মাঠপর্যায়ে নিয়োজিত মশককর্মীদের কার্যক্রম মনিটরিং বৃদ্ধি করায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক ফলাফল দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
রবিবার (২৪ আগস্ট) ঢাকা উত্তর নগর ভবনে বিদ্যমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত ‘ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া সংলাপ: প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও নিয়ম’ শীর্ষক সমন্বয় সভা এবং সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
সভায় ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, বিশেষ কমিটির সদস্যরা, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ঊর্ধ্বতন কিট নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা ও ডিএনসিসির বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় ডিএনসিসির প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ছয় হাজার ৮৫০ জন। এ বছরের জুলাই মাসে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ৮৪৪ জনে। তবে এই সংখ্যাও এখনো উদ্বেগজনক বলে প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
তিনি বলেন, ডিএনসিসি মশককর্মীদের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিকে (বিএমটিএফ) সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়মিত মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এর ফলে চলতি আগস্ট মাসের প্রথম ১৫ দিনে রোগীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৭০ জনে।
ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। আমরা এই কার্যক্রম আরও জোরদার করতে চাই।
প্রশাসক আরও বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে একযোগে কাজ করছে ডিএনসিসি।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ডেঙ্গু পরিস্থিতি সম্পর্কযুক্ত জানিয়ে প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ আরও বলেন, ঢাকা শহরে মশা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো অনিয়ন্ত্রিত বাজার ও হকারদের কারণে সৃষ্ট অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। এ কারণে শহর নোংরা হয়ে মশার প্রজনন বাড়ছে। উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েও এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, মশা নিধন কার্যক্রম বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ছাড়া কখনো সফল হবে না। মশার উৎস ধ্বংস করতে হলে আমাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করতে হবে এবং শহরের সর্বত্র পর্যাপ্ত ডাস্টবিন নিশ্চিত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় মনিটরিং ও সুপারভিশনের পাশাপাশি জনসচেতনতা এবং জনসম্পৃক্ততা অত্যন্ত জরুরি। এ বিষয়ে সবাইকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।
সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সবার সহযোগিতা এবং কার্যকর মনিটরিং অব্যাহত থাকলে আসন্ন ডেঙ্গুর ঝুঁকি সফলভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।