কাজিপুরে যমুনা নদীতে জেগে ওঠা যমুনার চরে এবার মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। পলিমাটিতে তুলনামূলক কম খরচ ও পরিশ্রমে কাঁচা মরিচ ও মরিচের বাম্পার ফলন হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন বিশেষ করে চরাঞ্চলের ৬ টি ইউনিয়নে মরিচ আবাদের লক্ষমাত্রা ৪৪০ হেক্টর জমিতে নির্ধারন করা হয়েছে।উৎপাদন হয়েছে ৪৪০ হেক্টর জমিতে ।কিন্তু এ বছর লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বেশি মরিচ চাষ করেছেন কৃষকরা।
যমুনা বিধৌত কাজিপুর উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের কমবেশি সব ইউনিয়নে মরিচের আবাদ হয় বিশেষ করে যমুনা নদীর পূর্ব পাশে ৬ টি ইউনিয়ন সহ যমুনা নদীর তীরবর্তী নাটুয়াপাড়া, চরগিরিস, খাসরাজবাড়ী,মনসুর নগর, মাইজবাড়ি ইউনিয়নের জেগে ওঠা চরাঞ্চলে এই মৌসুমি মরিচ চাষ বেশি হয়েছে। এছাড়া উপজেলার নিশ্চিন্তপুর, তেকানিসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে এ মরিচের চাষ হয় বেশি।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায় অনেক কৃষক মরিচ তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে।মাইজবাড়ি ইউনিয়নের নতুন মাইজবাড়ি চরের কৃষক আবুল হোসেন জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অল্প সময়ের মধ্যে রোপিত চারা বড় হয়েছে। এতে বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি বলেন আমি ১ বিঘা জমিতে ১৫হাজার টাকা খরচ করে ১০ মন কাঁচা মরিচ বিক্রি করে ২১হাজার টাকা পেয়েছি আশা করছি আরও ৪০ হাজার টাকার বিক্রি করতে পারবো। নতুন মাইজবাড়ি চরের কৃষক আলী আহমেদ জানান ১ বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ করেছি ফলনও ভালো হয়েছে।সরকারের স্যার,বীজ না পেলেও উপ-সহকারী কৃষি অফিসার শাহীন আলম পরামর্শ দেন সেই অনুযায়ী কাজ করায় ফলন ভালো হয়েছে। তবে কীটনাশক দেওয়ার প্রে- মেশিন সরবরাহ, পণ্য সামগ্রী বিক্রির সুব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। মাইজবাড়ি চরের কৃষক শফিক জানান দেড় বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ করেছি ফলনও ভালো হয়েছে।দুর্যোগ না হলে লাভবান হওয়ার আশা করছি।
বর্তমানে ব্যবসায়ীরা ৫০থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে কাঁচামরিচ কিনছেন। এ মরিচ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছেন।স্থানীয় জাত ছাড়াও বেড গোল্ড, বিজলী প্লাস, বালিজুরি ও বগুড়ায় ঝাল মরিচ জাতের মরিচ চাষ হয়েছে।
এ ব্যাপারে কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার শরিফুল জানান, চরের জমি পলি দোঁআশের কারণে মরিচের ফলন বেশি হয়। কৃষি বিভাগ থেকে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ মৌসুমে মরিচ চাষাবাদে কৃষি অফিস থেকে মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সঠিকভাবে কৃষকদের বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ, তদারকি ও সহযোগিতা করেছেন।বিভিন্ন সময়ে প্রণোদনার আওতায় কৃষকদের বিনামূল্যে সারও বীজ দেওয়া হয়েছে। এবার আশানুরুপ ফলন পাবে কৃষকরা।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজার ভালো থাকায় কৃষকের মুখেও ফুটেছে হাসি। অল্প খরচে বেশি লাভবান হওয়ায় চরাঞ্চলের কৃষকরা এ বছর গতবারের চেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে মরিচের চাষ করেছেন । স্থানীয় কৃষকরা আশাবাদী কোন দুর্যোগ না হলে লাভবান হবেন।