মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর থেকে অপহরণ নাটক সাজিয়ে বাল্কহেডসহ ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল বাল্কহেডের সুকানি ও মিস্ত্রি। তবে নৌ পুলিশের তৎপর অভিযানে নাটকের মূল পরিকল্পনাকারীসহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বরিশালের নদীবন্দর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অপহৃত বাল্কহেড।
রবিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে নৌ পুলিশ সদরদপ্তরের পুলিশ সুপার (অপারেশন) মুক্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ৭ জুলাই ভোরে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মুক্তারপুর এলাকায় ক্রাউন সিমেন্ট ফ্যাক্টরি থেকে একটি বাল্কহেড সিমেন্ট লোড করে ঢাকার আমিনবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বাল্কহেডটি ছিল আব্দুল্লাহ আল ফারুক ওরফে লিটনের মালিকানাধীন। সেটিতে ছিলেন সুকানি মো. আক্তার হোসেন খান (৫০) ও মিস্ত্রি বেল্লাল (৩৫)। কিন্তু তারা গন্তব্যে না গিয়ে বাল্কহেডটি নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যান।
পরবর্তীতে তারা নিজেরাই অপহরণকারী সেজে মালিকের কাছে ফোন করে দাবি করে, বাল্কহেডসহ সুকানি ও মিস্ত্রিকে অপহরণ করা হয়েছে এবং তাদের মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
এ ঘটনায় মালিক বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে নৌ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি কুসুম দেওয়ানের নির্দেশনায় ও পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে নৌ পুলিশের একাধিক টিম অভিযান শুরু করে।
১০ জুলাই ঢাকার উত্তরা এলাকা থেকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয় বেল্লালকে এবং তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বরিশাল থেকে আটক করা হয় আরেক সহযোগী মো. সবুজ ওরফে টগর (৩৫)-কে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বরিশালের দুর্গম নদী এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় বাল্কহেডটি, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা।
আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার দায় স্বীকার করেছে এবং তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। মূলত বাল্কহেড বিক্রি করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তারা এই অপহরণ নাটক সাজিয়ে মালিকের কাছ থেকে অর্থ আদায় করতে চেয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, “অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার এবং বাল্কহেড উদ্ধার নৌ পুলিশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সফলতা। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্তে তদন্ত চলছে।”