বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:২৮ পূর্বাহ্ন

দেশের প্রকৃত অর্থনৈতিক সংকট,ও মূল্যস্ফীতি উত্তরণের উপায় কোথায়?

এম.এ.জলিল রানা / ৯৩ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ৭:৫১ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি



পুঁথিগতভাবে যদিও অর্থনীতির প্রকৃত অর্থনৈতিক সমিক্ষা সাধারণ মানুষতো দূরের কথা অনেকেই বুঝেননা,তথাপিও প্রতিদিন এ বিষয় নিয়ে অর্থনীতিবিদদের অনেক গুরুগামভীর্য ও ভারী ভারী কথা এবং অর্থনীতির সামগ্রীক বিষয় নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সংবাদ প্রকাশ চলমান। কে বুঝলো আর বুঝলো না?লেখার কারণে বাজারে কি প্রভাব পড়বে বা পরছে না? এটা কোন বিষয় নয়।এটা আসলে কাজ হওয়ার জন্য করা নয়, কাজের জন্য কাজ করা।

এটা অবশ্যই অনস্বীকার্য যে, দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভাঙ্গা গড়া চলছে। তবে ৪-৫ বছরের বৈশ্বিক ঘটনাপ্রবাহ উল্লেখিত পরিস্থিতির জন্য কিছুটা হলেও দায়ী। যেমন কোভিড-১৯ করোনা মহামারি-অতিমারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই, বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিকেও যে থামিয়ে দিয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু আজকের এই বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকটের কথা সবাই বলছে,এর কারণ কিন্তু মূলত দেশের অভ্যন্তরীণ।

বর্তমানে দেশে যে অবস্থা তৈরী হয়েছে,এর কারণ হলো অতীতের দিনগুলোতে রাষ্ট্রের সব অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ও বিধিনিষেধ ভঙ্গ করা হয়েছে,জবাবদেহিতার সব কাঠামো ধ্বংশ করা হয়েছে, সব ধরনের অর্থনৈতিক ও অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করা হয়েছে এক কথায় বলতে গেলে , সার্বিক এক অর্থনৈতিক স্বেচ্ছাচারিতা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আজকের এই সংকটে ফেলে দিয়েছে।

ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় সংকট, খেলাপী ঋণ, অর্থ পাচার এবং বাংলাদেশ অর্থনীতিতে সীমাহিন দুর্নীতির কারণে বিরাট এক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার জন্ম দিয়েছে। অতীত অর্থনীতিতে উদ্ভূত বিশাল এবং সু-গভীর বহু সমস্যা বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্র কাঠামোর কাছে দায়বদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইতোমধ্যে কিছু কিছু বিষয়ে কিছুটা হলেও উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।সে ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে যেমন, বাইরে থেকে অর্থের প্রবাহ বেড়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের উন্নতি হয়েছে, সম্পদ সাময়ীকভাবে পাচার বন্ধ হয়েছে। ব্যাংকিং সেক্টরে যেসব ব্যাংক ভেঙে পড়েছে, তাদের পুনর্গঠনে সহায়তা দেওয়া হয়েছে, ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদগুলো ঢেলে সাজানো হয়েছে। অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বেশকিছু ব্যবস্থাও গ্রহন করা হয়েছে।

এতকিছুর পরেও, আজ বাংলাদেশের অর্থনীতি বহুমাত্রিক সমস্যায় জর্জরিত। যার মূলেই রয়েছে মূল্যস্ফীতি, যা জনজীবণকে অসহনীয় করে তুলেছে। দীর্ঘ সময় ধরে দেশের মানুষ বাজার সিন্ডিকেট নামক এক শ্রেণীর মানুষের নানান অজুহাতে উচ্চমূল্যের শিকার। অথচ এর সাথে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির আদৌ কোন সংযোগ নেই।

উন্নত বিশ্বের যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতির হার-২ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে-৩ এবং ক্যানাডায় ১ শতাংশ। বলতে গেলে সব দেশই কোভিড-১৯-সম্পর্কিত এবং ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পৃক্ততায় উচ্চমূল্য কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তান ব্যতিত অন্য সব দেশের মূল্যস্ফীতিই বাংলাদেশের চেয়ে কম।

দু-বছর আগের সংকট কাটিয়ে শ্রীলঙ্কা তার ৭০ শতাংশ মূল্যস্ফীতিকে বর্তমান সময়ে ১ শতাংশের নিচে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। অথচ মূল্যহ্রাস হয়নি বাংলাদেশে ।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ধীর গতি নিয়ে অনেকেই বলছেন যে, আমাদের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এখনো তার আগের জায়গায় যেতে পারেনি। তেমনিভাবে,এখনো স্বাভাবিক পর্যায় পৌঁছায়নি পোশাক শিল্পখাতের উৎপাদন।

অপরদিকে অন্যান্য শিল্পখাতেও উৎপাদন হ্রাস এখনো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। এ সবকিছুই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলছে।আবার প্রবৃদ্ধিকে ক্ষয় করছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি।

পাশাপাশী দেশে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যাও একদিকে যেমন জীবন ও জীবিকার বিনষ্ট করেছে, তেমনিভাবে সম্পদের ক্ষতি সাধনও করেছে,অন্যদিকে বিপদগ্রস্ত বা আক্রান্ত অঞ্চলের উৎপাদন কাঠামোও নষ্ট করেছে। যদিও প্রবৃদ্ধির ওপর বন্যার অর্থনৈতিক প্রভাব এখন পর্যন্ত নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি, তথাপিও দেশের বিস্তৃত অঞ্চলে বন্যার প্রভাব যে ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে,বা ফেলতে পারে এতে কোন সন্দেহ নেই।

সবাই বলছে যে, বন্যার কারণে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর দাম বাড়তে পারে। নিশ্চয়ই বন্যায় আক্রন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে নানান জিনিসের দাম বাড়বে। কিন্তু যখন পণ্য উৎপাদন হয় এমন অঞ্চলেও অন্যান্য জায়গার মতো জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়, তখন আসলে বাজার নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কারণটাতো থাকেই যায় ।

অর্থনৈতিক ধীর গতি যে শুধু দেশের উৎপাদন খাতের ওপরেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বিষয়টি এমন নয়, বরং তা দেশের সামাজিক খাতকেও প্রভাবিত করে। যেমন, শিক্ষা,স্বাস্থ্য ইত্যাদী জায়গায়তেও বিনিয়োগ কমে আসতে পারে,কারণ সম্পদের সল্পতা থাকে।

আবার দেশর অর্থনীতির কোনো খাতে অর্থনৈতিক ধীর গতি সবচেয়ে বেশি আঘাত হানছে, তার ওপর নির্ভর করবে এ গতির সামগ্রিক প্রতিক্রিয়া। বিগত সময়গুলোতে শিল্পখাতে কর্ম শূন্য প্রবৃদ্ধি দৃশ্যমান হয়েছে, কিন্ত সেখানে খাতের প্রবৃদ্ধির সাথে নিয়োজনের প্রবৃদ্ধি দৃশ্যমান হয়নি।

এ অবস্থায় শিল্পখাতের উৎপাদন কমে গেলেও হয়তো বা কর্মনিয়োজন তেমন একটা কমবে না বলে মনে হয়,তবে সেবা খাতের কর্মকাণ্ড হ্রাস পেলে জনসাধারণের কর্মনিয়োজন এবং আয়ের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়তে পারে। যেহেতু নানাবিধ অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বিদ্যমান, সেহেতু দেশী ও বিদেশি কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ বাংলাদেশর অর্থনীতিতে অনুপ্রবেশ করছে না। আবার দেশের ব্যাংকিং খাতও যে খুব একটা ভালো অবস্থানে আছে ,ঠিক তাও না। এর ফলে প্রবৃদ্ধির সুযোগ কমে এসেছে।

বাস্তবতার নিরিখে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কিছু প্রাক্কলন করা হয়েছে।আর বিশ্বব্যাংক অতি সম্প্রতি সম্ভাব্য আভাস দিয়েছেন যে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৪.১ শতাংশ হতে পারে। এর আগে একই অর্থবছরের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি)সংশ্লিষ্ট প্রাক্কলিত সংখ্যা ছিল ৫.১ শতাংশ।

এসব তথ্য-উপাত্ত থেকে যে দুটি বিষয় খুবি স্পষ্ট তাহলো: এক, মূলত প্রাক্কলিত প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতারই প্রতিফলন,আর দুই,যদিও প্রপ্য তথ্য-উপাত্তের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, কিন্তু বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক উভয়-ই তাদের পূর্ব প্রাক্কলিত উপাত্তকে কমিয়ে এনেছে।

দেশের অর্থনৈতিক অঙ্গনে আয় ও সম্পদের অসমতা সর্বজনস্বীকৃত। খেলাপি ঋণ কিংবা অর্থপাচারের দিকে তাকালেই বোঝা যায় যে, অর্থ-বিত্ত মাত্র গুটিকয়েক মানুষ এবং পরিবারের হাতে কুক্ষিগত।যদি মোটা অংকের উপাত্তের দিকে নজর দেই,তাহলে দেখা যায় আয়ের মাপকাঠিতে বাংলাদেশে যেখানে মোট আয়ের মাত্র ১৩ শতাংশ দেশের নিম্নতম ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর আয়, সেখানে মাত্র সমাজের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ মানুষই ভোগ করে দেশের আয়ের ৩৮ শতাংশ।

মানব উন্নয়নের বহুমাত্রিক সূচকেও এমন বৈষম্য বিদ্যমান। অনূর্ধ্ব ৫ বছরের শিশু মৃত্যুর হার সর্বনিম্ন ২০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে যেখানে প্রতি হাজারে ৪৯, সেখানে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ হার প্রতি হাজারে ২৫। যদি আঞ্চলিক বৈষম্যের দিকে ফিরে দেখি, তাহলে দেখা যায়, সিলেটে সাক্ষরতার হার যেখানে ৬০ শতাংশ, বরিশালে সে হার ৭৫ শতাংশ।

এ বৈষম্য শুধু ফলাফলেই সীমাবদ্ধ নয়, সুযোগের ক্ষেত্রেও বিদ্যমান এ বৈষম্য। যেমন,শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সুযোগে বৈষম্যটা অত্যন্ত প্রকট। শিক্ষায় সরকারি এবং বে-সরকারি ধারা, বাংলা ও ইংরেজী মাধ্যম,বিত্তবান এবং বিত্তহীনদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদী প্রবণতার ধারা অব্যাহত থাকায় শিক্ষা সুযোগে একটি বিশাল বৈষম্যের সৃষ্টি করা হয়েছে।

ঠিক একইভাবে স্বাস্থ্যখাতে ত্রি-ধারা ব্যবস্থাপনা বজায় রেখে স্বাস্থ্য সুযোগের ক্ষেত্রেও একটি বিশাল বৈষম্যের দেয়াল তৈরী করা হয়েছে। যার ফলে সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় সেবার পরিমাণ যেমন পর্যাপ্ত নয়, তেমনি তার মানও খুব নিচু মানের। অথচ সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় যায় সাধারণ মানুষই আর স্বাভাবিকভাবেই তারা ন্যূনতম স্বাস্থ্য সুবিধা পান না।

বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা মূলত এসব বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তবে অর্থনীতির এসব অবস্থা সত্ত্বেও আশাবাদী যে, আগামী দিনগুলোয় বাংলাদেশ এসব অন্তরায় কাটিয়ে উঠবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার অব্যাহত উন্নতি এবং সেই সথে আইন-শৃঙ্খলা অবস্থার উন্নতির সথে সথে,বাংলাদেশ অবশ্যই স্থিতিশীল অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে সক্ষম হবে, এর ফলশ্রুতিতে অর্থনীতি বিষয়ে জনসাধারণের আস্থা এবং বিশ্বাস আরও মজবুত আরও দৃঢ হবে বলে আমি সুদৃঢভাবে বিশ্বাস করি।
কিন্তু বিশ্বব্যাপী বাস্তবতার আলোকে যে বিষয়টি লক্ষনীয়, সেটি শুধু বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্যই নয়,বরং এটি বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। অর্থনৈতিক সংকট,মূল্যস্ফীতি,মূদ্রাস্ফীতি,
চাহিদা, যোগান, একচেটিয়া বাজার ব্যবস্থাপনা,অর্থনীতির চিাহিদা রেখা,চিাহিদা সূচী সহ অর্থনীতির সব কারিকুলামের আলোকে যত সমস্যার কথায় আমরা বলি না কেন? আর অর্থনীতির যে সমীক্ষায় জনসন্মখে উপস্থাপন করিনা কেন?অর্থনীতি ও অর্থনৈতিক সংকটের মূল সমস্যা অন্য জায়গায়। এটা মূলত ক্ষমতাসীন মদদপুষ্ট তাদেরি এক শ্রেণীর অর্থনৈতিক সিন্ডিকেট বা লুটেরা। ক্ষমতার পালাবদলে সব দেশেই ক্ষমতাসীনরা এটা করে বলেই আজ দেশে দেশে অর্থনৈতিক চিত্র এমন বলে আমি মনে করি।এবং পাশাপাশী একটি বিষয় ও স্পষ্ট করছি যে,যতক্ষণ না শাসকগোষ্ঠী কোন দেশে অর্থনৈতিক বহুমাত্রিক দূর্ণীতি বন্ধ না করবে,ততক্ষণ পর্যন্ত কোন দেশেই অর্থনৈতিক বাজার ব্যবস্থাপনায় স্থিতিশীলতা আসবেনা।কারণ বহুমাত্রিক দূর্ণীতির মধ্য দিয়ে উপার্জনের উৎসই হলো বহুমাত্রিক অর্থনৈতিক সংশ্লিষ্ট খাত।

আমার বিচার ও বিশ্লেষণে যেটি সুস্পষ্ট তাহলো সকল রাজনৈতিক দলের রাজনীতিতে নেতাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে অন্যায়, অপরাধ, দূর্ণীতি, লুটপাটসহ সকল কর্মকাণ্ড কশৌলগতভাবে আলাদা হলেও প্রায় সবার রাজনৈতিক ধর্ম এক ও অভিন্ন।যে কারণে যে কোন রাজনৈতিক দল ক্ষমতার বাইরে এলেই ওই দলের নেতারা জনদরদী হয়ে উঠে,শুরু হয় মায়া কান্না। তখন তারা বয়ান দেন,ক্ষমতাসীনদের স্বৈরশাসনে সাধারণ মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।সব সরকারের সময়ই সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস থাকে এটা ঠিক আছে? কিন্তু নেতাদের মায়া কান্নার কারণ অন্য জায়গায়, যখন যে ক্ষমতায় থাকে সবায় একই কাজ-ই করে। যারা ক্ষমতার বাহিরে থাকে তারা মনে করেন, যে ক্ষমতায় আছে সেতো সব শেষ করলো আমরা খাবো কি?ফলে জনগণকে সাইন বোর্ড করে মাঠে নামে নিজেরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। আর বোল চাল দিতে থাকে জনগণ এইটা মেনে নিবেনা,ওইটা মেনে নিবেনা ইত্যাদী।যদি তাই নাহবে তবে পলাবদলে নেতাদের ভাগ্যখুলে যায় আর দূখী অসহায়রা আরও দরিদ্র হয় কেন?
(নেতারা সবায় বলে,কোথায় দূর্ণীতি।অথচ আছে বেহিসাবী টাকা পয়সা আর রং বে রং এর গাড়ী-বাড়ী,অসময়ে সবি যায় জানা,ঠিকানা হয় তাদের জেল খানা)।
বি;দ্র: আবারও নাগালের বাইরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি।বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর-২০২৪) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতি নিয়ে চলতি বছরের নভেম্বর মাসের ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) হালনাগাদ প্রকাশিত তথ্য মতে, মাত্র এক মাসের ব্যবধানে অর্থাৎ নভেম্বর মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ।

(আমি কাহারে বলিবো ভালো) যে বহুমাত্রিক দূর্ণীতি আর নিয়মের কারণে হাসিনা বিপদে,সেই একই কারণে ইউনূস সরকার আজ মসনদে।যে মানুষ, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের রক্ত চুষে আজ নোবেল বিজয়ী ইউনূস সেজেছেন,তার কাছে দেশ জাতী কতটুকুন কি আশা করতে পারে? কয়েক দিন আগে যে ইউনূস কর ফাঁকিসহ একাধিক অপরাধে আদালতে হাজিরা দিতে দিশেহারা সে আজ দেশের বড় কত্তা বাবু। গেল ৫ আগষ্ট-২০২৪ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পলায়নের পর তরিঘরি করে অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইউনূসকে যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় তখন একেবারে সাধারণ হতদরিদ্র মানুষ ভেবেছিল এবার বুঝি নিত্য পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ হবে? সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসবে? হাসিনা সরকারের মতো আর হয়তো হরহামেশায় নিত্য পণ্যের দাম বাড়বেনা।রাতে বাজার দর বাড়িয়ে সকালে প্রেস ব্রিফিং করে বলবেনা যে, জনগণের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। এবারও সে আশায় যেন গুড়েবালি, সমাজের সচেতন মহল, বিশেষ করে যারা গণতন্ত্র পিপাষু, স্বাধীনতাকামী,শান্তিকামী দেশ জাতীকে নিয়ে ভাবেন এবং ন্যায়ের পক্ষে কথা বলেন এই শ্রেণী ভেবেছিলেন,এবার বুঝি সত্যিকার অর্থেই দেশ বৈষম্য মুক্ত হবে।কিন্তু বাস্তবতা সম্পুন্ন ভিন্ন,মনে হয় এ যেন খাল কেটে কুমির আনার শামিল। বৈষম্য মুক্ত আর সাধারণ মানুষের কষ্ট কমার বদলে এবার ঘাড়ে চেপে বসেছে।দেশে দ্বিতীয় বিজয়ের মধ্যদিয়ে দেশের চুড়ান্ত স্বাধীনতা অর্জণ হয়েছে।যে জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস,দেশের মালিক,সেই জনগণই এই বিজয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। এখন মনে হচ্ছে ইউনূস সরকারও হাসিনার পথে হাঁটা দিয়েছে।কোন সরকার যখনি জনস্বার্থ ও জাতীয়স্বার্থের কথা ভেবে বাজার নিয়ন্ত্রণ না করে উল্টো ট্যাক্স-ভ্যাট,শুল্ক,মূসকসহ নানান রকমের ফন্দি-ফিকির দেখিয়ে জনগণের খরচ বাড়িয়ে জনজীবণ দূর্বিসহ করে তোলে এবং তোলার পাঁয়তারা করে তখন বুঝতে হবে সরকার দূর্ণীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে ইউনূস সরকার কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে? হাসিনা পালিয়েছে কিন্তু ইউনূস সরকারকে দেশের মানুষ ছেড়ে দিবেনা।ইউনূস সরকার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দোহায় দিয়ে ক্ষমতার মসনদে,সাধারণকে আশার আলো না দেখিয়ে পুরোপুরী বিপরিত করছে।

সাধারণ মানুষের কাছে যে কোন সরকারের আস্থার জায়গা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ,(কেউ করেনি)। নিত্যপণ্যের বহুমাত্রিক বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রনে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের পক্ষ থেকে কিছু কমন ডায়ালগ বলা হয়(দাম বাড়ালেই ব্যবস্থা)(আগামী উমুক তারিখ থেকে এই জিনিষের দাম নিয়ন্ত্রন করা হবে)(কৃত্তিম সংকট সৃষ্টি করলে সাড় নয়)ইত্যাদী।ফলে যা হবার তাই হয় সিন্ডিকেটের জয় হয়।বরং এ রকম প্রমান অনেক আছে যে,মন্ত্রী দাম কমার কথা বলছে-তো,উলটা দাম বেড়ে গেছে। বিগত কোন সরকার-ই হতদরিদ্র ও সল্প আয়ের মানুষের জীবণ জীবিকা বা বেঁচে থাকার জন্য তাদের নন্যতম অধীকার নিয়ে জোড়ালো কোন পদক্ষেপ গ্রহন অথবা সুষ্ঠু কোন চিন্তা কেউ কোন দিন করেছে বলে আমার মনে হয় না।(যে আসে সেই বলে,কিছুই নেই রেখে গেছে-তো তলাবিহীন ঝুড়ি)।লেখকের পরবর্তী লেখা,’রাষ্ট্র একটি প্রতিষ্ঠান,জনগণ মূলধুন,নেতারা লুটেরা’পড়তে চোখ রাখুন, দ্যা পিপুলস নিউজ২৪,

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিষ্ট।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir