শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:০২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ
বিজয় দিবস উপলক্ষে ৫ বন্দির সাজা মওকুফ, মুক্তি শিগগির মা-মেয়েকে হত্যার পর যেখানে আত্মগোপনে ছিলেন গৃহকর্মী, স্বামী আটক কোনো ঘটনাকেই তুচ্ছ বিবেচনা করার সুযোগ নেই: র‌্যাব মুখপাত্র সাবেক ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল কাগজ তৈরি করে পুকুর খনন,ব্যবসায়ীকে জরিমানা বেগম রোকেয়া দিবসে অদম্য ৫ নারীকে সম্মাননা প্রদান বিএনপি সমর্থিতদের ৩৮ দোকান বন্ধ করে দিলো জামায়াত নেতাকর্মীরা সিরাজগঞ্জে জামায়াত প্রার্থীর গাড়িবহরে বিএনপি’র হামলা, আহত ১৫ এনায়েতপুরে বিএনপির মহিলা সমাবেশ খালেদা জিয়ার এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স ফ্লাইটকে ‘ভিভিআইপি মুভমেন্ট’ ঘোষণা ভারতেই থাকবেন কি না, সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাই নেবেন: এস জয়শঙ্কর
নোটিশ:
তথ্য ও প্রচার মন্ত্রণালয় নিবন্ধনকৃত অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্য পিপলস্ নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকে সারা দেশে জেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হবে। মোবাইল: ০১৭১১-১১৬২৫৭, ০১৭১২-৪০৭২৮২ ' ই-মেইল : thepeopelesnews24@gmail.com

উল্লাপাড়া আসনে মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবী-তৃনমুল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও হতাশা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ / ৭৫৬ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫

সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে নেতাকর্মীদের চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বয়োবৃদ্ধ এম. আকবর আলীর নাম ঘোষনার পর থেকে দলের অধিকাংশ নেতাকর্মীদের চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিএনপি-ছাত্রদল-যুবদল ও সহযোগী সংগঠনের পদধারী নেতারা মনোনয়ন পরিবর্তনপুর্বক নির্যাতিত নেতা উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আজাদ হোসেন বা অন্যকোন ত্যাগী নেতাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার জন্য লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছেন।

উল্লাপাড়া পৌর বিএনপির সাবেক আহবায়ক আব্দুর রাজ্জাকসহ একাধিক বিএনপি নেতা জানান, বিগত ১৬বছর এম. আকবর আলী মাঠে ছিলেন না। কোন আন্দোলন সংগ্রামে অংশ গ্রহন করেন নাই। নির্যাতিত ও জেল খাটা কোন নেতাকর্মীর খোজ নেয়নি। তিনি ৫ আগষ্টের পর মাঠে নামেন। এঅবস্থায় এম. আকবর আলীকে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষনা করায় উল্লাপাড়ার তৃনমুল বিএনপির নেতাকর্মীরা হতাশ এবং হতভম্ব। অন্যদিকে আজাদ হোসেনসহ অন্যান্য প্রার্থীরা দীর্ঘ ১৬ বছর মাঠে থেকে রাজনীতি করেছে। আজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ১৬ বছর মামলা হয়েছে ৪১টি মামলা হয়েছে। তিনি বহুবার জেল খেটেছেন। জনপ্রিয়তার দিকেই তিনি শীর্ষ অবস্থানে রয়েছেন। তিনি প্রতিটি কর্মীর পাশে পাশে ছিলেন। আমরা তারেক রহমানের কাছে দলের স্বার্থে এবং আসনটিতে বিজয়ের স্বার্থে আজাদ হোসেন অথবা ত্যাগী অন্য নেতাকে মনোয়ন দেয়ার দাবী করছি।
উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব নিক্সন কুমার আমিনসহ একাধিক যুবদল নেতা জানান, এম. আকবর আলী মনোয়ন পাবার পর যুবদলের কর্মীরা নিস্ক্রিয় রয়েছে। নির্বাচনী কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে রয়েছে। যুবদলের নেতাকর্মীরা আন্দোলন সংগ্রাম করে উল্লাপাড়া রাজনীতি সক্রিয় রেখেছিল। কিন্তু যখনই ত্যাগী নেতা মনোয়ন পায়নি তখনই সবাই নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, অবস্থা এমন যুবদলের সদস্য সচিব হয়ে আকবর আলীর সাথে দেখা করতে তার আশপাশের হাইব্রিড বিএনপির অনুমতি নিতে হয়। এ অবস্থায় নির্বাচন হলে উল্লাপাড়া আসনে বিএনপির ভরাডুবি নিশ্চিত। আমরা যুবদলের পক্ষ থেকে বিগত ১৬ বছর আন্দোলন সংগ্রামে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন সেই আজাদ হোসেন বা অন্যকোন মাঠের ত্যাগী নেতাকে মনোনয়ন দেয়ার দাবী জানাচ্ছি। একই সাথে ত্যাগী নেতা মনোনয়ন পেলে সকলেই স্বত:স্ফুর্তভাবে মাঠে নামবে এবং ধানের শীষকে বিজয়ী করবে।

উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক রেসাদ করিম নয়নসহ একাধিক ছাত্রদল নেতা জানান, আজাদ হোসেনের বাবা সরাফত আলী উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ছিলেন। আজাদ হোসেন ১৯৮৭-১৯৯১ পর্যন্ত উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯২-১৯৯৮ সাল পর্যন্ত উপজেলা যুবদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।  ১৯৯৮-২০০১ পর্যন্ত উল্লাপাড়া পৌর বিএনপির আহবায়ক দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯-২০১৫ পর্যন্ত উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক এবং ২০১৫ থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। তার মতো ত্যাগী নেতা মনোয়ন না পাওয়ায় সবাই হতাশ। যে কারনে ছাত্রদলের কোন নেতাকর্মী এখনো মাঠে নামেনি। আমরা মনোয়ন পরিবর্তন পুর্বক আজাদ হোসেনকে মনোয়ন দেয়ার দাবী করছি। তিনি মনোয়ন পেলে ছাত্রদল মাঠে নেমে এই আসনে জামায়াতের হেভিওয়েট প্রার্থী কেন্দ্রীয় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল রফিকুল ইসলাম খানকে পরাজিত করা সম্ভব হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারন সম্পাদক মো. মনতাজ আলীসহ একাধিক শ্রমিক জানান, বিগত ১৬বছর আজাদ হোসেন শ্রমিকদলের নেতাকর্মীদের দু:খে পাশে ছিলেন। আর আকবর আলীকে আমরা কখনো পাশে পাইনি। তাই আমরা এম. আকবর আলীর পক্ষে কাজ করব না। মনোয়ন পরিবর্তন করে আজাদ হোসেনকে দিলে শ্রমিকদল মাঠে নেমে কাজ করে ধানের শীষকে বিজয় করবে। আমরা ধানের শীষের বিজয়ের স্বার্থে আকবর আলীর মনোনয়ন বাতিল করে আজাদ হোসেনকে মনোয়ন দেয়ার দাবী জানাচ্ছি।

উপজেলা তাঁতীদলের সভাপতি ইউসুফ আলীসহ একাধিক নেতাকর্মী জানান, যিনি মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি এখনো তাঁতী দলকে নির্বাচনী মাঠে নামার জন্য ডাকেননি। এ কারনে আমরা নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে আছি। আর ডাকবেই বা কেন? তিনি তো ১৬ বছর মাঠে ছিলেন না। তাই ত্যাগী নেতাকর্মীদের তিনি চেনে না। এ জন্য আমরা তাঁতীদলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন পরিবর্তন চাই। যারা ১৬ বছর মাঠে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের মধ্যে থেকে কাউকে যেন মনোন দেয়া হয়।

জেলা স্বেচ্ছাবেকদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল ইসলাম বাবলু জানান, দলের ভাবমুর্তি খারাপ হবে বলে মনোনয়ন পরিবর্তন জন্য মিছিল-সমাবেশ করা হয়নি। এম. আকবর আলী মনোয়ন পাওয়ায় তৃনমুলের নেতাকর্মী এমনকি সাধারন মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাদের বুকফাটা আহাজারি-দল কেন এমন করল? ত্যাগী নেতাকে মনোনয়ন না দিয়ে কেন এমন একজন বয়োবৃদ্ধ এবং মাঠ ছেড়ে ১৬ বছর পালিয়ে থাকা ব্যক্তিকে মনোয়ন দিলো?  তিনি জানান, উল্লাপাড়ায় বিএনপির প্রার্থী যাকে করা হয়েছে তিনি ৯৫ বছর বয়সের একজন বৃদ্ধ। তার চলাফেরা করতেই কস্ট। তিনি ২০০৮ সালের নির্বাচনে জামানত হারিয়েছেন। ২০০১ সালে এম. আকবর আলীর ভুলের কারনে পুর্নিমা ধর্ষন মামলা হয়েছিল। যার কারনে দেশ-বিদেশে বিএনপির ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে এবং বিনাপরাধী নেতাকর্মীরা সাজা ভোগ করছে। এমন একজন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়ায় দলের ত্যাগী কর্মীদের চাপা কান্না বিরাজ করছে।

আসনটিতে উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আজাদ হোসেন ছাড়াওউপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক আব্দুল জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এড. সিমকী ইমাম, জেলা বিএনপির সহসভাপতি কে.এম শরফুদ্দীন মঞ্জুও প্রার্থী ছিলেন।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও মনোনয়ন প্রত্যাশী আজাদ হোসেন জানান, ১৬ বছর মাঠ থেকে দুরে থাকা বয়োবৃদ্ধ একজন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়ায় নেতাকর্মীরা হতাশ। দ্রুত মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবী জানা তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর