সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:২০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
জামায়াত ভোটের জন্য ধর্ম বিক্রি করছে- টুকু শাহজালালে হারানো ২০ লাখ টাকা ফেরত পেলেন যাত্রী শাহজালালে এভসেকের অভিযানে জব্দ প্রায় ৩ কোটি টাকার নিষিদ্ধ পণ্য বিজয় দিবসের নিরাপত্তায় র‍্যাব, প্রস্তুত ডগ ও বোম্ব স্কোয়াড ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল কিনবে সরকার এনইআইআর চালুর তারিখ পেছাল এমপি প্রার্থী ও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স নীতিমালা জারি হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পারাপারে সহায়তাকারী ফিলিপের দুই সহযোগী আটক প্রেমিকের চা খাওয়ার ফাঁকে প্রেমিকাকে নিয়ে চলে গেল প্রাইভেট কার, অতঃপর বিজয় দিবসে বঙ্গভবনের আশপাশের সড়ক পরিহারের অনুরোধ ডিএমপির
নোটিশ:
তথ্য ও প্রচার মন্ত্রণালয় নিবন্ধনকৃত অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্য পিপলস্ নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকে সারা দেশে জেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হবে। মোবাইল: ০১৭১১-১১৬২৫৭, ০১৭১২-৪০৭২৮২ ' ই-মেইল : thepeopelesnews24@gmail.com

সাহসিকতা ইসলামের অনন্য নির্দেশনা

অনলাইন ডেস্ক: / ৯ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

অনন্য নির্দেশনসাহসিকতা উন্নত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। সমাজে মাথা উঁচু করে সসম্মানে বাঁচতে হলে সাহসিকতার সৌরভে নিজেকে সুরভিত করার বিকল্প নেই। কোরআন-সুন্নাহ মুমিনকে সাহসী হতে উৎসাহিত করেছে। কোরআন মাজিদের বিভিন্ন আয়াতে সাহসিকতার অনুপম শিক্ষামালা বিধৃত হয়েছে।

সাহসিকতার বিমল পাঠে উদ্ভাসিত সে আয়াতগুলো থেকেই পাথেয় গ্রহণ করে একজন মুমিন। কোরআন মাজিদে আল্লাহতায়ালা রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুমিনদের সাহসিকতার গুণে গুণান্বিত হওয়ার নির্দেশনা দিয়ে বলেন, ‘সুতরাং যারা আখিরাতের বিনিময়ে দুনিয়ার জীবনকে বিক্রি করে, তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করুক। যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করবে, অতঃপর নিহত হবে বা জয়যুক্ত হবে, (সর্বাবস্থায়) আমি তাকে মহাপুরস্কার দান করব। ’ (আন নিসা-৭৪)
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনের পরতে পরতে সাহসিকতার বিমল সৌরভ ছড়ানো।

তাঁর প্রতিটি কথায়-কাজে সাহসিকতা ও বীরত্বের দ্যুতি ঠিকরে পড়ত। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র জীবনপাতায় দৃষ্টি বোলালে এ কথা দিবালোকের ন্যায় প্রোজ্জ্বল হয়ে ওঠে যে যাপিত জীবনে যে কোনো প্রতিকূল  পরিস্থিতিতে, বিপদ-আপদে দৃঢ় মনোবলের অধিকারী, প্রবল বিশ্বাসী এবং অসীম সাহসের অধিকারী। এজন্যই আল্লাহতায়ালা তাঁকে লক্ষ করে বলেন-‘(হে নবী!) আপনি আল্লাহর পথে লড়াই করুন। আপনার ওপর নিজের ছাড়া অন্য কারও দায়ভার নেই এবং মুমিনদের সাহস দিতে থাকুন।’ (সুরা নিসা-৮৪)। শৈশব থেকেই বীরত্ব ও সাহসিকতা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উন্নত চরিত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছিল। সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে তিনি ‘ফিজার’ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, যখন তাঁর বয়স পনেরোও পেরোয়নি। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া-২:২৮৯)

এ ছাড়া নির্জন মরুভূমির সুউচ্চ পর্বতের হেরা গুহায় দীর্ঘদিন তিনি একাকী অবস্থান করেছেন। (আস সিরাতুন নাবাবিয়্যা- ইবনে কাসির- ১:৩৮৫)।

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। বিপদাপদে তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত সাহসিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। মানুষের বিপদাপদে সাহসিকতার সঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহসিকতার অনুপম দৃষ্টান্ত রয়েছে হাদিসের গ্রন্থাবলিতে।
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, একদা মদিনায় লোকেরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ল। নবী (সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবু তালহার (রা.) ঘোড়ায় চড়ে অনুসন্ধান করে এসে বললেন, আমি তো ভীতিজনক কোনো কিছুই দেখলাম না। আমি ঘোড়াটিকে সমুদ্রের ন্যায় (দ্রুতগতির) পেয়েছি। ’ (সুনানে আবু দাউদ : ৪৯৮৮)

সাহসিকতার কি অনন্য উপমা! বিপদে সংগ্রামে সবার আগেই তিনি এগিয়ে গেলেন। হজরত আলী (রা.) বলেন, যুদ্ধ শুরু হলে এবং সেটা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকলে আমরা রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে চিন্তিত থাকতাম (না জানি তাঁর কোনো ক্ষতি হয়ে যায়)! কেননা, তাঁর চেয়ে শত্রুবাহিনীর অধিক কাছে আর কেউ যেত না। (মুসনাদে আহমাদ-১৩৪৬)

হজরত মিকদাদ ইবনে আমর (রা.) উহুদ যুদ্ধে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দৃঢ়তা ও সাহসিকতার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, সেই সত্তার কসম! যিনি তাঁকে সত্য নবী হিসেবে প্রেরণ করেছেন! তিনি যুদ্ধ করতে করতে শত্রুদের এত কাছে পৌঁছে যেতেন যে তাঁর এবং শত্রুর মাঝে কেবল এক বিঘতের ব্যবধান থাকত। তিনি একেবারে শত্রুর মুখোমুখি হয়ে যেতেন। সাহাবিরাও যুদ্ধ করতে করতে একসময় তাঁর কাছে পৌঁছে যেত, আবার তাঁর থেকে দূরে সরে যেত। আমি তাঁকে দেখতাম, তিনি কখনো দাঁড়িয়ে তির নিক্ষেপ করছেন। আবার কখনো পাথর নিক্ষেপ করছেন। ফলে কাফেররা দূরে সরে যাচ্ছে। কিন্তু নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপন স্থানে অবিচল আছেন। (দালায়িলুন নুবুওয়া : ৩:২৪৬)

সেদিন (হুনায়নে) যুদ্ধের ময়দানে তাঁর চেয়ে দৃঢ় এবং শত্রুর নিকটবর্তী আর কাউকে দেখা যায়নি। (যাদুল মাআদ ৩:৯০)

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে যেমন সাহসিকতার সৌরভে নিজেকে সুরভিত রাখতেন তেমনি অন্যদেরও সাহসী হওয়ার অনুপ্রেরণা জোগাতেন। উম্মতকে ভীরুতা ও কাপুরুষতা থেকে আল্লাহতায়ালার কাছে আশ্রয় চাওয়ার শিক্ষা দিতেন। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করতেন-‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি কাপুরুষতা হতে…। ’ (সহিহ বুখারি-৬৩৬৭)।

লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া গাফুরিয়া মাখযানুল উলুম টঙ্গী, গাজীপুর


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর