সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ০১:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
সিরাজগঞ্জে শিশু কন্যাকে হত্যার পর বস্তাবন্দী করে পালাল সৎমা শিগগিরই ‘শক্তিশালী আন্দোলন’ শুরু হবে: নাহিদ টঙ্গীতে মোবাইল ছিনতাই করতে গিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক মাহফুজকে হত্যা পুরান ঢাকায় সোহাগ হত্যা; আনসার সদস্যদের দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ সত্য নয়: আনসার ডিজি আবারও সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দিলো ডিএমপি সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আরও দুই মাস বাড়ল চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ধরতে চিরুনি অভিযান শুরু হতে পারে:স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কুড়িগ্রামকে মাদকমুক্ত করতে অভিযান চলবে-জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা  টাঙ্গাইলে ঘাটাইলের জোরদিগিতে মসজিদের নামে জমি দান করায় দানকারীর বিরুদ্ধে ৬টি মিথ্যা মামলা  বিএনপির বিরুদ্ধে  ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে  কাজিপুরে বিক্ষোভ মিশিল  

আসুন দেখি “বাক স্বাধীনতা ও মুক্তমত প্রকাশের অধিকার” কতটুকু পেলাম?

সাঈদুর রহমান রিমন / ২৪১ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে বৃহস্পতিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৪, ৮:৩৫ অপরাহ্ন


পাপীদের শাস্তির পরই বাংলাদেশ হয়ে উঠুক সবার জন্য ভালোবাসার। লুটেরাদের আয়েশ কেড়ে নিন, অধিকার হরণকারীরা স্বাধীনতার স্বাদ পরে পেলেও চলবে। কারণ, জেলবন্দী, নজরবন্দি, লুটেরা- অপরাধীদের সব স্বাধীনতা দিলে রাষ্ট্রের জন্য তা মহাআপদ হয়ে দাঁড়াবে।

লুটেরা অপরাধীদের দফায় দফায় রিমান্ড আর জেল হাজতে পাঠানোটাই কৃতিত্ব নয়, তাদের দেহ চিপিয়ে হলেও রাষ্ট্রীয় অর্থ সম্পদ আগে উদ্ধার করা হোক। বিশ কোটি টাকার বেশি ঋণ খেলাপি সবাইকে গ্রেফতার করে কারাগারে রাখুন। দরকার হলে লুটেরা কারাগার নামে বিশেষায়িত জেলখানা তৈরি হোক- খেলাপি ঋণের নির্দিষ্ট অংশ আদায় না হওয়া পর্যন্ত আটকে থাকবে তারা।
উচ্চ আদালতে প্রভাব খাটিয়ে লুটেরাদের পক্ষে অর্থ সম্পদ সংক্রান্ত যতো স্থগিতাদেশ নেয়া হয়েছে সেগুলো জরুরি ভিত্তিতে বাতিলের ব্যবস্থা হোক।
যারা বিদেশে টাকা পাচার করেছেন তাদের এদেশীয় সুবিধাভোগীদের তাড়িয়ে বেড়ানো জরুরি।

মন্ত্রী, এমপি, পলায়নপর কর্মকর্তাদের আটকের পর পরই তাদের সহায় সম্পদ, ব্যাংক একাউন্ট সরকারের অনুকূলে জব্দ করা হোক। তারা আদালতে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে পারলে সেসব সম্পদ ফিরে পাবে।
আর বিভিন্ন সময় দুর্নীতিবাজী, প্রতারণা, লুটপাটের অভিযোগে ব্যাংক একাউন্টসহ যতো সম্পদ জব্দ করা হয়েছে সেগুলো আয় বৃদ্ধিমূলক কাজে ব্যবহার করতে হবে।

পদ্মা ব্যাংকসহ দুটি ব্যাংক গিলে খাওয়ার কাণ্ডে আলোচিত মহাদাপুটে নাফিজ সরাফত নাকি বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারেরও খুব ঘনিষ্ট? সরকার প্রধান ড. মোহাম্মদ ইউনুস ও উপদেষ্টাদের সঙ্গে তার জোড়া জোড়া ছবি দিয়ে নিজের অফিস – বাসা সাজিয়ে ফেলেছেন নাফিজ। সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদসহ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, ব্যাংকার, নেতা ও জনপ্রতিনিধি মিলিয়ে চার শতাধিক মানুষের লুটপাটের লক্ষাধিক কোটি টাকা তার হাত ঘুরে দৌড়াদৌড়ি করে। পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজের আওতায় লুটেরা সকলেই কানাডাসহ ইউরোপ আমেরিকায় সেটেল্ড।
তাছাড়া বেনজিরের সঙ্গে গলায় গলায় পীড়িত থাকায় ব্যাংকিং কর্মকাণ্ডে যুক্ত ২০/২২ জন লোক গুমের ঘটনা খোঁজ নিয়ে দেখা উচিত। এমনকি চৌধুরী নাফিজের বোনজামাই ব্যাংক ম্যানেজারও রেহাই পায়নি। বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট শেষে মাওনা শাখার ওই ম্যানেজার ভগ্নিপতিকে নিরুদ্দেশ রাখা হয়েছিল, অবশ্য কিছুদিন পর তার মৃত্যুর ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘনিষ্ট কাউকে তার মৃতদেহ দেখতে দেয়া হয়নি, অংশ নিতে দেয়নি জানাজাতেও।

ব্যাংকার চৌধুরী নাফিজ সরাফত এখন দৈনিক বাংলার মতো পত্রিকার মালিক কর্তৃপক্ষ বটে, তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো যাবে না কোনোভাবেই।

ওয়ান ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক বিভিন্ন দফতর, অধিদপ্তরের স্বেচ্ছাস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ কর্তাদের ক্ষমা ঘোষণা বাতিল করে তাদের চাকরি ডিসমিস করুন। পেনশন ও অন্যান্য সুবিধা তারা যেন না পায়। তাদের চাকরিতে বহাল রাখার মাধ্যমে দুর্নীতি লুটপাটকে রাষ্ট্রীয়ভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে দায়মুক্তি দেয়া প্রতিটি অভিযোগের ঘটনা পুনরায় তদারকী করা হোক। এজন্য বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে গড়ে তোলা হোক বিশেষায়িত তদন্ত টিম।
জন্ম সনদ, এনআইডি কার্ড, পাসপোর্ট ও বিভিন্ন লাইসেন্স প্রদান, সংশোধন ও রিনিউয়ের ক্ষেত্রে ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার হোক। এসব কাজে দেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ লোক সীমাহীন ভোগান্তি পোহাচ্ছে।

বর্তমান সরকারকে সবকিছু ফেলে বাজারদর নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিৎ। দেশের সব শ্রেণীর মানুষ আকাশচুম্বী দ্রব্যমূল্যের কাছে ধরাশায়ী। এই জিম্মিদশা থেকে মুক্তির মাধ্যমে নতুন বিজয়ের স্বাদটুকু দেশবাসীকে এই মুহুর্তেই দেয়া দরকার। এজন্য বাজারদরের বাস্তবভিত্তিক মনিটরিংসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে ব্যাপক সংখ্যক মোবাইল কোর্টের লাগাতার অভিযান চালানো।

আরো যা কিছু জরুরি
=====

আয়না ঘর থেকে উদ্ধার পাওয়া ব্যক্তিবর্গকে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় জরুরি আইনি সহায়তা প্রদান করা হোক। তারা দেশী বিদেশী মানবাধিকার সংস্থার মাধ্যমে এ জঘণ্যতার বিচার দাবি করুক। তাছাড়া বিতাড়িত সরকারের অমানবিক অত্যাচার ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লংঘনের সবচেয়ে জঘণ্য প্রমাণ ‘আয়না ঘরের সবকিছু’ বিশ্ববাসীর কাছে খোলামেলা প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা উচিত। ভিন্নমতের মানুষজনকে গুম করে রাখার গুপ্ত বন্দীশালার অনেক কিছু এখনও আড়ালে আবডালে রাখা হচ্ছে। বিষয়টি রীতিমত ধামাচাপা দেয়ার অপকৌশল। আয়না ঘরের নিরপেক্ষ ভিডিও, ছবি, কর্মরতদের সাক্ষ্য বক্তব্যের প্রমাণাদি সংরক্ষণের ব্যবস্থা কেন করা হচ্ছে না? ভবিষ্যতে ভুক্তভোগীরা প্রকৃত ঘটনাও আদালতে প্রমাণে যাতে ব্যর্থ হন সেজন্যই কি রাখঢাকের ব্যবস্থা চলছে? আয়না ঘরের আদলে দেশে আরো আরো গুপ্ত বন্দীশালা উদঘাটনে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়েরও সক্রিয় ভূমিকা থাকার কথা,,, কিন্তু এ ব্যাপারে পুরো জাতিকে অন্ধকারে রাখা হচ্ছে।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, অন্তবর্তী সরকারের আড়ালেও আরেকটি অঘোষিত সরকার নানা কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তড়িৎ গতিতে কিলার আব্বাস, শিবিরের নাসিরসহ বেশ কয়েকজন দাগী অপরাধীর হঠাৎ জামিন পাওয়া এবং বেশ কিছু বিতর্কিত রদবদল, পদায়নের ঘটনায় এ সন্দেহের সূত্রপাত ঘটেছে। বিষয়গুলো জবাবদিহিতার আওতায় আনা জরুরি।

সেনাবাহিনীর মাসব্যাপী কঠোর অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো সক্রিয়তা দেখতে পাচ্ছে না দেশবাসী।

সকল প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম দুর্নীতি ঘুষ বন্ধের জন্য ৯৯৯ এর মতো বিশেষ হটলাইন সার্ভিস চালু করা হোক। যাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষকাণ্ডসহ যে কোনো ভোগান্তির ব্যাপারে মানুষজন তাৎক্ষণিক প্রতিকার পায়।

সম্মানিত উপদেষ্টাগণ বাড়তি কথাবার্তা বলা ত্যাগ করুন, প্রত্যেকে মুখপাত্রের মাধ্যমে প্রতিদিনের ব্রিফিং দিন। সচ্ছতা জবাবদিহিতার নামে বিতর্ক সৃষ্টির জন্য অনেক প্রভাষ আমিন’রা এখনও তৎপর।

(লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir