সিরাজগঞ্জে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সমন্বয়ে সাম্য ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে দিকনির্দেশনামূলক কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার বিকেলে শহীদ এম. মনসুর আলী অডিটোরিয়ামে এ যৌথ কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে এস.এম. জিলানী বলেন, ১৭ বছর যাবত ফ্যাসিবাদ হাসিনা জগদ্দল পাথরের মতো মানুষের বুকের উপর বসেছিল। খালেদা জিয়া যে গনতন্ত্র ৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত করেছিল সেই গনতন্ত্র হরন করেছিল। ১৭ যাবত বাক স্বাধীনতা হারিয়েছিল। ভোটের অধিকার হারিয়েছিল বাংলাদেশের জনগন। মানুষের সেই বাক স্বাধীনতা ফিরে পেতেই আন্দোলণ সংগ্রাম করা হয়েছিল। কিন্তু এখনো আমরা লক্ষ্য পৌছতে পারি নাই। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ সরকারের সময় সিরাজগঞ্জের নেতাকর্মীর উপর স্টিম রোলার চালানো হয়েছিল। আন্দোলনের সময় ধানক্ষেত, নৌকা ও গরুর গোয়ালে থেকেছেন আবার আন্দোলনে মাঠে নেমেছেন। এই আন্দোলন সংগ্রামের ফসল ঘরে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টর নষ্ট করে দিয়েছে। প্রতিটি স্তম্ভকে নস্ট করেছে। সে জন্য বিএনপির প্রতিটি কর্মীকে দায়িত্বশীল পরিচয় দিয়ে সতর্কতার সাথে কাজ হবে।
তিনি বলেন, আল্লাহর হুকুম হয়েছিল খালেদা জিয়াকে বাড়ী থেকে বের করে দিয়েছিলেন। আর আপনাকে আল্লাহ দেশকে থেকে বের করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিএনপির প্রধান লক্ষ্য বাংলাদেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে একটি সরকার গঠন হবে সেই সরকার গণতান্ত্রিকভাবে বাংলাদেশ পরিচালন করবে। কিন্তু লক্ষ্যে পৌছতে পারেনি। কাঙ্কিথ লক্ষ্যে পৌছতে হলে কাজ করতে হবে। ইতোমধ্যে নানাষড়ন্ত্র হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ থেকে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, প্রকৃত কর্মী হলো যারা দু:সময়ে যে পালিয়ে যায় না, সুসময়ে চরিত্র হারায় না। তাই এমন সমাবেশে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারন সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, সকল নেতাকর্মীদের সাধারন মানুষের সাথে ভাল আচরন করতে হবে। সাধারন মানুষের ভালবাসা নিয়ে আগামীতে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে হবে। একটি সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র গঠনে সকল ষড়যন্ত্র ছাত্রদল যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলকে রুখে দিতে হবে।
সভায় বক্তারা বলেন, তারেক রহমান নির্দেশনা দিয়েছেন আমরা কোনো প্রতিহিংসার রাজনীতি করব না। আমাদের রাজনীতি হবে সাম্য ও মানবিক। মনে রাখবেন গত ১৭ বছর হাসিনা সরকারের কর্মকান্ডে মানুষ ক্ষিপ্ত ছিল। ফলে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। সেটি আমাদের উপলব্ধি করতে হবে। আগামীতে রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনে কাজ করতে হবে। কাজেই এখন থেকেই আপনারা নিজেদের সেভাবে প্রস্তুত করুন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বিগত ১৬ বছরে ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। জনগন নিজেদের পছন্দসই প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেনি। বিএনপি আগামীতে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসলে দল ও অঙ্গ সংগঠনের কেউ কোনো অন্যায় করে পার পাবে না।
ছাত্র-জনতা আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদেরকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরন করে বলেন, তাদেরকে সহায়তা করা হবে। বর্তমান অন্তবর্তী সরকারে উদ্দেশ্যে বলেন, সব রাজনৈতিক, মিথ্যা ও সাজানো মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। গুম-খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন, সেচ্ছাসেবকদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস.এম. জিলানী, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইয়াছিন আলী, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারন সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আফসান ইয়াহিয়া, সাংগঠকি সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান, সহ-সাধারন সম্পাদক আ.হ. মুহাম্মাদ খোকন, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক আবদুল্লাহ আল কায়েস, যুবদলের সভাপতি মির্জা আব্দুল জব্বার বাবু, সাধারন সম্পাদক মুরাদুজ্জামান মুরাদ, ছাত্রদলের সভাপতি জোনায়েত আহমেদ সবুজ ও সাধারন সম্পাদক সেরাজুল ইসলাম সেরাজ প্রমুখ। সভায় ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহন করেন।