
বাংলাদেশের পুলিশ প্রশাসন চাঁদাবাজ,সন্ত্রাস ও মাদকের বিস্তার রোধকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায়, নওগাঁ জেলা পুলিশে কর্মরত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম জেলায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, মাদক-সন্ত্রাস ও বিভিন্ন অপরাধ নির্মূলে কঠোর ভূমিকায় নিরলস কাজ করছেন।
নওগাঁয় পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদানের পর থেকে জেলা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে একের পর এক বড় বড় অভিযান পরিচালনা করে আসছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম।
শুধু মাদকের বিরুদ্ধেই নয় অভিযান অব্যাহত রেখেছেন ডেভিলদের বিরুদ্ধেও। প্রতিদিনই জেলার কোন না কোন উপজেলাতে মাদকের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান ও চলমান রয়েছে অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২।
পুলিশের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী রোববার (২১ ডিসেম্বর) পর্যন্ত অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২ এর অভিযানে জেলার ৪৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা প্রত্যেকে নিষিদ্ধ আওয়ামী ফ্যাসিস্টসহ বিভিন্ন মামলা এবং ওয়ারেন্ট ভুক্ত।
এদিকে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের ধারাবাহিকতায় রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকালে শহরের মাদকের আখড়া নামে পরিচিত সুইপার কলোনি এলাকায় সদর থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানে ৪৫ কেজি গাঁজাসহ বিপুল পরিমাণ মাদক দ্রব্য জব্দ করা হয়। অভিযানে গাঁজা ছাড়াও বাংলা মদসহ বিপুল পরিমাণ মাদক বিক্রির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। অভিযান চলাকালে মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
অপরদিকে গত শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পক্ষ থেকে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় এক মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের সময় জেলার বদলগাছী উপজেলার ঝিঝিপুর মিনি স্টেডিয়ামের পশ্চিম পাশে অবস্থানরত দুইজন ব্যক্তিকে দেখে সন্দেহ হলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা ওই দুই ব্যক্তির লাগেজ তল্লাশি করে ৮ কেজি গাজা উদ্ধার করেন।
এ সময় যশোর জেলার শার্শা উপজেলার কদমতলা বারোপুতা গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ (২৪) কে আটক করা হয়। তাকে সহায়তা করার অপরাধে জেলার বদলগাছী উপজেলার লক্ষিকুল গ্রামের মৃত আব্বাস মন্ডলের ছেলে জলিল মন্ডল (৫০) কে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান তারা পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার পশ্চিম মিঠাখালী গ্রামের মৃত ছলেমান ফকিরের ছেলে আসামী ছগিরের পৃষ্ঠপোষকতায় পিরোজপুর হতে গাজা বহন করে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় বিক্রয়ের জন্য আসেন।
আটকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার আরো জানান, নওগাঁ জেলা ভারতীয় সীমান্তঘেষা হওয়ার কারণে মাদককারবারীরা নওগাঁকে মাদক চালানের জন্য উত্তম পথ হিসেবে ব্যবহার করে। বর্তমান সময়ে এই অঞ্চলে মাদকের কারবার কিছুটা বেশি হয়েছে। আগের চেয়ে বর্তমান সময়ে নওগাঁ জেলা পুলিশ মাদককারবারীদের বিরুদ্ধে সর্বদা সজাগ রয়েছে। বিগত সময়ের তুলনায় জেলায় বর্তমান সময়ে মাদকের বিস্তার প্রতিরোধ ও মাদকের সঙ্গে যুক্ত কারবারীদের আইনের আওতায় আনতে এবং নওগাঁসহ দেশ থেকে মাদক নির্মূলের লক্ষ্যে জেলা জুড়ে এই ধরনের অভিযান আগামীতে আরো বেশি বেশি পরিচালনা করার কথা জানান জেলা পুলিশের এই প্রধান কর্মকর্তা।