মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) অতিরিক্ত মহাপরিচালক গোলাম আজম বলেছেন, দেশে বৈধ কোনো সিসা বার নেই। রেস্তোরাঁর আড়ালে অসাধু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে এসব বার পরিচালনা করছেন।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে বিপুল পরিমাণ আইস, ইয়াবা, কুশ ও কোকেন উদ্ধারের ঘটনায় ডিএনসি সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, “সিসায় যদি ০.২% নিকোটিন থাকে তাহলে এটি খ শ্রেণির মাদক হিসেবে ধরা হয়। তবে ব্যবসায়ীরা আদালতে ভুল তথ্য দিয়ে কিছুদিন আমাদের কাজ ব্যাহত করেছিলো। বর্তমানে নিয়মিত অভিযান চলছে। বনানী, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় পরিচালিত সিসা বারগুলো অবৈধ। বনানীর থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি নামের প্রতিষ্ঠানটিও একটি রেস্তোরাঁ হলেও অবৈধভাবে সিসা বার পরিচালনা করছিলো।”
একাধিক অভিযানে বিপুল মাদক উদ্ধার
২৫ আগস্ট রাজধানীর আদাবরে অভিযান চালিয়ে মো. খাইরুল ইসলাম রিয়ান (২৬)কে ৪ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে ডিএনসি। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শেখেরটেকের একটি বাসা থেকে একাধিক মামলার আসামি মিলন মোল্লার কাছ থেকে ১ কেজি ৬০০ গ্রাম আইস উদ্ধার করা হয়।
এ মামলার মূলহোতা সৌরভ ইসলাম শান্ত ওরফে তোফায়েল হোসেন শান্ত এবং ইয়াছমিন আক্তার আঁখি পলাতক রয়েছেন। এর মধ্যে সৌরভকে ডিএনসি তালিকাভুক্ত গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তার বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
একই দিন পল্টনের পুরাতন ডাক ভবন বৈদেশিক ডাক থেকে ২৮০ গ্রাম টেট্রাহাইড্রো কুশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মো. শহিদুল ইসলাম (৪৫) এবং তার সহযোগী শুকুর মোহাম্মদ রিপন (৫০)কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অন্যদিকে মঙ্গলবার ভোরে বাংলাদেশ কাস্টমস ও ডিএনসির যৌথ অভিযানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গায়ানার নাগরিক কায়রান পেটুলাকে গ্রেফতার করা হয়। তার লাগেজ থেকে উদ্ধার করা হয় ৮ কেজি ৬০০ গ্রাম কোকেন—যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর আগে সর্বোচ্চ উদ্ধারকৃত কোকেন ছিলো ৮ কেজি ৩ গ্রাম।
মূলহোতাদের গ্রেফতার নিয়ে ব্যাখ্যা
মূলহোতারা কেন ধরা পড়ছে না—এমন প্রশ্নের জবাবে গোলাম আজম বলেন, “মাদক যার কাছে পাওয়া যায় মামলা তার বিরুদ্ধেই হয়। এজন্য গডফাদারদের আইনের আওতায় আনা সহজ হয় না। তবে মানি লন্ডারিং আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১২টি মামলা হয়েছে, তদন্তাধীন আছে আরও ২৭টি।”
তিনি আরও জানান, বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার হওয়া কোকেনের চালান ব্রাজিল থেকে নিউইয়র্ক হয়ে দোহা হয়ে ঢাকায় আসে। তবে গন্তব্য বাংলাদেশ ছিলো কিনা তা তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে। তার ভাষায়, “বাংলাদেশে কোকেনের বাজার নেই। তাই এর চূড়ান্ত গন্তব্য অন্য কোথাও হতে পারে।”