সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৩:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
সিরাজগঞ্জে শিশু কন্যাকে হত্যার পর বস্তাবন্দী করে পালাল সৎমা শিগগিরই ‘শক্তিশালী আন্দোলন’ শুরু হবে: নাহিদ টঙ্গীতে মোবাইল ছিনতাই করতে গিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক মাহফুজকে হত্যা পুরান ঢাকায় সোহাগ হত্যা; আনসার সদস্যদের দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ সত্য নয়: আনসার ডিজি আবারও সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দিলো ডিএমপি সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আরও দুই মাস বাড়ল চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ধরতে চিরুনি অভিযান শুরু হতে পারে:স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কুড়িগ্রামকে মাদকমুক্ত করতে অভিযান চলবে-জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা  টাঙ্গাইলে ঘাটাইলের জোরদিগিতে মসজিদের নামে জমি দান করায় দানকারীর বিরুদ্ধে ৬টি মিথ্যা মামলা  বিএনপির বিরুদ্ধে  ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে  কাজিপুরে বিক্ষোভ মিশিল  

সাধারণ মানুষের কাছে সরকারের আস্থার জায়গা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ,(কেউ করেনি)

লেখক: এম.এ.জলিল রানা / ১১৪ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে সোমবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৪, ৬:১৩ অপরাহ্ন

নিত্যপণ্যের বহুমাত্রিক বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রনে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের পক্ষ থেকে কিছু কমন ডায়ালগ বলা হয়(দাম বাড়ালেই ব্যবস্থা)(আগামী উমুক তারিখ থেকে এই জিনিষের দাম নিয়ন্ত্রন করা হবে)(কৃত্তিম সংকট সৃষ্টি করলে সাড় নয়)ইত্যাদী।ফলে যা হবার তাই হয় সিন্ডিকেটের জয় হয়।বরং এ রকম প্রমান অনেক আছে যে,মন্ত্রী দাম কমার কথা বলছে,উলটা দাম বেড়ে গেছে। বিগত কোন সরকার-ই হতদরিদ্র ও সল্প আয়ের মানুষের জীবণ জীবিকা বা বেঁচে থাকার জন্য তাদের নন্যতম অধীকার নিয়ে জোড়ালো কোন পদক্ষেপ গ্রহন অথবা সুষ্ঠু কোন চিন্তা কেউ কোন দিন করেছে বলে আমার মনে হয় না।

জনগণ আছে বলেই-তো দেশ আছে।আর তাইতো দেশ ও জাতীর কল্যাণে,দেশ জাতীর সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধী এবং নিরাপদ জীবণ ধারনের লক্ষ্যে দেশের রাষ্ট্র প্রধান,সরকার প্রধান,ইউপি সদস্য থেকে মন্ত্রী পর্যন্ত জনপ্রতিনিধিবৃন্দ এবং জনগণের বহুমাত্রিক সেবার জন্য সরকার কর্তৃক নিয়েজিত ঝাড়ুদার তেকে সচিব পর্যন্ত আমলা বৃন্দ সবায় না কি জনকল্যাণে ও জনসেবায় ব্যস্ত সময় পার করেন।পালাবদলে যে দল-ই ক্ষমতায় এসেছে,বহুমাত্রিক লুটপাটে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙ্গে ফেলেছে।

অথচ ক্ষমতার পালাবদলে সরকার আসে যায়,নেতা পরিবর্তন হয়,নতুন নেতা তৈরী হয়,কিছু ভাঙ্গা গড়ার মাঝে বিরতীহিনভাবে রাষ্ট্রের সকল কার্যক্রম চলতেই থাকে।কারণ রাষ্ট্র একটি জড়বস্তু কেউ না কেউ এটাকে পরিচালনা করবেন এটাই স্বাভাবিক।কিন্তু দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রনে কেউ সিন্ডিকেট ভাংতে সক্ষম হয়নি।আসলে আমার ভাষায় সিন্ডিকেট বলে কোন শব্দ নেই,যে সরকার-ই যখন ক্ষমতায় থাকে সেই তখন বড় সিন্ডিকেট বলে আমি মনে করি, যা বিগত দিনে দেশবাশী প্রত্যক্ষ করেছে।যে কোন সরকার বাম হাতের ভেলকিবাজি বন্ধ করলেই অটোমেটিক সিন্ডিকেট বন্ধ হয়ে যাবে,চাই সদিচ্ছা।

অন্তর্বতী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরও গত দুই মাস ধরে জনগণ সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগে পড়েছে দ্রব্যমূল্য নিয়ে।মানুষকে স্বস্তি দিতে পারেনি এই পণ্যের দাম।বরং স্বল্প আয়ের মানুষের কষ্ট বাড়িয়েছে। বিগত সরকারের আমলের সেই সিন্ডিকেট ভাঙার কোনো আলামতও দৃশ্যমান নয় এখনো পর্যন্ত।অথচ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ অন্তর্বর্তী সরকারের নাকি অগ্রাধিকারে আছে।

সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছে নিত্যপণ্যের দামের চাপ সামলাতে।চাল, আটা,পেঁয়াজ,ভোজ্যতেল থেকে শুরু করে এমন কোনো নিত্যপণ্য নেই, যেখানে দামে স্বস্তি আছে।

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রনে সরকারের করনীয়:
দেশে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে অতি সাধারন ও সল্প আয়ের মানুষ যখন দিশেহারা হয়, সোসাল মিডিয়া সহ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া যখন সরব হয়ে উঠে,গণমাধ্যম কর্মীরা তখন মিডিয়া নিউজ কাভারেজে ব্যস্ত সময় পার করেন। সরকার তখন নড়ে চড়ে বসে। টক-শোতে বাজার ব্যবস্থাপনা ও বাজার সিন্ডিকেট নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। তখন বাজার উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রনে বরাবরই আমাদের দেশের বুদ্ধিজিবী,গবেষক, অর্থনীতিবিদ সহ অনেকে মতামত দিয়ে থাকেন। কেউ বলেন,নিয়মিত বাজার মনিটরিং করতে হবে,কেউ বলেন,টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে,মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে,সম্প্রতি একজন অর্থনীতিবিদ বলেছেন,ব্যবসায়ীদের সুন্দর ব্যবসার পরিবেশ প্রয়োজন ইত্যাদী।


এগুলো করেই যদি উর্ধ্বগতির বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন হতো তবে এতোদিন হয়নি কেন?এর আগেওতো উল্লেখিত বিষয়গুলো ছিল এবং আছে? ব্যবসায়ীদের ব্যবসার যদি সুন্দর পরিবেশ না থাকতো তবে তারা কোথায় ব্যবসা করছে।
মূল কথা হলো,দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রন করতে হলে দেশ পরিচালনার দায়ীত্বে যে ধরনের সরকার থাকনা কেন? (১)ব্যবসায়ীদের ওপর থেকে ক্ষমতাসীন সরকারের সরাসরি কালো হাত সরিয়ে নিতে হবে(২)বড় বড় ব্যবসায়ীদের বড় বড় পদ পদবি দিয়ে রাজনৈতিক দলে ডোনার হিসেবে ঢুকানো বন্ধ করতে হবে(৩)সাক-সবজী উৎপাদন সহ দেশের সকল নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর আমদানীকৃত সকল পণ্য ও দেশে উৎপাদীত সকল পণ্যের উৎপাদন খরচ মুণিটরিং এর মাধ্যমে ভোক্তা পর্যায় পৌছাতে কতটা হাত বদল হবে ,সেক্ষেত্রে মূল উৎপাদনকারী ও আমদানীকারক সহ কোন পর্যায় কি পরিমান মুনাফা থাকা প্রয়োজন তা সরকারকে নির্ধারণ করতে হবে(৪) বীজ, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক সহ কৃষি কাজে ব্যবহৃত যাবতীয় যন্ত্রপাতী ব্যবসায়ীদের মুনিটরিং এর আওতায় আনতে হবে।(৫) দেশে উৎপাদীত কৃষিজাত পণ্য দেশের চাহীদা পুরুণ ব্যতিরেখে রপ্তানী নিষিদ্ধ করতে হবে। (৬) চাষীদের উৎপাদীত অতিরিক্ত কৃষিজাত পণ্য সংরক্ষণে স্বাস্থ্য সন্মত,মানসস্পূর্ণ ও কৃষিবান্ধব ক্ষেত্র তৈরী করতে হবে।(৭)ব্যবসায়ী সিন্ডিকে ভাংতে অতি মুনাফা লোভীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে হলেও মোবাইল কোর্টে জরিমানার পরিবর্তে কারা দণ্ডের বিধান আনতে হবে।(৮)সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশে (টিসিবি)’র আওতায় সুবিধাভোগীদের অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে,সুবিধভোগীর পরির্তে স্বচ্ছল ব্যক্তি কার্ডধারী,ফলে পণ্য তুলে বিক্রি করছে,বঞ্চিত হচ্ছে সুবিধাবোগীরা,।এ বিষয়টিও মুনিটরিং এর আওতায় আনা প্রয়োজন।তাহলে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব এবং সাধরণ মানুষের কাছে সরকারের আস্থার জয়গাও তৈরী হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।


তবে দেশ সেবার কাণ্ডারী হতে হলে,যেহেতু জাতীয় স্বর্থে,দেশ জাতীর কল্যাণে,দেশসেবা অত্যান্ত গুড়ু ও ভারী দায়ীত্ব্। সে ক্ষেত্রে প্রকৃত দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ মানসিকতা,নীতি আদর্শ সদিচ্ছা থাকলেই এটা সম্ভব এবং থাকাটা অতীব জরুরী বলেও আমি মনে করি।

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিষ্ট জয়পুরহাট


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir