মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৪৭ অপরাহ্ন

পারিবারিক দ্বন্দ্বে ১২ বছর ধরে মর্গেই পড়ে আছে ব্রিটিশ ধনকুবেরের মরদেহ

অনলাইন ডেস্ক: / ২৩ বার দেখা হয়েছে
আপডেট করা হয়েছে সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫, ১২:০৭ অপরাহ্ন
-সংগৃহীত ছবি

কেনিয়ার আদালত আশা প্রকাশ করেছে—১২ বছর পর অবশেষে ব্রিটিশ ব্যবসায়ী হ্যারি রয় ভিভার্সের আত্মা শান্তি পেতে পারে। কিন্তু মৃত্যুর এত বছর পরও তাঁর মরদেহ কোথায় সমাহিত হবে, সেই প্রশ্ন আজও উত্তরহীন রয়ে গেছে।

২০১৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনস ডেতে কেনিয়ার মোম্বাসার নিজ বাড়িতে মারা যান ৬৪ বছর বয়সী ভিভার্স। কিন্তু পারিবারিক দ্বন্দ্ব, হত্যার অভিযোগ ও দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার জটিলতায় তাঁর মরদেহ এখনো মর্গে পড়ে আছে।

ভিভার্সের মৃত্যুর পর শুরু হয় চার সন্তানের বিভাজন। প্রথম স্ত্রীর দুই ছেলে রিচার্ড, ফিলিপ একদিকে, আর দ্বিতীয় স্ত্রী আজরা পারভিন দিন ও তাঁদের দুই মেয়ে হেলেন, আলেক্সান্দ্রা অন্যদিকে অবস্থান নেন। ছেলেদের অভিযোগ, বাবাকে সম্পত্তি দখলের জন্য বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে। তবে পারভিন দিন ও তাঁর দুই মেয়ে তা অস্বীকার করেছেন।

কেনিয়ার আদালতের শুনানিতে দুই পক্ষের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় এবং একপর্যায়ে দুই বোনকে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে সতর্ক করা হয়।

জানা যায়, স্বামীর মৃত্যুর পর পারভিন দিন দ্রুত ইসলামি নিয়মে দাফন করেন ভিভার্সকে। কিন্তু রিচার্ড, ফিলিপ এর বিরোধিতা করেন। তাঁদের দাবি, বাবা খ্রিষ্টান ছিলেন এবং তাঁকে ভিন্ন নামে দাফন করা হয়েছে। এ নিয়ে সন্দেহ আরও বাড়ে।

পরবর্তীতে ছেলেদের আবেদনে ২০১৩ সালের এপ্রিলে আদালত মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দেয়। তবে তা সম্পন্ন হয় ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে, তখন দেহে পচন ধরেছিল। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কেউ কেউ মরদেহ ও কবরের মাটিতে বিষাক্ত রাসায়নিক সাইহ্যালোথ্রিন খুঁজে পান, আবার কেউ পাননি। এ মতপার্থক্য আদালতের রায়কে আরও জটিল করে তোলে।

অবশেষে মোম্বাসার আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ডেভিড ওধিয়াম্বো রায়ে জানান, দেহ পচে যাওয়ায় মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা সম্ভব নয়। তাই কাউকে দায়ী করার সুযোগও নেই।

আদালত রায়ে মরদেহ পরিবারকে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিলেও নতুন জটিলতা শুরু হয়েছে। রিচার্ড, ফিলিপ চান যুক্তরাজ্যে সমাহিত করতে, আর আজরা পারভিন দিন, হেলেন, আলেক্সান্দ্রা চান কেনিয়ার মোম্বাসাতেই তাঁর সমাধি হোক।

যেহেতু ভিভার্স কোনো উইল রেখে যাননি এবং নির্দিষ্ট ধর্মীয় রীতিও মানতেন না, তাই আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না দিয়ে পক্ষগুলোকে নতুন আইনি প্রক্রিয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

এতে স্পষ্ট হয়েছে—ভিভার্সের মৃত্যু পরিবারকে একত্রিত না করে বরং আরও গভীরভাবে বিভক্ত করেছে।

সূত্র: বিবিসি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
Theme Created By Limon Kabir