বগুড়ার শেরপুর উপজেলার তালতা থেকে আয়রা পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি গত ১৫ বছরে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগা ও বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ সমাধান না হওয়ায় অবশেষে গ্রামবাসীর উদ্যোগে তিনদিনব্যাপী এ সড়ক সংস্কার কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ আগষ্ট) সকাল থেকে মির্জাপুর ইউনিয়নের তালতা গ্রাম থেকে কাজ শুরু করে গ্রামবাসী।
সরে জমিনে গিয়ে যানা যায়, রাস্তার কিছু অংশে ইট পাড়া এবং কিছুটা কাচা রাস্তাও রয়েছে। স্বাধীনতার ৫২ বছরেও রাস্তাটি পাকা হয়নি। এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে দুটি গ্রামসহ আশে পাশের ৪টি গ্রামের মানুষ। তালতা উচ্চ বিদ্যালয়, তালতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তালতা হাফিজিয়া মাদ্রাসা এবং এলাকার তিনটি মসজিদসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ইমাম ও সাধারণ মানুষ চলাচল করে। গত ১৫ বছর ধরে একেবারেই রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে সড়ক জুড়ে কাঁদা ও হাঁটু সমান পানি জমে থাকে। প্রতিদিন প্রায় দুটি গ্রামের ৫ হাজার মানুষ এই সড়ক দিয়ে চলাফেরা করলেও ভোগান্তি অসহনীয়। বিশেষ করে অসুস্থ নারী-পুরুষ, শিক্ষার্থী, নারী ও বয়স্কদের জন্য চলাচল ছিল চরম দুর্ভোগের।
বিভন্ন দপ্তরে ধরনা দিয়ে রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে নিজে উদ্যোগে রাস্তা কাজ শুরু করে। সংস্কার কাজের প্রথম দিনেই রাস্তার দু’পাশের ড্রেন পরিষ্কার করা হয়েছে, নিচু জায়গাগুলোতে মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে এবং কাদাযুক্ত স্থানে বালি ফেলে সমতল করা হচ্ছে।
এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করা রাফিস, সিয়ামসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, কাদা-পানির মধ্যে দিয়ে স্কুলে যেতে গিয়ে প্রায়ই পিছলে পড়ে জামা-কাপড় নোংরা হয়ে যায়। অনেক সময় বিব্রত হয়ে স্কুলে যাওয়া সম্ভব হয় না। এখন সড়কটি সংস্কার হলে আমাদের কষ্ট অনেকটাই কমবে।
এছাড়া স্থানীয় শিরীন আক্তার নামের এক গৃহবধূ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাস্তাটি এতটাই খারাপ যে কয়েকদিন আগে আমি চলাফেরার সময় পিছলে পড়ে গিয়ে আমার নাকের হাড় ভেঙে গেছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি আব্দুল মোত্তালেব বলেন, এ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাফেরা করে। দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত থাকায় চরম দুর্ভোগ ছিল। তাই গ্রামবাসীর সহযোগিতায় স্বেচ্ছাশ্রমে এই সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।
তালতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আজগর বলেন, রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর উপস্থিত কমে গিয়েছে। গত ১৫ বছর হলো এ রাস্তাটির কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
এ উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন স্থানীয় যুবক রহমত, সুমন, লতিফ, হাফিজার, নুরু, হামিদ এবং ছাত্রনেতা রবিউল ইসলাম রিফাতসহ ২শজন।
উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ বলেন, রাস্তাটি কাজের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করছি অচিরেই প্রস্তাব পাশ হয়ে আসবে।