শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
আদালতের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ও ঘাট পরিচালনার দায়িত্ব ফিরে পেয়ে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের জগতলা (কৈজুরি-সোনাতনী) খেয়াঘাটের সর্বচ্চ দরদাতা ইজারাদার আবু বক্কার দিদ্দিক যমুনার চরের হতদরিদ্র ২০ হাজার মানুষের ২ দিনের খেয়া পাড় ফ্রী করে দিয়েছেন। তার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগে এলাকাবাসী আনন্দ প্রকাশ করেছেন।
ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুর থেকে শুরু হয় বুধবার রাত পর্যন্ত চলবে। বৃহস্পতিবার থেকে পূর্বের ভাড়ায় এ খোয়া পারাপার চলবে।
এ বিষয়ে দরদাতা আবু বক্কার দিদ্দিক বলেন, আমি ২০১৭ সাল থেকে সুনামের সাথে এ ঘাট পরিচালনা করে আসছি। আমার বাবা মোজাহার আলী মোল্লাও এ ঘাটের একজন মাঝি ছিলেন। তারপরেও শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন দ্বিতীয় দরদাতা সাইফুল ইসলামের যোগসাজসে মিথ্যা তদন্তের মাধ্যমে আমাকে বাদ দিয়ে গত ৩ এপ্রিল দ্বিতীয় দরদাতাকে ইজারা প্রদান করেন। এতে সরকার ১ লাখ ৯০ হাজার ১ টাকা রাজস্ব হারায়।
তিনি আরো বলেন, অপরদিকে আমিও আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এর সুবিচার প্রাপ্তির জন্য আমি গত ১২ এপ্রিল শাহজাদপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। বিচারক সোহেল রানা আমার মামলাটি আমলে নিয়ে গত ১৩ এপ্রিল শুনানি শেষে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন ও ভাটপাড়া গ্রামের শহিদ আলীর ছেলে দ্বিতীয় দরদাতা সাইফুল ইসলাম মাঝিকে শোকজ প্রদান করেন।
সেই সাথে বিচারক এ মামলার শুনানিকাল পর্যন্ত ওই খেয়াঘাটের ইজারা কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ প্রদান করেন। এ আদেশের কপি ওই দিনই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৌছে দেয়া হয়। তারপরেও আদালতের আদেশ অমান্য করে সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন দ্বিতীয় দরদাতাকে কার্যাদেশ প্রদান করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে শাহজাদপুর থানার এসআই আলম একদল পুলিশ নিয়ে ঘাট এলাকায় স্ব শরীরে উপস্থিত হয়ে শত শত লোকের সামনে আমাকে ঘাটের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। আমি ঘাট পরিচালনোর দায়ীত্ব বুঝে পেয়ে আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ও ঘাট পরিচালনার দায়িত্ব ফিরে পেয়ে শাহজাদপুর উপজেলার সোনাতনী ইউনিয়নের যমুনা নদীর দূর্গম চরের হতদরিদ্র প্রায় ২০ হাজার মানুষের ২ দিনের খেয়া পাড়ে ভাড়া ফ্রী করে দিয়েছি।
শাহজাদপুর থানার এসআই আলম বলেন, আদালতের নির্দেশে আমরা সর্বচ্চ দরদাতা আবু বক্কার সিদ্দিককে ঘাটের ইজারা পরিচালনার কার্যভার বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই সাথে উভয়পক্ষকে ঘাটে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতেও বলা হয়েছে।
দ্বিতীয় দরদাতা সাইফুল ইসলাম মাঝি বলেন, উপজেলা প্রশাসন আমার কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে আমাকে ঘাট বরাদ্দ দিয়েছিলেন। এখন আদালত আবু বক্কারকে ঘাট দেয়ার নির্দেশ দেয়ায় আমরা সেখান থেকে সরে এসেছি। সেই সাথে এ বিষয়ে অচিরেই আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।