সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ০১:২৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
সিরাজগঞ্জে শিশু কন্যাকে হত্যার পর বস্তাবন্দী করে পালাল সৎমা শিগগিরই ‘শক্তিশালী আন্দোলন’ শুরু হবে: নাহিদ টঙ্গীতে মোবাইল ছিনতাই করতে গিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক মাহফুজকে হত্যা পুরান ঢাকায় সোহাগ হত্যা; আনসার সদস্যদের দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ সত্য নয়: আনসার ডিজি আবারও সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দিলো ডিএমপি সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আরও দুই মাস বাড়ল চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ধরতে চিরুনি অভিযান শুরু হতে পারে:স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কুড়িগ্রামকে মাদকমুক্ত করতে অভিযান চলবে-জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা  টাঙ্গাইলে ঘাটাইলের জোরদিগিতে মসজিদের নামে জমি দান করায় দানকারীর বিরুদ্ধে ৬টি মিথ্যা মামলা  বিএনপির বিরুদ্ধে  ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে  কাজিপুরে বিক্ষোভ মিশিল  

সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ হয় না, হবেও না…

সাঈদুর রহমান রিমন / ১০৯ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:৫২ অপরাহ্ন


এই যে আমাদের সাংবাদিক অলক নির্মমতার শিকার হলেন, তার দেহখানা রক্তাক্ত হলো। এর বিপরীতে আমরা কিছু সহকর্মি ফেসবুকে বাদ প্রতিবাদের ঝড় তুললাম। কেউবা আরেক ধাপ এগিয়ে হম্বিতম্বি করলেন-ব্যস, সব শেষ। কারণ, আমরা তো প্রদর্শনযোগ্য প্রমাণ রাখার মধ্যেই দায়িত্ব কর্তব্য পালিত হয়েছে বলে ভাবতে থাকবো।

নিজে সহমর্মিতার দরদ দিয়ে সেই রক্তাক্ত হামলার খবরটি পর্যন্ত লেখার প্রয়োজনবোধ করবো না। জুনিয়র কোনো সহকর্মিকে হয়তো কয়েক লাইন লিখে জমা দেওয়ার কথা বলে চা-সিগারেটের আড্ডায় চলে যাবো। সহকর্মি যাকে লেখার দায়িত্ব দিলাম সে হয়তো সালেহ মোহাম্মদ রশিদ অলক নামের কোনো মিডিয়া কর্মি থাকার কথা আজই প্রথম জানতে পারলো। তার ফরমায়েশি লেখায় পথচারী, খদ্দের মৃদু নির্যাতনের শিকার হওয়ার মতোই হয়তো প্রিয় অলক একটু কাভারেজ পাবেন-দুই অথবা এগারো নম্বর পাতায়।

রাত পোহালেই আবার কোনো সাংবাদিক নির্যাতনের খবর জেনে একইভাবে বাদ প্রতিবাদে মেতে উঠবো। কিন্তু অলক কি করবেন? তার রক্তের দাগ হয়তো রাতের মধ্যেই ধুয়ে মুছে ফেলা হবে। জখমের চিহ্ন মুছতে না হয় দুই- তিন সপ্তাহ লাগবে। কিন্তু তার অন্তর জুড়ে নির্মমতার যে ক্ষতচিহ্ন আঁকা থাকলো, মৃত্যুর মুখ থেকে প্রাণে রক্ষা পাওয়ার যে ভীতি- তা কি বাকি জীবনেও তিনি ভুলতে পারবেন? মুছে ফেলতে পারবেন?

এভাবেই প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত সাংবাদিকরা নানা নির্মমতার শিকার হন এবং হচ্ছেন। নিয়তির অমোঘ বিধানের মতো সাংবাদিক নির্যাতনও চলতে থাকে ধারাবাহিক ভাবেই। পৈশাচিক এ ললাট লিখন থেকে সাংবাদিকদের সুরক্ষার কোনো ব্যবস্থাপনা নেই, সাংবাদিক নেতা বনে যাওয়া অভিভাবকদের কোনো ভূমিকা নেই, নেই দৃষ্টান্ত সৃষ্টির মতো কোনো কার্যক্রমও।

বরং সাংবাদিক নীপিড়ন-নির্যাতন, হয়রানি চলমান থাকলে একশ্রেণীর নেতাদের কদর বাড়ে, নির্যাতিত সাংবাদিক প্রতিকার পাওয়ার আশায় তাদের পেছনে ঘুরঘুর করে। এতে কথিত মুরুব্বি নেতা হয়তো বিকৃত তৃপ্তি বোধও করেন। সাংবাদিকদের নাম ভাঙ্গিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে এতো এতো সংগঠন, সংস্থা, ক্লাব, সমিতি নামক দোকান খোলা হয়েছে। সবারই মূলমন্ত্র হচ্ছে, পেশাদার সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদান এবং সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ।

হরহামেশা নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও যাদের টিকিটি ছু‘তে পারা যায় না তারা নাকি নির্যাতন প্রতিরোধ করবে। বাটপারের দল শুধু বড় বড় বুলি আউড়িয়ে নেতা সাজে আর ধান্দাবাজির ইজারা নেয়। তাদের কাছে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ-হ্রাস করার ন্যূনতম পরিকল্পনা পর্যন্ত নেই। পেশাদারিত্বের ক্ষেত্রে কি ধরনের সহায়তা করতে হয় সেটিও তাদের জানা নেই। সুতরাং যা হবার তাই হয়, সাংবাদিক নির্যাতন আর হয়রানি চলতে থাকে বল্গাহীন ভাবেই।

আগে নেতা হওয়ার ক্ষেত্রে দরাজ কন্ঠে বক্তৃতা করার, কলিজা কাঁপানো হুংকার দেওয়ার মতো মিনিমাম যোগ্যতাকে প্রাথমিক ক্রাইটেরিয়া হিসেবে বাছাই করা হতো। এখন নেতারা মিন মিন করে, গাড়ির চাকা পাটার শব্দ শুনলে নিজেরাই ভয়ে অজ্ঞ্যান হয়ে যায়। তারা সাংবাদিকদের সুরক্ষা দিবে, নির্যাতন প্রতিরোধে ভ’মিকা রাখবে- এটা বিশ্বাসকারীরাও অন্ধের স্বর্গে বাস করে বৈকি।

লেখক- সিনিয়র সাংবাদিক


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir