বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন

মাতৃভূমির পবিত্রতা রক্ষা ও দেশ-জাতীর কল্যাণে হাসিনাসহ সকল অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত সময়ের দাবি।

এম.এ.জলিল রানা / ২৭৩ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ৯:০৩ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের একজন সর্বোচ্চ নেতা এবং ক্ষমতায় থাকাকালীন ছিলেন একজন সরকার প্রধান,মানে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর কর্তাব্যক্তি। শুধু তাই-ই নয়,(বিশ্ব নেতারা তাকে সার্টিফিকেট দিয়েছেন, তিনি বিশ্বের ক্ষমতাধরদের মধ্যে একজন,এশিয়া মহাদেশের মধ্যে লৌহমানব এবং পৃথিবীর তৃতীয় সৎ ব্যক্তি। এছাড়াও তিনি নিজেই বলতেন,তিনি নামাজ কায়েম করেন,তাহাজ্জুদ আদায় করেন এবং কুরআন তেলায়াত করেন। তার দলের লোকদের মুখে বলতে শুনেছি যে,তাদের নেত্রী এতোটায় ভালো, যে কারণে হাসিনার নামের আগে হযরত আর শেষে (রা:) লিখা নাকি জরুরী।

শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথম ক্ষমতায় আসার আগে দেশব্যাপী সফরের মধ্যদিয়ে পথসভা করে বেড়িয়েছে। আমি নিজে (লেখক)দু’একটি পথসভায় বলতে শুনেছি,(আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠান আমি আমার স্বপরিবার হত্যার প্রতিশোধ নিতে চাই। সাথে সাথেই পথসভায় উপস্থিত জনতার মুখে বলতে শুনেছি যে,যে মহিলা ক্ষমতায় না যেতেই প্রতিশোধ নিতে ব্যস্ত, সে কোন দিন ভালো হতে পারে না, সে সুবিধার নয়। এ মহিলার কাছে দেশ জাতী নিরাপদ নয়। ওই লোকগুলো কোন দলের বা মতের এটা বড় বিষয় নয়, বিবেচ্য বিষয় হলো তারা যা বলেছে তা একশ একশ সত্য।(সর্ব শেষ ২০২৪ সালের জুলাই-আগষ্ট তার জ্বলন্ত উদাহরণ)।

শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম মেয়াদকাল (১৯৯৬-২০০১)আর বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবে (২০০১-২০০৮) প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদকাল (২০০৯-২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট পালিয়ে যাবার আগ মূহুুর্ত পর্যন্ত)। যার এতো ক্ষমতা,পদ-পদবী,দেশি-বিদেশি যার এতো অ্যাওয়ার্ড,যার সুখ-শান্তী আরাম-আয়েশ ও বিলাসিতার কোন ধরনের অভাব নেই। অথচ প্রথম ক্ষমতায় এসেই বিশ্বালোচিত ও হৃদয় বিদারক পিলখানা হত্যাযজ্ঞের মধ্যেদিয়ে তার অপরাধ জগতে উত্থান। এরপর শাপলা চত্বর হত্যাযজ্ঞ,সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ড,গণভবনে আলোচিত ‘আয়না ঘর’ ডিবি অফিসেও আয়না ঘর,সব শেষ ২০২৪ সালের জুলাই-আগষ্ট নজিরবিহীন তান্ডবলিলাসহ বহুমাত্রিক গুম-খুন করেও ক্ষান্ত হয়নি হাসিনা। শেয়ার বাজার লুট,ব্যাংক ডাকাতি,প্লট লুট,পল্ট্রি ও ডিমের বাজার লুট,টেন্ডারবাজি পিঁয়াজসহ নিত্য পণ্যের বাজার হরিলুট,বহুজাতীয় শিল্প কারখায় কালো থাবা,নিয়োগ বাণিজ্য-বদলি বাণিজ্য,এক কথায় গোটা দেশ যেন ত্রাসের রাজত্ব আর বহুতাত্রিক অপরাধের অভয়াশ্রমের মধ্যদিয়ে দেশ ধ্বংশ করেও শান্ত হয়নি হাসিনা। তার দীর্ঘ শাসনামলে জনসাধারণ মুখ খুলতে পারেনি,বিরোধী দলের নেতা কর্মীরা বাড়িতে ঘুমাতে পারেনি,যুবকরা দাড়ি রাখতে ভয় পেয়েছে,তার পেটুয়া বাহিনীর অত্যাচারে অনেকে দাড়ি কেটেফেলেছে,আবার বলতে শোনা গেছে যে দাড়ি-টুপি দেখলেই নাকি মৌলবাদের গন্ধ পাওয়া যায়।
(হাওয়ায় ভসিয়ে চলে আমেরিকা এশিয়া,
এ খবর কানে আসে বেতারেতে ভাসিয়া।
হাসিনা যাহা বলে ভারতে বসিয়া,
বাংলাদেশে তাহা উঠে ডিসপ্লে বোর্ডে ভাসিয়া)।

দেশবাসী ভূলে গেলে চলবেনা, হাসিনা পালিয়ে গেলেও দেশে তার এজেন্ট বসিয়ে রেখেছে। ফলে মাঝে মধ্যেই হুটহাট করে হাসিনা এবং আ-লীগ এর আসল চরিত্র ডিসপ্লে বোর্ডে ভেসে উঠছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে,ঢাকার গেন্ডারিয়া (দক্ষিণ) কার্যালয়ের ভবনে লাগানো মাদক প্রতিরোধক ডিসপ্লে বোর্ডে ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে’লেখা ভেসে উঠেছে। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডে ভেসে ওঠে ‘বাংলাদেশ আ- লীগ’ লেখা’মসজিদের স্ক্রিনে ভেসে উঠলো ‘আ-লীগ ফিরবে, জয় বাংলা’কমলাপুর স্টেশনের স্ক্রিনে লেখা ‘আ-লীগ জিন্দাবাদ’)সংশ্লিষ্টদের ধারণা, ভবনটির ভেতরের কারোর সঙ্গে যোগসাজশে না থাকলে পেনড্রাইভ পরিবর্তন করা সম্ভব না। এ কাজটি যারা করেছে তারা আ- লীগের দোসর বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সন্দেহ করছে।(স্কুলের বোর্ডে ভেসে উঠলো ‘আ-লীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে’ স্ক্রিনে আ-লীগ ফেরার স্ক্রল, হাসপাতালে ভাঙচুর-লুটপাট) এছাড়া এর আগেও কমলাপুর ও খুলনা রেল স্টেশনসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় সরকারি অফিস কিংবা অধিদপ্তরের এ ধরনের ডিসপ্লে বোর্ডে ছাত্রলীগের স্লোগান ভেসে ওঠার অভিযোগ রয়েছে। নোয়াখালী ও ফেনীতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।সর্বপরি মনে রাখা প্রয়োজন, বিভিন্ন স্থানে ডিসপ্লে বোর্ডে ভেসে উঠা আ-লীগ,ছাত্রলীগের ভয়ংকর রুপে ফিরে আসার অশুনির সংকেত এটা কিশের আলামত? নিশ্চয় এটা দেশ জাতী তথা মাতৃভূমির জন্য শুভকর নয়।

মাতৃভূমির পবিত্রতা রক্ষা ও দেশ-জাতীর কল্যাণে আগামীর সুখী,সুন্দর,সমৃদ্ধ,পরিচ্ছন্ন এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে হাসিনাসহ আ-লীগের সকল অপরাধী,প্রশাসনের ভেতরে থাকা সব অপরাধী এবং সকল দলে আশ্রিত ও লালিত-পালিত প্রকৃত সব অপরাধীদের যত দ্রুত সম্ভব বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।কারণ প্রকৃত অপরাধরিা যে দলের বা মতের হোক না কেন? এরা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং দেশ জাতীর সামগ্রীক কল্যাণের জন্য আত্বঘাতী বলে আমি মনে করি।

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিষ্ট:


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir