সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ
নোটিশ:
তথ্য ও প্রচার মন্ত্রণালয় নিবন্ধনকৃত অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্য পিপলস্ নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকে সারা দেশে জেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হবে। মোবাইল: ০১৭১১-১১৬২৫৭, ০১৭১২-৪০৭২৮২ ' ই-মেইল : thepeopelesnews24@gmail.com

আজ ১৪ ডিসেম্বর জয়পুরহাটে হানাদার মুক্ত দিবস

জলিল রানা, জয়পুরহাট প্রতিনিধি : / ৭ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

আজ ১৪ ডিসেম্বর জয়পুরহাটে হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের পবিত্র মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতীর স্রেষ্ঠ সন্তানরা,বাংলার অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগ্রামী বাঙালি জাতির অনেক রক্তের বিনিময়ে জাতি পেয়েছে সুনির্দিষ্ট একটি ভূখণ্ড,মানচিত্র খঁচিত লাল-সবুজের পতাকা এর নাম-ই স্বাধীনতা। সুদীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা। ১৪ ডিসেম্বর ভোরে পূর্বগগনে রক্তিম সূর্য উঁকি দিয়ে দেখছে হানাদার মুক্ত জয়পুরহাটের বিজয়ের গৌরবগাথা এই দিনটিকে। এ দিনটি ছিল জয়পুরহাটের মুক্তিকামী-মুক্তিপাগল জনতার আনন্দ-বেদনার অশ্রুসিক্ত একটি দিন। এক দিকে যেমন স্বজন হারানোর বেদনা, তেমনি অন্যদিকে হানাদারমুক্ত হওয়ার আনন্দ।

এদিকে আজ ১৪ ডিসেম্বর (রবিবার-২০২৫) শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যা দিবস উপলক্ষে এদিন জেলার সদর উপজেলার পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমিতে সকাল ৮টায় ও একই উপজেলার কড়ই কাদিরপুর বধ্যভূমিতে সকাল সাড়ে ৯টায় পুষ্পস্তক অর্পণের মধ্যদিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে থাকেন জেলা প্রশাসন।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর জয়পুরহাটের সীমান্তবর্তী পাঁচবিবি থানার ভূঁইডোবা গ্রাম হয়ে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা। লাল সবুজের ভেতরে আঁকা বাংলাদেশের মানচিত্র খঁচিত পতাকা আর অস্ত্র হাতে যোদ্ধার দল কন্ঠে বিজয় বাংলা স্লোগান। তারা জেলার পাঁচবিবি থানা চত্বরে প্রবেশ করে, সেখানে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন। সেই দিনটিতে পাঁচবিবির হাজারো মুক্তিকামী-মুক্তিপাগল মানুষ আনন্দে-উল্লাসে ফেটে পড়েন। বিজয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত হয় পাঁচবিবি থানা সদর এলাকা। হানাদার বাহিনী পালিয়ে বগুড়ার দিকে যাওয়ায় পাঁচবিবি থেকে মুক্তিযোদ্ধার দলটি পায়ে হেঁটে জয়পুরহাট মহকুমা সদরে বিনা বাধায় প্রবেশ করেন। শহরের জয়পুরহাট-পাঁচবিবি সড়কে ডাকবাংতে পতাকা উত্তোলন করেন যোদ্ধারা। জয়পুরহাট শহরের মুক্তিপাগল মানুষ যখন জানতে পারেন, মুক্তিযোদ্ধার দল পাঁচবিবি থেকে জয়পুরহাটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন, তখন থেকে শহরের রাস্তা আর অলি-গলিতে বিজয় বাংলা শ্লোগানে-শ্লোগানে শহর যেন পরিণত হয় এক বিজয় আনন্দ মিছিলের শহরে। বিকালে ডাকবাংতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বাঘা বাবলু।

জয়পুরহাটে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নায়ক জয়পুরহাট শহরের খনজনপুর এলাকার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খন্দকার আসাদুজ্জামান বাবলু (প্রয়াত)। মুক্তিযুদ্ধে তার সাহসী ভূমিকার জন্য তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন বাঘা বাবলু নামে। তার বড় ভাই খন্দকার ওলিউজ্জামান আলমও (প্রয়াত) ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

উল্লেখ্য,জয়পুরহাট- ভারত সীমান্তর্তী এলাকা হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের সময় সদর উপজেলার পাগলা দেওয়ান সীমানা দিয়ে হাজারও নারী-পুরুষ জীবন বাঁচাতে প্রবেশ করেন ভারতে। এ গ্রামে হানাদারবাহিনী তাদের ক্যাম্প স্থাপন করেন। ভারতে প্রবেশের সময় বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষকে হত্যা করে মাটি চাপা দেয় হানাদার বাহিনী। ৭১ এর ২৪ এপ্রিল পালপাড়া (মৃৎশিল্পী) গ্রামে প্রবেশ করে এদিন তিন শতাধিক নারী-পুরুষকে হত্যা করে পাশে ডোম পুকুর এলাকায় মাটিচাপা দেয়। এ দু’টি বধ্যভূমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও শহরের শহীদ ডা: আবুল কাশেম ময়দানে নির্মিত হয়েছে ৭১ ফুট বিশিষ্ট স্মৃতিসৌধ।‘‘ দিবস এলেই পারাপারি,কথামালার ফুলঝুড়ি,দিন শেষে সবি যেন শান্ত, দিবস যেন দিবসেই না হয় ক্ষান্ত’’।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর