আজকের শিশু আগামীদিনের ভবিষ্যৎ ,সেই সুবাদে এই শিশুরাই হবে আগামীর সুখী, সুন্দর, সমৃদ্ধ ও একটি পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ বিনির্মাণের বলিষ্ঠ,স্বচ্ছ এবং সুনিপূণ কারিগর।আর সে কারণেই প্রতিটি শিশুকে শিক্ষার আদর্শীক গুণাবলির মাধ্যমে সুনাগরিক হিসেবে তৈরী করতে হলে বেসিক শিক্ষার পাশাপাশি দেশ পরিচালনার জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রের প্রয়োজনীয় প্রতিটি উপাদাণ সম্পর্কে প্রত্যেক শিশুকে পর্যায়ক্রমে জানা অতীব জরুরী।(দেশ পরিচালনায় যাহা কিছু জানা সবার প্রয়োজন,পাঠ্য বইয়ে তাহা সবি করতে হবে সংযোজন)।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (সংক্ষেপে বিসিএস নামে সর্বাধিক পরিচিত)।বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস হল সরকারী কর্মকর্তাদের একটি দল যারা নাগরিকদের সেবা করে এমন পেশায় নিযুক্ত।বে-সামরিক কর্মচারীরা কেন্দ্রীয়, রাজ্য এবং স্থানীয় সরকারের জন্য কাজ করেন।আর সরকারি কর্মচারীরা সরকারকে জবাব দেয়, কোন রাজনৈতিক দল বা রাজনীতিবিদদের নয়।
প্রক্তন পাকিস্তানের সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিসেস থেকে এটি উদ্ভূত হয়েছে, যা এক সময় উপনিবেশিক শাসনামলের ব্রিটিশ সম্রাজ্ঞী নিয়ন্ত্রিত ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসের উত্তরসূরি ছিল। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকে এটি সিভিল সার্ভিস অধ্যাদেশের দ্বারা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস হিসেবে পরিচিতি হয়। এর মূলনীতি ও পরিচালনা পরিষদ বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত হয়।
বে-সামরিক আমলাতন্ত্রের এই অংশটি একটি ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার। ব্রিটিশরা ভারতীয় সিভিল সার্ভিস (আইসিএস) এর মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের শাসন করত এবং আইসিএসে বেশিরভাগ কর্মকর্তা ছিলেন ব্রিটিশ।এটি প্রারম্ভিক বিংশ শতাব্দীতে ছিলো যে, ভারতীয়রাও ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু করে এবং বেশিরভাগ ভারতীয়রা আইসিএস-কে এটি নির্মাণ করে।১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনে সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিসেস শব্দটি পাকিস্তানে ব্যবহার করা হতো এবং সর্ব-পাকিস্তান সার্ভিসের ধারণা অব্যাহত ছিল।১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের একটি আইন দ্বারা নবজাতক বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস গঠিত হয়।
২০১৮ সালের ১৩ নভেম্বর পিএসসি’র সুপারিশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ইকোনমিক ক্যাডারকে প্রশাসন ক্যাডারের সাথে একীভূত করে গেজেট প্রকাশ করায় বিসিএস ক্যাডারের সংখ্যা ২৭টি থেকে কমে ২৬টি হয়।
ক্যাডার:
ক্যাডার মানে হচ্ছে কোন সুনির্দিষ্ট কাজ করার জন্যে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটি দল। সরকারী চাকুরি বা সিভিল সার্ভিসের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করতে নিয়োগপ্রাপ্তদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা হয়, তাই এদের সিভিল সার্ভিস ক্যাডার বা বিসিএস ক্যাডার বলা হয়ে থাকে। ক্যাডার দুই ধরনের,সাধারণ ক্যাডার ও প্রফেশনাল ক্যাডার।সেক্ষেত্রে ১৪ টি সাধারণ ও ১২ টি পেশাগত/কারিগরি মিলে,মোট ২৬ টি ক্যাডার রয়েছে।
সাধারণ ক্যাডার:
সাধারণ ক্যাডার ১৪ টি এর মধ্যে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন, সিভিল সার্ভিস পররাষ্ট্র, সিভিল সার্ভিস পুলিশ, সিভিল সার্ভিস আনসার, সিভিল সার্ভিস কর, সিভিল সার্ভিস শুল্ক ও আবগারি,সিভিল সার্ভিস নিরীক্ষা ও হিসাব,সিভিল সার্ভিস সমবায়, সিভিল সার্ভিস পরিবার পরিকল্পনা, সিভিল সার্ভিস খাদ্য, সিভিল সার্ভিস তথ্য, সিভিল সার্ভিস ডাক, সিভিল সার্ভিস রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক এবং বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বাণিজ্য।
প্রফেশনাল ক্যাডার:
প্রফেশনাল ক্যাডার ১২ টি এর মধ্যে বিসিএস সড়ক ও জনপথ, বিসিএস গণপূর্ত,বিসিএস বন,বিসিএস স্বাস্থ্য, বিসিএস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল,বিসিএস রেলওয়ে প্রকৌশল,
বিসিএস পশুসম্পদ,বিসিএস মৎস্য,বিসিএস কৃষি,বিসিএস পরিসংখ্যান,বিসিএস কারিগরি শিক্ষা এবং বিসিএস সাধারণ শিক্ষা।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিষ্ট