সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় এক ব্যক্তিকে মারপিট করে জোড়পূর্বক তার পৈত্রিক সম্পত্তি দখল নেবার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকালে উপজেলার কয়ড়া ইউনিয়নের জঙ্গল খামার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়,জঙ্গল প্রামের মৃত জসিম উদ্দিনের ৩য় ছেলে নুরুল ইসলাম ও ৪ ছেলে আব্দুস ছাত্তার প্রায় ৪০ বছর পূর্বে তাদের পত্রিকভাবে পাওয়া একই গ্রামের মৌজার ৩০ নং খতিয়ানের আর এস ১১৫ দাগে ২১ শতক ফসলি জমি ভোগ দখল থাকাবস্থায় তাদের সন্তানদের দুই ভাগ করে লিখে দেন। এরপর তাদের ছেলে মেয়েরা ওই সম্পত্তি খাজনা খারিজ করে একপাশে আব্দুস ছাত্তারের সন্তানরা বাড়ি করে আছেন। আর পশ্চিম পাশে নুরুল ইসলামের দুই সম্তান চাষাবাদ করছেন। ওই জমির সামনে রাস্তার পাশে অন্তত ২ শতক জায়গাজুড়ে তাদের বাবা কয়েক যুগ আগে ফলদ ও বনজ বিশাল বিশাল গাছ লাগিয়েছেন। যেখানে পুরো মাঠের লোক বিশ্রাম নেন।
বুধবার সকালে কোন কারন ছাড়াই ওই জমির মাঝে খোটা গেরে,আল দিয়ে অবৈধ দখল নেবার চেষ্টা করেন অবঃ বিজিবি সদস্য রেজাউল করিম বাবলু ও তার ভাতিজা আসিক। খবর পেয়ে নুরুল ইসলামের বড় ছেলে জাহাঙ্গীর আলম সেখানে উপস্থিত হন। এবং এতে বাধা দেবার চেষ্টা করলে তারা দুজন মিলে জাহাঙ্গীর আলমকে লাঠিশোঠা দিয়ে বেদম মারপিট শুরু করে। আত্নচিৎকার শুনে মাঠে থাকা লোকজন এসে জাহাঙ্গীরকে রক্ষা করে। পরে অন্যরা ছুটে এলে তারা সেখান থেকে দ্রুত সরে যায়। যাবার সময় তারা হুমকি দিয়ে যায় তোদের সব সম্পত্তি দখল নিবো। বাধা দিতে আসলে তারা ৩ ভাই ভাতিজারা মিলে প্রাণে মারাসহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি দেয় এবং যে কোন মুল্যে সব সম্পত্তি দখল নেবার হুশিশারি দেয়। জঙ্গল খামার গ্রামের লোকজন এবং পরিবারের অন্যদের সাথে কথা বলে জানা য়ায়,গ্রামের মৃত জসিম উদ্দিন খদগীরের ৭ সন্তান তাদের বাবা মারা যাবার পর প্রায় ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে সকল সম্পত্তি পারিবারিকভাবে বন্টন করে ভোগ দখল করে আসছেন। এদের মধ্যে জসিম উদ্দিনের বড় দুই সন্তান মৃত আজগর আলী,আবুল হোসেন অনেক মারা যাবার আগে দখলি হিসাবে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি সন্তানদের লিখে দিয়ে যান। একই ভাবে জসিম উদ্দিনের ৩য় সন্তান নুরুল ইসলাম,৪র্থ সন্তান আব্দুস ছাত্তারও পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া তাদের অংশের দখলি সম্পত্তি দীর্ঘদিন আগে নিজ নিজ সন্তানদের নামে লিখে দেন। জসিম উদ্দিনের অপর তিন ছোট ছেলে তাদের পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া এবং ৩ বোনের কাছ থেকে লিখে নেয়া সম্পত্তি পছন্দ মতো পারিবারিক বন্টনে পুর্বে থেকে এখন পর্যন্ত তাদের পছন্দ অনূর্যায়ী বড় বাড় দাখে একসাথে ভোগ দখলে রয়েছেন। অন্যদিকে বাবাদের লিখে দেয়া সম্পত্তি মৃত আজগর আলী,আবুল হোসেন,নুরুল ইসলাম ও আব্দুস ছাত্তারের সন্তানরা নিজ নিজ নামে খাজনা খারিজ করে দীর্ঘদিন এসব জমিতে চাষাবাদ ও ঘরবাড়ি তুলে শান্তিপুর্ণ বসবাস করছেন। অতি সম্প্রতি জসিম উদ্দিনের ৬ষ্ট ছেলে রেজাউল করিম বাবলু বিজিবি চাকুরি থেকে অবসরে আসেন। এরপর থেকে তিনি শহরের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিকে হাত করে,আর নিজের প্রশাসনিক সরকারি চাকুরির দাপট দেখিয়ে অন্য দুই ভাইকে সাথে নিয়ে দফায় দফায় বড়ভাইদের সম্পতি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিভিন্ন প্রভাবশালীদের নাম করে পুরো এলাকায় তিনি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন।
ইতোমধ্যে দখল ও দাঙ্গাবাজ অবঃপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য রেজাউল করিম বাবলু ও তার ভাই রফিকুল ইসলাম বাবু বড় ভাই আবুল হোসেনের মেয়ের কাছে ফুসলিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে অবৈধভাবে তার পৈত্রিক সব সম্পত্তির সামনে থেকে লিখে নেন। আবুল হোসেনের ছেলে বেলাল হোসেন মিঠু এই অবৈধ দলিল না মেনে দখলে বাধা দিলে তার নামে থানায় একাধিক মিথ্যা অভিযোগ দেয়া সহ প্রভাবশালীদের দিয়ে নানা রকম ভয়ভিতি প্রদর্শন করেন। তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি দিচ্ছেন। এদিকে ওই অবঃসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য একই ভাবে তার আরেক বড় ভাই আব্দুস ছাত্তার ও তার সন্তানদেরও জমিজমি দখল নেবার জন্য ইতোপূর্বে মারপিট করে হাত ভেঙ্গে দেন। যা নিয়ে একাধিক গ্রাম্য শালিষ হলেও অবৈধ টাকা আর প্রভাব বিস্তার করে সবকিছু ধামাচাপা দেন। মারপিটের শিকার নুরুল ইসলামের বড় ছেলে জাহাঙ্গীর আলম জানান,আমি কৃষি কাজ এবং গবাদি পশুর খামার করি। ছোটভাই চাকুরির কারনে বাইরে থাকে। আমার আব্বা তার পৈত্রিক পাওয়া এবং কেনা সব সম্পত্তি আমাদের দুই ভাইকে সমানভাবে লিখে দিয়েছেন। যা আমরা খাজনা খারিজ করে ভোগ দখল করে আসছি। আমার ছোট চাচারা অন্যয়ভাবে সেই সম্পতি আজ দখল করতে নেমেছে। আমার আব্বা সহ অন্য চাচারা ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে পারিবারিক বন্টনে এসব সম্পতি ভোগ দখল করছ। অনেকে সেই সম্পতি বিক্রি সহ সন্তানদের লিখে দিয়েছেন। যা নিয়ে এতোদিন কারো কোন আপত্তি নেই। কিন্তু হঠাৎ করে আমাদের জমি অন্যায়ভাবে দখল করতে চাচ্ছেন ছোট চাচারা। আমি এতে বাধা দিলে তারা আমাকে মারপিট করে হত্যার হুমকি দিয়েছে। তারপর থেক আমি নিরাপত্তহীনতায় রয়েছি। বিষয়টি আমি গ্রামের মাতব্বরদের কাছে মৌখিক বিচার দিয়েছি এবং এ নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করবো। এ বিষয়ে অভিযুক্ত অবঃপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য রেজাউল করিমের বক্তব্য জানতে চেয়ে মুঠোফোনে চেষ্টা করা হলে তিনি সাড়া দেননি।