নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে গ্রামবাসীদের আর্থিক সহায়তা ও স্বেচ্ছাশ্রমে ১২ ফুট প্রশস্তের দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। দুই সপ্তাহ ধরে ভেকু মেশিনের মাধ্যমে পাশের সরু খাল থেকে মাটি তুলে এ সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে।
বিগত পঞ্চাশ বছর ধরে জন প্রতিনিধিরা আশ্বাস দিলেও হেঁটে চলাচলের জন্য রাস্তা তৈরি না হওয়ায় বাধ্য হয়ে গ্রামবাসী চাঁদা তুলে ও স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে এ উদ্যোগ নিয়েছে। রাস্তাটি না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে উপজেলার পাঁচ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের।
জানা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নের চর বেলতৈল থেকে জালালপুর ইউনিয়নের মূলকান্দী মোল্লাপাড়া পর্যন্ত একটি কাঁচা রাস্তার জন্য বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এই রাস্তা দিয়ে উপজেলার পাঁচ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের চলাচল। বর্ষাকালে নৌকা দিয়ে চলাচল করা গেলেও শুষ্ক মৌসুমে হেঁটে যাতায়াত সম্ভব হতোনা। ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুল-কলেজে যেতে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এছাড়া এখানকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে সরবরাহ ও শহর থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে আসতেও ভোগান্তি ছিল সীমাহীন। কেউ অসুস্থ হলে যাতায়াতের পথ না থাকায় হাসপাতালে নিতেও পড়তে হতো বিপাকে।
তারা আরও জানান, সম্প্রতি অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে সন্তান প্রসবের জন্য কোলে করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে পা পিছলে পড়ে যান এবং সাথে সাথেই সন্তান জন্ম হওয়ার পর মৃত্যু হয়। সেই গৃহবধূ এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় সমাজকর্মী ইঞ্জিনিয়ার আল মাহমুদ রাস্তার জন্য বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে যায়। কিন্তু তাৎক্ষণিক সরকারি সহায়তায় রাস্তা নির্মাণ সম্ভব হবেনা শুনে আল মাহমুদ নামে উদ্যোগী হয়ে গ্রামবাসীর কাছে চাঁদা ও স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত দুই সপ্তাহ ধরে রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে।
আল মাহমুদ জানান, বছরখানেক আগেও তার নিজ গ্রামেও চলার কোন পথ ছিল না। ওই সময় আমার বাবা অসুস্থ হলে সময়মতো হাসপাতালে নিতে পারেননি। বাবা মারা যায়। গ্রামের সব মানুষের অসুবিধা হয়। এ কারণে উদ্যোগী হয়ে রাস্তাটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
বেলতৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রামবাসীর উদ্যোগে রাস্তাটি তৈরি হচ্ছে। ওই রাস্তার উপর প্রকল্প গ্রহন করে রাস্তাটি আরো সুন্দর এবং পরবর্তীতে পাকাকরণের চেষ্টা করা হবে।