
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার জোরদিগি ফুলমালিচালা গ্রামে মসজিদের নামে জমি দান করায় লাল মিয়া নামে এক ব্যক্তি চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে দায়ের করা হয়েছে ৬টি মিথ্যা মামলা।
সরেজমিনে ঘুরে ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা যায়, প্রায় তিন দশক আগে গ্রামের ধর্মপ্রাণ মানুষদের অনুরোধে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি নুর মোহাম্মদ জোরদিগি মৌজার ৫৬৯ দাগের ২৪ শতাংশ জমি মসজিদের নামে দান করেন। এরপর সেখানে একটি টিনশেড মসজিদ নির্মাণ করা হয়, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামবাসী শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করে আসছিলেন।
নুর মোহাম্মদের মৃত্যুর পর তার ছয় ছেলের মধ্যে পাঁচ ভাই পিতার দানকৃত সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও বড় ছেলে শাজাহান এর বিরোধিতা শুরু করেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি একপর্যায়ে মসজিদের রাস্তা বন্ধ করে দেন এবং সেখানে নামাজ আদায় বন্ধ করে দেন। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ঘটনার প্রতিবাদ জানালে শাজাহান তার ভাই ও এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল আদালতে দুটি, থানায় দুটি এবং ইউনিয়ন পরিষদে দুটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন বলে দাবি করেন লাল মিয়া।
লাল মিয়া আরও জানান, আমি নতুন একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য ১০ শতাংশ জমি দান করার পর থেকেই শাজাহান আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এরপর আমার বিরুদ্ধেও চারটি মিথ্যা মামলায় আমাকে প্রধান আসামি করা হয়। তিনি একজন দাঙ্গাবাজ প্রকৃতির মানুষ, যার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
ঘটনাটি সম্পর্কে সাবেক ইউপি সদস্য ফরহাদ আলী বলেন, ১৯৯৬ সালে নুরু মন্ডল মসজিদের জন্য জমি দান করেন এবং ২০০০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার গড়া মসজিদে গ্রামবাসী শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করতেন। কিন্তু সম্প্রতি তার বড় ছেলে শাজাহান ও তার দুই ছেলে মামুন ও আকাশ মসজিদের রাস্তা বন্ধ করে দেন। ছয় ভাইয়ের মধ্যে পাঁচ ভাই বিষয়টি মেনে নিলেও বড় শাজাহান মানেন নি। পরে চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ বাহারকে সঙ্গে নিয়ে আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করি। শাজাহান নিজে হাতে ড্রাগন গাছ কেটে রাস্তা খুলে দিলেও পরে তিনি গ্রামের নিরীহ লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি শুরু করেন। এমনকি নতুন মসজিদের জন্য জমি দানকারী লাল মিয়াকেও ছাড়েননি।
গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, শাজাহানের এমন আচরণে আমরা হতবাক। তার বাবা যেখানে মসজিদ নির্মাণের জন্য জমি দান করেছেন, সেখানে তিনি নামাজে বাধা দিচ্ছেন এবং যারা প্রতিবাদ করছেন তাদের নামে মামলা দিচ্ছেন। আমরা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাই, যেন মসজিদে নিরবিচারে নামাজ আদায়ের পথ সুগম হয় এবং হয়রানির শিকার ব্যক্তিদের সুবিচার নিশ্চিত করা হয়।