ময়মনসিংহে ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে নান্দাইল উপজেলায় নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। ওই কিশোরী মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। মেয়েটি রাজি না হওয়ায় গত ১ জুন তাকে তুলে নিয়ে যায়। চার মাস আটকে তাকে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে চোখ উপড়ে আহত অবস্থায় গত ৬ সেপ্টেম্বর কিশোরীকে তার বাড়ির সামনে রেখে যায়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখান থেকে কিশোরীকে ময়মনসিংহ ও পরে ঢাকার আগারগাঁও চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। গত ১৫ দিন চিকিৎসায় বাঁ চোখ বাঁচাতে ডান চোখটি ওঠানো হয়। কিন্তু অর্থাভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করতে না পেরে পরিবার মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা সঙ্গে দিয়ে দেন চোখের কর্নিয়া। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কর্নিয়াটি নিরাপত্তা ও সতেজ থাকার জন্য ফ্রিজে রাখা হয়। পরিবার অপেক্ষায় ছিল মেয়েটি সুস্থ হলে আহত চোখে কর্নিয়া স্থাপন করা যাবে। দীর্ঘ দিন যন্ত্রণার পর সোমবার কিশোরী মারা যায়।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কিশোরীর মা বলেন, ‘দমডা যাওনের আগেও আমার ধন আমারে কইছে, আম্মা আমার কাছে তার (অভিযুক্ত) চোখটা আইনা দেও। আমার দম যাওনের আগে দেইখা যাইতাম চাই। আমি এ হত্যার বিচার চাই।’
নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মেদ বলেন, ‘কিশোরী পরিবারকে সাহায্যসহ আইনি সহায়তা দিতে এসেছিলাম। এ ঘটনা নিয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলা হলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব পায়। তবে এখন ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নতুনভাবে আইনি প্রক্রিয়া করা হবে।
ময়মনসিংহ পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার বলেন, ‘এখন আমরা আমাদের মতো করে আইনি প্রক্রিয়া করব। তারপরও নিহতের পরিবার যদি থানায় হত্যা মামলা করে, সেটিও করতে পারে।’