সুদানের আবেই জাতিসংঘের (ইউএন) শান্তিরক্ষা মিশনে যাওয়ার এক মাস ৮ দিনের মাথায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছেন নাটোরের ছেলে শান্তিরক্ষী মাসুদ রানা। এ ঘটনার খবরে নিহতের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে।
শনিবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে লালপুরে পরিবারের কাছে মুত্যুর সংবাদ পৌঁছালে পরিবার লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় পুরো এলাকায় খবরটি ছড়িয়ে পড়ে সবাই স্তদ্ধ হয়ে যায়।
নিহত মাসুদ রানা নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের বোয়ালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত সাহার উদ্দিনের ছেলে। পরিবারে মা, স্ত্রী ও আমেনা নামে আট বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। শান্তিরক্ষা মিশনে যাওয়ার আগে নিহত মাসুদ রানা যশোর ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত ছিলেন। মাসুদ রানাসহ তারা তিন ভাই সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তিন ভাইয়ের মধ্য মাসুদ রানা সবার বড়।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিহত মাসুদ রানা ২০০৬ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দান করেন।
তার তিন ভাই সেনাবাহিনীতে চাকরি করেন। তার মেজো ভাই মনিরুল ইসলাম ২০১২ সালে এবং ছোট ভাই রনি আলম ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। গত শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ত্রাসীরা সুদানের আবেইতে ঘাঁটিতে আক্রমণ করলে নাটোরের মাসুদ রানাসহ বাংলাদেশের ৬ জন নিহত হন। এসময় ৮ জন শান্তিরক্ষা আহত হয়েছে। এবং যুদ্ধ চলমান বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিয়ার)। তিনি ৭ নভেম্বর আগে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়েছিলেন।
স্ত্রী আসমাউল হুসনা আঁখি স্বামীর মৃত্যুর খবরে স্তব্ধ হয়ে পড়েছেন। মা মর্জিনা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে অনেক স্বপ্ন নিয়ে মানুষ করেছি। ২১ বছর ধরে আমার সন্তান দেশের জন্য কাজ করেছে। আজ দেশের বাহিরে গিয়ে সে মরা গেছে। আমি কি ভাবে ভুলবো, আমার সন্তানকে। সেদিনও কথা বললো আমার ছেলে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জুলহাস হোসেন সৌরভ বলেন, আজ শনিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। আমরা শোকাহত এবং শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছি। যেকোনো প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসন শহীদ পরিবারের পাশে থাকবে। শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি।