সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ৩নং ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের জোকনালা গ্রামে জমি অধিগ্রহণ না করে এলজিইডি ব্রিজের কাজ শুরু করায় এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছে ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক। আদালত মামলা গ্রহণ করে ইতিমধ্যেই ৯ জনকে নোটিশ প্রদান করেছে। আর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার জন্য ৫ জনকে ১৫ দিনের মধ্যে বিজ্ঞ আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
২০২০ সালে দুই বছর মেয়াদের প্রকল্প নিয়ে বেলকুচির জোকনালায় ব্রীজের কাজ শুরু করে বেলকুচি উপজেলা এলজিইডি। প্রকল্পের শুরুতেই একজন জমির মালিক সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তার জমির অধিগ্রহণ না করে ব্রীজের কাজ চলছে এমন অভিযোগ নিয়ে ঘুরলেও কোনো পাত্তা দেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সবশেষ বাধ্য হয়ে চলতি (জুলাই) মাসে আদালতে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী , ও বেলকুচি উপজেলার প্রকৌশলী সহ ৯ জনকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করে। উল্লেখ্য এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, অতিরিক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী (রাজশাহী বিভাগ), নির্বাহী প্রকৌশলী (এলজিইডি, সিরাজগঞ্জ), উপজেলা প্রকৌশলী (বেলকুচি), প্রকল্প ঠিকাদার জহুরুল ইসলাম, ডেপুটি কমিশনার (সিরাজগঞ্জ), ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা (জেলা প্রশাসকের কার্যালয়), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (বেলকুচি), সহকারী কমিশনার (ভূমি), বেলকুচি মোট ৯ জনকে বিবাদী হিসেবে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার বাদী ক্ষতিগ্রস্থ ভূমির মালিক ভজন কুমার সরকার জানান, পৈত্রিক সম্পত্তির অংশ হিসেবে জোকনালায় ২৮ শতাংশ জমি পান ভজন কুমার সরকার। আর এ জমির আয় দিয়েই চলে সংসার আর পড়াশোনা। কিন্তু ব্রীজ তৈরির কারনে ৫ শতাংশ জমি চলে যায় ব্রীজের আওতায়। আর তাতেই নিজের পড়াশোনা আর সংসারের খরচ যোগান দেয়া নিয়ে শংকায় পড়েন ভূমি মালিক।
এ বিষয়ে প্রতিবেদক বেলকুচি উপজেলা প্রকৌশলী কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন কিছুই অবগত নন এবং জানাতে অস্বীকৃতি জানান। সেইসাথে বেলকুচি উপজেলা প্রকৌশলী প্রতিবেদকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এইরকম ঘটনা তিনি প্রায়ই স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে করেন বলে জানা যায়। এজন্য স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে। পরবর্তীতে জেলার এল জি ইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান প্রতিবেদককে সঙ্গে বিস্তারিত ঘটনা তুলে ধরেন।
এদিকে স্থানীয় জমি মালিকদের অভিযোগ নিজের কেনা জমি গ্রাম্য প্রধান, বিভিন্ন সরকারি অফিসের বড় কর্তাদের অনুরোধ বা আদেশের কারনে বাধ্য হয়ে অনেক সময় দিতে হয়। আর তাতে অধিকাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হলেও সমাধান পাবার জায়গা না পেয়ে নিস্ব হতেই বাধ্য হন।
মামলার কৌশুলী অ্যাডভোকেট নিখিল ঘোষ জানান, সরকার উন্নয়নের জন্য যে কোনো জমিই অধিগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু এই জমিতে কোনো নিয়মই মানেনি কর্মকর্তারা। তাই বাধ্য হয়েই মামলা করেছেন বাদী।
এ বিষয়ে এলজিইডির সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, কাজের শুরুতে কোনো জমির মালিকই আপত্তি তোলেনি। তাই মাঝ পথে এমন জটিলতা তৈরি হয়েছে। তবে নিরসনের জন্য চেষ্টাও চলছে।
প্রসঙ্গত, বেলকুচির জোকনালার এই ব্রীজ দিয়ে ৬টি গ্রামের অন্তত ১৫ হাজার মানুষ চলাচল করবে। ক্ষতিগ্রস্থ্য মানুষেরা সরকারের সহায়তা পাবে এমনটাই প্রত্যাশা করছে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়দের।