমালোচনা করা হয়। তিনি তার একটি বক্তব্যে হুমকিও দিয়েছেন লতিফ বিশ্বাসকে ৭ তারিখে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে আব্দুল মমিন মন্ডলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে তার অন্যতম সহযোগী বেলকুচি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক সরকার বলেছেন, নির্বাচনী প্রচারণায় সব শ্রেণীর বক্তা থাকে। আমরা যখন বক্তব্য দেই তখন উন্নয়নের কথা বলি। স্বাভাবিক প্রশ্ন আসে আমরা ধানের শীষ বা রাজনৈতিক দলের কথা বলবো। কিন্তু এখন আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী সে (লতিফ বিশ্বাস)। এ জন্য তাকে নিয়ে বলতেই পারে। তবে আমাদের উন্নয়ন আছে, লতিফ বিশ্বাসের উন্নয়ন আছে সেটা অস্বীকার করা যাবে না। আমি যখন বক্তব্যে সমালোচনা করতে দেখি আমি স্টপ করে দেই।