শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:০৩ অপরাহ্ন
নোটিশ:
তথ্য ও প্রচার মন্ত্রণালয় নিবন্ধনকৃত অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্য পিপলস্ নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকে সারা দেশে জেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হবে। মোবাইল: ০১৭১১-১১৬২৫৭, ০১৭১২-৪০৭২৮২ ' ই-মেইল : thepeopelesnews24@gmail.com

মাত্র দুই দিনেই ম্লান হলো ট্রাম্পের একচ্ছত্র ক্ষমতা!

অনলাইন ডেস্ক: / ৩৫ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫
-ডোনাল্ড ট্রাম্প।

চলতি বছরের শুরুতে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফেরার পরই ক্ষমতার দাপট দেখাতে শুরু করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চেয়ারে বসেই যুগ ধরে চলে আসা রীতিনীতি তছনছ করতে শুরু করেন তিনি। বিশ্বজুড়ে লিপ্ত হয়েছেন বাণিজ্যযুদ্ধে। মার্কিন মিত্রদের দূরে ঠেলে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে সেনা মোতায়েন করেছেন। সেই সরকারি দফতরগুলো করেছেন ওলট–পালট। আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একপ্রকার নাজেহাল করে ছেড়েছেন তিনি।

কিন্তু ট্রাম্পের সেই একচ্ছত্র ক্ষমতার কিছুটা হলেও ম্লান হয়েছে মাত্র দুই দিনে। মঙ্গলবার নিউইয়র্কের মেয়রসহ বিভিন্ন নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতারা জয় পেয়েছেন। আর বুধবার মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারকেরা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে, সংবিধান ট্রাম্পকে যে জরুরি ক্ষমতা দিয়েছে, তা ব্যবহার করে তিনি বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করতে পারেন কি না?

ব্যাপক কূটকৌশল করেও নিউইয়র্কের মেয়র হওয়া থেকে জোহরান মামদানিকে ঠেকাতে পারেননি ট্রাম্প। ভার্জিনিয়া ও নিউ জার্সিতে জয় পেয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী আবিগালি স্প্যানবার্গার ও মিকি শেরিল। যদিও এই এলাকাগুলোয় ডেমোক্র্যাটদের প্রভাব বেশি, তারপরও তারা যে বড় জয় পেয়েছেন, তা হয়তো কল্পনাও করতে পারেননি রিপাবলিকানরা।

যদিও আগে থেকেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া শুরু করেছিলেন প্রতিদ্বন্দ্বীরা। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গাভিন নিউসম ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, “ভালুককে খোঁচা দিলে সে গর্জন করে রুখে দাঁড়াবেই।”

ইলিনয়ের গভর্নর ও আরেক ডেমোক্র্যাট জে বি প্রিটজকার ট্রাম্পের নীতির বিরোধিতা করেছেন। আদালতে ট্রাম্পের মুখোমুখি হচ্ছে তহবিল ছাঁটাইয়ের শিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও।

কঠিন হবে মধ্যবর্তী নির্বাচন

মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা  ‘অগাধ’ । তবে ট্রাম্পের মতো কোনও প্রেসিডেন্টই হোয়াইট হাউসকে রাজদরবার মনে করেননি। রিপাবলিকান কংগ্রেসে ট্রাম্পের এতটাই নিয়ন্ত্রণ যে, তার আগ্রাসী ক্ষমতাচর্চার ওপর নজরদারি করার মতো কেউ নেই। আর ট্রাম্পের জীবনের একটি মন্ত্র হলো—সব বাধার জবাব দিতে হবে আগ্রাসীভাবে। আর প্রতিটি হিসাব যথাযথভাবে চুকিয়ে দিতে হবে।

সে হিসেবে ডেমোক্র্যাটদের মঙ্গলবারের জয়ের জবাব আগ্রাসীভাবেই দিতে পারেন ট্রাম্প। ইতোমধ্যেই তিনি পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছেন। মামদানির জয়ের আগেই তিনি নিউইয়র্কে কেন্দ্রীয় তহবিল কমানোর হুমকি দিয়েছেন, ক্যালিফোর্নিয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন এবং সময়ের আগেই বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের মানচিত্র পুননির্ধারণের চেষ্টা করছেন।

ট্রাম্প যা–ই করুন না কেন, তার ওপর মার্কিনরা যে আস্থা হারাচ্ছেন, তা সম্প্রতি কয়েকটি জরিপে দেখা গেছে। তারা মনে করছেন, ট্রাম্পের অধীনে যুক্তরাষ্ট্র খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। অর্থনীতিও নড়বড়ে। আর কয়েকটি নির্বাচনের ফল দিয়ে ভবিষ্যৎ নির্ধারণ না হলেও মঙ্গলবারে ডেমোক্র্যাটদের জয় এই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, আগামী বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচন রিপাবলিকানদের জন্য সহজ হবে না।

ট্রাম্পের ভুল ধারণা

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তিনি আমেরিকার প্রতিষ্ঠাকালীন মূল্যবোধের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এক অসাংবিধানিক ক্ষমতার মোহে আচ্ছন্ন রয়েছেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। বুধবার ট্রাম্প বলেছেন, “তারা বলেন, আমি নাকি রাজা। আমি তা নই।” তবে গত আগস্টে মন্ত্রিসভার বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্টই কিন্তু বলেছিলেন, “আমি যা চাই, তার সবকিছু করার অধিকার আমার আছে।”

প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সম্পর্কে এই ভুল ধারণা হয়তো ট্রাম্প পেয়েছেন মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে রক্ষণশীল বিচারকদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে। এই বিচারকেরাই চলতি বছরে এক ফৌজদারি মামলার রায় ট্রাম্পের পক্ষে দিয়েছিলেন। ওই মামলার রায়ে তারা বলেছিলেন, ক্ষমতায় থাকাকালে যেকোনও সরকারি কর্মকাণ্ডের জন্য যথেষ্ট দায়মুক্তি পাবেন একজন প্রেসিডেন্ট।

সেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদেরই এখন শুল্ক আরোপ নিয়ে ট্রাম্পের ক্ষমতার ব্যবহারে অসন্তুষ্ট মনে হয়েছে। বুধবার তারা এই ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এ থেকে বোঝা গেছে, রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের কাছে বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপের যে অধিকার রয়েছে, তা সাংবিধানিকভাবে কাজ করছে। এতে কিছুটা হলেও ট্রাম্পের ক্ষমতাচর্চা ম্লান হয়েছে। সূত্র: সিএনএন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর