ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় অনেকের নাম সামনে আসছে। তাদের অনেকেই রয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) নজরদারিতে। সংগ্রহ করা হচ্ছে তাদের বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত। তদন্তে সম্পৃক্ততা পেলে তাদের অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম।
হাদি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কেরানীগঞ্জের শাহীন চেয়ারম্যানের নাম উঠে এসেছে গণমাধ্যমে। তার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না—প্রশ্ন করা হলে ডিবিপ্রধান শফিকুল বলেন, শুধু শাহীন চেয়ারম্যান নয়, যাদের নাম আসছে তাদের অনেকেই ডিবির নজরদারিতে রয়েছে। তাদের বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্তে সম্পৃক্ততা পেলে অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে।
হত্যায় যে অস্ত্রটি উদ্ধার হয়েছে আপনারা কি নিশ্চিত ওই অস্ত্র দিয়েই গুলি করা হয়েছে—এমন প্রশ্নে ডিবিপ্রধান বলেন, ঘটনাস্থলে থেকে উদ্ধার করা বুলেট ও অস্ত্র নিয়ে এসে পরীক্ষা করা হবে।
হাদি হত্যায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সালের বাসা থেকে চেক উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন, চেকগুলো সাইন করা এবং অ্যামাউন্ট বসানো। কিন্তু টাকা নেই। ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো যাচাই করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে আমরা চিঠি দিয়েছি।
একজনকে মোটরসাইকেলের মালিক হিসেবে গ্রেফতার করা হয়। পরে জানা গেল নম্বর প্লেটটি ভুয়া। আগে গ্রেফতার ব্যক্তি সম্পর্কে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, মোটরসাইকেলটির অরিজিনাল নম্বর প্লেট ফয়সালের বাবা পরিবর্তন করেন। প্রথম যখন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পেলাম তখন ওই নম্বর প্লেট দিয়ে মোটরসাইকেলের মালিককে বের করলাম। যখন মোটরসাইকেলটির আসল নম্বর প্লেট উদ্ধার করতে পারলাম তখন তাকে রিলিজ করে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি।
ফয়সাল করিম মাসুদের তথ্য সম্পর্কে শফিকুল ইসলাম বলেন, ফয়সাল করিম মাসুদের সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। আপনারা (সাংবাদিক) যেমন শুনছেন, আমরাও বিভিন্ন তথ্য পাচ্ছি। তদন্তের স্বার্থে সব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাদিকে গুলির পর প্রত্যেক ইউনিটকে নির্দেশ দেওয়া হয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসামি গ্রেফতার করার জন্য। এরই ধারাবাহিকতায় ১০ জনকে বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, অস্ত্র, গুলি ও পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সদরদপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) খন্দকার রফিকুল ইসলাম, ময়মনসিংহ বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ও র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।