রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৬:২০ অপরাহ্ন

মেয়েকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বাবাকে হাতুড়ি পেটা

রিপোর্টারের নাম / ২৪২ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে শনিবার, ২০ মে, ২০২৩, ৪:২৭ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
স্কুলছাত্রীকে ইভটিজিং ও তুলে নেয়ার প্রতিবাদ করায় ওই ছাত্রীর বাবাকে চাইনিজ কুড়াল ও হাতুড়িপেটা করে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতির ভাতিজা সবুজ খানের বিরুদ্ধে।

হামলায় আহত ওই ছাত্রীর বাবা জাকারিয়ার মাথায় ১২টি সেলাই পড়েছে। ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে মেয়ের বাবা।

শনিবার (২০ মে) দুপুরে সয়দাবাদ ইউনিয়নের জারিলা গ্রামে সরেজমিন গেলে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

আহত জাকারিয়ার শ্বাশুড়ী রোকেয়া খাতুন বলেন, আমার নাতনী স্থানীয় স্কুলের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী। প্রায় ১ বছর ধরে স্কুল ও রাস্তায় বের হলে তাকে
উত্যক্ত করে একই গ্রামের মালেশিয়া প্রবাসীর আব্দুল কাদেরের ছেলে সবুজ খান। ইভটিজিংয়ের বিষয়টি সবুজের পরিবারকে বার বার অবগত করা হয়। একারণে সবুজ খিপ্ত হয়ে গত (১৭ মে) বুধবার দুপুরে সবুজ খান, রিপন, শুভ ও ইমন চাইনিজ কুড়াল ও হাতুরি দিয়ে জাকারিয়ার উপরে অর্তকিত হামলা চালায়।

এসময় হাতুরি ও রড় দিয়ে তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারি ভাবে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা জাকারিয়াকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে জাকারিয়ার মাথায় ১২টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। পরে জাকারিয়ার অবস্থা আশঙ্কজন হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। বর্তমানে জাকারিয়া মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

স্কুল ছাত্রী বলেন, স্কুলে যাওয়ার সময় অভিযুক্তরা প্রতিদিনই আমাকে ইভটিজিং করতো। তুলে নিয়ে যাবার হুমকি দিতো। বিষয়টি আমার পরিবারকে জানালে আমার বাবা এর প্রতিবাদ করতে গেলে বাবাকে হাতুড়ি ও চাইনিজ কুড়াল ও রড় দিয়ে
পিটিয়ে আহত করেছে। তিনি আরও বলেন, এর আগেও সবুজ খান স্থানীয় পোড়াবাড়ী স্কুলের এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করার সময় ওই স্কুলের এক শিক্ষক প্রতিবাদ করলে তাকেও সবুজ মারপিট করেছিল। পরে ঐ শিক্ষক সবুজের নামে একটি মামলা করেছে।

অভিযুক্ত সবুজ খানের চাচা গোলবার খান বলেন, স্কুলে যাওয়ার সময় আমার ভাতিজাকে জাকারিয়া মারপিট করেছিলো। বিষয়টি এলাকার মুরুব্বিদের জানানো হয়েছে। পরে ভাতিজা সবুজ খিপ্ত হয়ে তার বন্ধুদের সাথে নিয়ে জাকারিয়াকে মারপিট করেছে। বর্তমানে ভাজিতাসহ বন্ধুরা বাড়ির বাহিরে আছে।

সয়দাবাদ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সুমন বাবু বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। মারপিটের পরে হাসপাতালে গিয়ে আহত জাকারিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছি। রোগীর পরিবারের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি বর্তমানে জাকারিয়ার অবস্থা ভালো না। কান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে।

এ বিষয়ে সয়দাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম রাজা বলেন, মারপিটের বিষয়টি শুনেছি। ঘটনাটি এলাকায় বসে মিমাংসা করে নেওয়ার জন্য উভয়পক্ষকে বলা হয়েছে।

ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হওয়ায় আপনার ভাতিজা এলাকায় ইভটিজিংসহ নানা
অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে সাইদুল ইসলাম রাজা বলেন, বিষয়টি আসলে তা নয়। উঠতি বয়সের ছেলেরা একটু এরকমই হয়। এধরনের কাজের সঙ্গে আমার ভাতিজারা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সয়দাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমাকে অবগত
করেছে। আমি আহত জাকারিয়াকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য বলা হয়েছে। জাকারিয়া সুস্থ্য হলে দুপক্ষের মুরুব্বীদের সাথে নিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করে নেওয়ার কথা বলেছি। সেই সঙ্গে এর উপযুক্ত বিচারও দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক দ্রুত
ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir