কুষ্টিয়ার একটি কেন্দ্রে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নপত্র বিতরণের ঘটনায় কেন্দ্রসচিবসহ ছয়জনকে পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিতরণ করা ভুল প্রশ্নপত্র নতুন করে ছাপার কাজ চলছে। এ ঘটনায় যশোর শিক্ষা বোর্ড ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষা বোর্ড থেকে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি শুক্রবার কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত কমিটি বলছে, প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে আসার আগে যে ধাপগুলো আছে, সেই হিসেবে এক পরীক্ষার প্রশ্ন আরেক পরীক্ষায় আসা অনেকটা অসম্ভব বলা যায়। ট্রেজারিতে প্যাকেটবন্দির সময় যদি খুবই সতর্কতার সাথে কাজগুলো করা হয় তাহলে এ ধরনের ঘটার সম্ভাবনা থাকে না। এক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকা কলেজের চার শিক্ষকের ভুলের কারণেই এমনটা হয়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে যশোর শিক্ষা বোর্ডের গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত টিম আদর্শ ডিগ্রী মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে আসেন। সেখানে বিকেল পর্যন্ত তারা অবস্থান করেন। এরপর তদন্ত কাজ শেষ করে বের হয়ে যান। এর আগে গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আজব আলী জোয়ার্দ্দরকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করে নতুন করে তিন সদস্যের পরীক্ষা পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অব্যাহতি পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন-অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ও কেন্দ্রসচিব সালাহ্ উদ্দিন, পরিচালনা কমিটির সদস্য রাজু উদ্দিন আহমেদ, সেলিম উদ্দিন, আব্দুর জব্বার, হারুনার রশিদ ও ট্যাগ অফিসার।
কেন্দ্রসচিব ও আদর্শ ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) সালাহ্ উদ্দিন বলেন, তদন্ত কমিটি লিখিতভাবে কিছু না জানালেও ওই চার শিক্ষকসহ আমাকে কেন্দ্রের পরিচালনা কমিটির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মো. মিজানুর রহমান বলেন, যুক্তিবিদ্যা বিষয়ের দ্বিতীয় পত্রের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নতুন করে ছাপার কাজ চলছে। শুক্রবার রাতের মধ্যে প্রশ্নপত্র সব জায়গায় পৌঁছে যাবে। এছাড়া কেন্দ্রের পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির দায়িত্বে থাকা ছয়জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
যশোর বোর্ডের তদন্ত টিম শুক্রবার কেন্দ্র ঘুরে গেছেন। এর পাশাপাশি জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার আদর্শ মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে মানবিক বিভাগের যুক্তিবিদ্যা বিষয়ের প্রথম পত্রের পরীক্ষা ছিল। সৃজনশীল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ৩০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। সেখানে কয়েকটি কলেজের মানবিক বিভাগের ১২৬ জন পরীক্ষার্থী ছিল। দুটি কক্ষে ৫২ জনের মধ্যে যুক্তিবিদ্যার প্রথম পত্রের ‘গ’ সেট ১২১ কোডের নৈর্ব্যক্তিক (এমসিকিউ) প্রশ্নের পরিবর্তে দ্বিতীয় পত্রের ‘গ’ সেট ১২২ কোডের প্রশ্ন বিতরণ করা হয়।
শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন দেখার পর বিষয়টি বুঝতে পেরে শিক্ষকদের জানায়। এসময় শিক্ষকেরা দ্রুত প্রশ্নগুলো প্রত্যাহার করে নেন। ঘটনা জানার পর জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে ওই কেন্দ্রের সচিব কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।