পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানস্থল ও আশপাশের সমগ্র এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সমগ্র এলাকা রিয়েল টাইম মনিটরিং করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। সিসি ক্যামেরায় সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার (১ এপ্রিল) ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় ডিএমপি কমিশনার এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। অনুষ্ঠানস্থলে কোন প্রকার ব্যাগ নিয়ে আসা যাবে না।
তিনি বলেন, যে সব সংগঠন পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান আয়োজন করবে তাদের একজন করে প্রতিনিধি পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যেখান থেকে সিসি ক্যামেরা মনিটরিং করা হবে সেখানে পুলিশের সঙ্গে থাকবে। যদি কোথাও সন্দেহভাজন কাউকে দেখা যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সিসি ক্যামেরা দেখে তাকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোথাও কোনো প্রকার নিরাপত্তার ব্যত্যয় দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকার দায়িত্বরত অফিসারকে তাৎক্ষণিকভাবে জানানো হবে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।
তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে শোভাযাত্রার পথ ও আশপাশের এলাকা ভিডিও কাভারেজের মধ্যে রাখা হবে। কোনো দুষ্কৃতিকারী যদি বাইরে থেকে কোনো অপতৎপরতা চালানোর চেষ্টা করে তাহলে ভিডিও ফুটেজ দেখে সহজেই তাকে শনাক্ত করা যাবে।
যদিও এ ধরনের অপতৎপরতা চালানোর কোনো গোয়েন্দা তথ্য আমাদের কাছে নেই, তবুও সতর্কতার স্বার্থে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে বলে উল্লেখ করেন হাবিবুর রহমান।
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, বাংলা নববর্ষকে ঘিরে সাইবার গুজব প্রতিরোধের জন্য ডিএমপির সাইবার টিম প্রস্তুত রয়েছে। কোনো প্রকার সাইবার গুজব কারো নজরে আসলে প্রথমেই পুলিশকে অবহিত করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানস্থলে আগত দর্শনার্থীদের জন্য সুপেয় বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা থাকবে। পুলিশ কন্ট্রোল রুমের সাথেই ডিএমপির উদ্যোগে ভ্রাম্যমান চিকিৎসা টিম থাকবে।
পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে মসজিদে যাতে কোনো প্রকার নেতিবাচক প্রচার বা আলোচনা না করা হয় সেজন্য ইসলামী ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ডিএমপি কমিশনার।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, সেফটি ফার্স্ট, এটি শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নয় এটা সারা পৃথিবীতেই প্রযোজ্য। বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক অনুষ্ঠান এবং জাতীয় অনুষ্ঠান। জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সকলেই এতে অংশগ্রহণ করি। রমনাতে সকলের একটি মহামিলন ঘটে। সেই মহামিলনটা যাতে সুন্দর করে আমরা সম্পন্ন করতে পারি সেজন্য আমি সকলের সহযোগিতা চাই।
সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডক্টর এম মাকসুদুর রহমান; ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) ড. খ. মহিদ উদ্দিন; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ; যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, উপ-পুলিশ কমিশনারসহ; র্যাব, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, নৌ-পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, এমআরটি পুলিশ, ডিজিএফআই, এনএসআই, ফায়ার সার্ভিস, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বাংলা একাডেমি, গণপূর্ত অধিদপ্তর, ঢাবির চারুকলা অনুষদ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা ওয়াসা, ডিপিডিসি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, ছায়ানট এবং ঋষিজ শিল্প গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।