সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজরিত রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে দর্শনার্থী দম্পতির ওপর হামলা চালিয়ে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে ঘটনার ১১দিন পর এবার কাস্টোডিয়ানসহ ১০ স্টাফের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) উপজেলার রূপপুর নতুনপাড়ার বাসিন্দা শাহনেওয়াজের স্ত্রী ছাবরিনা আক্তার সুইটি শাহজাদপুর আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান আদালতের পেশকার আনোয়ার হোসেন।
আসামীরা হলেন, কাছারিবাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান, গ্রন্থাগার পরিচালক শরীফুজ্জামান সরকার, বিদ্যুৎ ও বাগান পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, মালি শফিকুল ইসলাম, কাউন্টার ও বাগান পরিচালক মজিবুর রহমান, নিরাপত্তা প্রহরী আব্দুল মমিন, নুহ শেখ, বাবলু সরকার, আনিসুর রহমান ও রেজাউল।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ৮ জুন বাদী তার স্বামী ও ভাতিজাকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে ঘুরতে যান। প্রবেশের সময় টিকিটের টাকা দিলেও কাউন্টার থেকে কোন টোকেন দেওয়া হয়নি। বের হওয়ার সময় টোকেন দেখাতে বললে বাদী জানায় তাকে কোন টোকেন দেওয়া হয়নি। তখন আসামিরা গালিগালাজ শুরু করে। বাধা দিলে কাছারিবাড়ির গেট বন্ধ করে কাস্টোডিয়ানের নির্দেশে শাহনেওয়াজকে লোহার রড ও পাইপ দিয়ে মারধর করা হয়। ওই সময় ছাবরিনা আক্তারের শ্লীলতাহানি এবং তার গলায় থাকা সোনার চেইন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এরপর শাহনেওয়াজকে একটি কক্ষে আটকে রেখে আবারো মারধর এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ভেঙ্গে ফেলা হয়। স্বজনরা এসে তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এরপর শাহজাদপুর থানায় অভিযোগ দিলেও কোন কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দর্শনার্থীকে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে ১০জুন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসুচি পালন করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি কাছারিবাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় কিছু লোকজন কাছারিবাড়িতে হামলা চালিয়ে অডিটোরিয়াম ভাংচুর এবং স্টাফদের মারধর করে। এ ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ কাছারিবাড়িতে দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ ঘোষনা করেন। দুইদিন পর কাছারিবাড়ি আবারো খুলে দেওয়া হয়। হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ১১ জুন ১০জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনের বিরুদ্ধে শাহজাদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ইতোমধ্যে যৌথবাহিনী ও পুলিশের অভিযানে ৯জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনার তদন্তে সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।