পিরোজপুরে লিফলেট বিতরণকে কেন্দ্র করে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। রবিবার দুপুর ১টায় পিরোজপুর টাউন ক্লাব মাঠে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি লিফলেট বিতরণ শেষে এ হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এসময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্ররা পিরোজপুরের জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা-কর্মীদের বয়কট করেন।
জানা যায়, কেন্দ্র থেকে দেশজুড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ নিয়ে লিফলেট বিতরণ এবং জনসংযোগ করার সিদ্ধান্ত নিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা-কর্মীরা দেশজুড়ে কেন্দ্রঘোষিত সূচি মেনে লিফলেট বিতরণ ও জনসংযোগ করে। এর ধারাবাহিকতায় আজ দুপুরে পিরোজপুর শহরে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি লিফলেট বিতরণ করে। লিফলেট বিতরণ শেষে দুই পক্ষই শহরের টাউন ক্লাব মাঠে জড়ো হয়ে আলোচনা সভা করে। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পিরোজপুর ছাত্র প্রতিনিধি মুইন উদ্দিন বলেন, ‘মুসাব্বির মাহামুদ সানি শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন না। কিন্তু আন্দোলনের শেষে তারা যোগ দিয়ে সংগঠনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পিরোজপুর ছাত্র প্রতিনিধি শাহনেওয়াজ অভি বলেন, ‘সানি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের আশ্রয় দিচ্ছে। আমরা যারা শুরু থেকে ছাত্র আন্দোলন করছি তাদেরকে নাগরিক কমিটিতে না রেখেই তারা নিজেরা মিলে এ কমিটি ঘোষণা করে। আজ তারা জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র নিয়ে মাত্র ৪০০ লিফলেট আমাদের দেয়। বাকি লিফলেট তাদের কাছে রেখে দেয়।’
এদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে জাতীয় নাগরিক কমিটির ১নং সদস্য মুসাব্বির মাহামুদ সানি বলেন, ‘তারা ৭-৮ জন সবসময় বিরোধিতা করে আসছে। তারা সাতজনে সাতটি গ্রুপ। তারা গ্রুপিং তৈরি করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে।’
এ বিষয়ে পিরোজপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সোবহান বলেন, ‘লিফলেট বিতরণকে কেন্দ্র করে দুপুরে দুই পক্ষের কথা-কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে পিরোজপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের মতবিনিময় সভায় পিরোজপুরের জেলা শাখার কমিটি নিয়ে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হয়। এরপর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায়। একটি গ্রুপ জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং অন্য একটি গ্রুপ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া শুরু করে।