জমি-জমা বিরোধ নিয়ে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় দুইজন বিএনপি নেতার নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামীলীগ কর্মী হারুন-অর-রশিদ গংদের হামলায় ভাতিজা বিএনপি কর্মী মো. সোহরাব হোসেন মন্ডলকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। বর্তমানে সে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে মৃত্যু শয্যায় রয়েছে। এ ঘটনায় সলঙ্গা থানায় মামলা হয়েছে। প্রভাবশালী বিএনপি নেতাদের মদদে আওয়ামীলীগের কর্মীরা বিএনপি কর্মীর উপর হামলা চালিয়ে গুরুত্বর আহত করায় স্থানীয়দের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ও বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন। আহত সোহরাব আলী সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের বুজরত আলী মন্ডলের ছেলে।
সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুত্বর আহত মো. সোহরাব হোসেন মন্ডল জানান, চাচা হারুন-অর-রশিদসহ আরো দুই চাচা এবং আমি ১৬ শতক জায়গা ক্রয় করি। জমিতে আমার অংশের অবস্থান দক্ষিন পাশে। সে সুবাধে বিগত সময়ে আমি ওই জমিতে ঘর তুলতে গেলে আওয়ামীলীগের একনিষ্ঠ কর্মী আমার চাচা হারুন অর-রশিদ, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মতিন ও ইব্রাহীমের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের লোকজন নিয়ে ঘর ভেঙ্গে দেয়া হয় এবং পরিবারের লোকজনকে মারপিট করে আহত করা হয়। এরপর থেকে ভয়ে আর জমিতে যেতে পারি নাই। গত বছর ৫ আগষ্ট পট পরিবর্তনের পর আমি আমার জায়গায় ঘর তুলতে যাই। একটি ঘর পুরোপুরি কমপ্লিট করা হয়। এ অবস্থায় গত বছরের ৩১ অক্টোবর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আম্বিয়া ও সলঙ্গা থানা যুবদলের যুগ্ম আমজাদ হোসেন টাকার বিনিমিয়ে আওয়ামীলীগের হারুন-অর-রশিদের পক্ষ নিয়ে একদল সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমার ঘর তোলা সম্পুর্নরুপে বন্ধ করে দেন। এর দুদিন পর ১ নভেম্বর সল্গংায় থানায় জমি সংক্রান্ত বৈঠক বসে। সেখানে পুলিশ ও গোলাম আম্বিয়া ও আমজাদ হোসেন জোরপুর্বক আমাকে দক্ষিন পাশ্বের জায়গা না দিয়ে উত্তর বরাবর নিতে বলেন। কিন্তু আমি দলিল অনুযায়ী চাইলে তারা ভয়ভীতি দেখায়।
এ অবস্থায় বৈঠক স্থগিত হলে আমি কর্মস্থল ঢাকার গাজীপুরে চলে যাই। জায়গা একই অবস্থাতেই পড়ে থাকে। চলতি বছরের ২৭ জুন শুক্রবার আমি বাড়ীতে আসি। বিকেল পাঁচটার দিকে হাটতে হাটতে নতুন নির্মিত ঘরের কাছে গেলে চাচা হারুন-অর রশিদ, তার চার মেয়ের জামাতা স্বপন, সোহাগ, নুরুনবী, নুরুল ইসলাম ও হযরত আলী, চাচী ছাবিনা খাতুনসহ কয়েকজন রামদা, হাসুয়া ও রড নিয়ে আমার উপর হামলা চালায়। মাথায় কুপিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলে। সংবাদ পেয়ে আমার ছোট ভাই খালেক এগিয়ে আসলে তাকেও মারপিট করে হাত ভেঙ্গে দেয়। বর্তমানে আমরা দুজনেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছি। তিনি অভিযোগ বিএনপি নেতা গোলাম আম্বিয়া ও আমজাদ হোসেনের নেতৃত্বেই আমার ও আমার ভাইয়ের উপর হামলা করা হয়েছে। এমনকি তাদের প্রভাবের কারনেই পুলিশ আসামী ধরছে না।
আহত সোহরাবের মেয়ে সুমাইয়া খাতুন সাফিন জানান, আমার বাবাকে এমনভাবে কুপিয়েছে তাতে বাঁচার কথা নয়। মাথায় ৫-৭টি স্থানে অনন্তত ৩৫টি সেলাই দেয়া হয়েছে। বর্তমানে সে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তুমুলক শাস্তি দাবী করছি।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা গোলাম আম্বিয়া আওয়ামীলীগ কর্মী হারুন অর রশিদের কাছে টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে জানান, আমরা হারুন-অর-রশিদের পক্ষ নিয়ে যায়নি। বরং ঘটনা মিমাংসার জন্য গিয়েছিলাম।
এ বিষয়ে সলঙ্গা থানার এসআই মনোহার জানান, আসামীদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।